বিরূঢবের প্রতিশোধ
চিন্তিত শাক্য নেতারা। কোশলরাজ চাইছেন, ভগবান বুদ্ধের বংশের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে। সেজন্য শাক্য কন্যার পাণিগ্রহণ করতে ইচ্ছে প্রকাশ করে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন কপিলাবাস্তু নগরে। কোশলরাজের অধীনেই শাক্যরা বসবাস করেন। তাই তাঁর হাতে কন্যা সম্প্রদান না করলে রাজরোষে পড়তে হবে তাঁদের। আবার কন্যা দিলে হবে কুলভঙ্গ। তাই উভয় সংকটে পড়ে চিহ্নিত শাক্য নেতারা। বিষয়টি নিয়ে গণসভার অধিবেশন ডাকলেন তাঁরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শাক্যরা ছিলেন গণতন্ত্রবাদী। গণসভা গঠন করে একজনকে তাঁরা প্রধান নির্বাচিত করতেন। তিনিই তাঁদের কাছে "রাজা" হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শাক্যদের বসবাস ছিল কপিলাবাস্তু নগরে। কথিত আছে, মহামুনি কপিলের বাস্তুভিটের ওপর তৈরি বলে স্থানটির নাম হয় "কপিলাবাস্তু।" অনেকে ভুল করে একে "কপিলবস্তু" বলেন। ভারতের উত্তর প্রদেশের বস্তী জেলার উত্তর সীমায় অবস্থিত পিপ্রাহ্বা গ্রামটি প্রাচীন কপিলাবাস্তু বলে চিহ্নিত হয়েছে।
খ্রিস্ট পূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী নাগাদ সময়ে এই শাক্য বংশেই জন্মেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। গৌতম বুদ্ধকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন কোশলরাজ প্রসেনজিৎ। তাই তিনি শাক্যকন্যাকে বিয়ে করতে ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু শাক্যকুলের বাইরে তাঁরা কন্যা দিতে তাঁদের আভিজাত্যে বাধে। তাই কোশলরাজ প্রসেনজিতের প্রস্তাবে চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। অনেক ভেবে শাক্য নেতা মহানামা একটি উপায় বের করলেন। শাক্য নেতা মহানামার এক ষোল বছরের দাসী গর্ভজাত কন্যা আছে, নাম---বাসভক্ষত্রিয়া। পিতৃপরিচয়ে সে ক্ষত্রিয়া। এই কন্যাকেই কোশলরাজের কাছে পাঠানোর পরামর্শ দিলেন শাক্য নেতা মহানামা। সভায় বিষয়টি পাশ হয়ে গেল। এরপর কোশলরাজের দূতদের ডেকে জানিয়ে দেওয়া হলো, তাঁরা কোশলরাজকে কন্যা দান করতে রাজি।
শাক্যদের মতো আভিজাত্যে অভিমানীরা এত সহজে কন্যাদান করতে রাজি হওয়ায় কোশলের দূতদের সন্দেহ হলো। তাঁরা বিষয়টি যাচাই করতে চাইলেন। এজন্য বলা হলো, শাক্যদের সঙ্গে একসঙ্গে খেতে বসতে হবে কন্যাকে এবং যে কন্যার সঙ্গে এটা হবে, সেই কন্যাকেই তাঁরা কোশল রাজ্যে নিয়ে যাবেন। কোশলরাজের দূতদের কথায় ফের চিন্তিত হয়ে পড়লেন শাক্য নেতারা। দাসীর গর্ভজাত কন্যার সঙ্গে শাক্যদের একসঙ্গে খাওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়! তাই ফের শুরু হলো নতুন করে ভাবনা। ঠিক হলো, সুকৌশলে কাজটি করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হলো পিতা মহানামা ও তাঁর দাসীকন্যা বাসভক্ষত্রিয়ার একসঙ্গে ভোজনপর্ব। প্রথমে ভোজনে বসলেন মহানামা। কিছুটা দূরে বসে দেখতে লাগলেন কোশলরাজের দূতেরা। ভোজনে বসে মহানামা তাঁর অনুচরদের কন্যা বাসভক্ষত্রিয়াকে ভোজন স্থানে আনতে বললেন।
অনুচররা জানালেন, তিনি এখন সাজগোজ করছেন। একটু পরেই আসবেন। কিছুক্ষণ পরে বাসভক্ষত্রিয়া এলেন। বসলেন পিতার পাশে নিজের থালার সামনে।
মহানামা এক গ্রাস অন্ন মুখে তুললেন। আর বাসভক্ষত্রিয়া তখনও থালায় হাত দিয়ে বসে রইলেন। এরপর মহানামা দ্বিতীয় গ্রাসটি মুখে তুললেন। এমন সময় পূর্ব পরিকল্পনামতো কয়েকজন লোক একখানি পত্র নিয়ে হাজির হলো। জানালো, অবন্তীরাজ এই জরুরি পত্র পাঠিয়েছেন। মহানামা একমনে বাঁ-হাতে সেই পত্রখানি পড়তে শুরু করলেন। আর তাঁর ডান হাতটি থালায় রইলো। এভাবে তিনি বাসভক্ষত্রিয়াকে খেতে বললেন। কন্যার ভোজনপর্ব শেষ হলো। দু'জনেই থালা ছেড়ে উঠে পড়লেন। দূরে বসে কোশলরাজের দূতেরা কিছুই বুঝতে পারলেন না। এরপর অত্যন্ত সমারোহে কন্যা বাসভক্ষত্রিয়াকে কোশল রাজ্যের রাজধানী শ্রাবস্তী নগরে পাঠানো হলো। রাজার বিয়ে উপলক্ষে নতুন করে সেজে উঠলো শ্রাবস্তী। বিয়ের পর কোশলরাজ প্রসেনজিৎ পাটরাণী করলেন বাসভক্ষত্রিয়াকে। যথাসময়ে বাসভক্ষত্রিয়া এক পুত্রের জন্ম দিলেন। পুত্রের নাম রাখা নিয়ে জোর চর্চা চললো রাজপুরীতে।
কোশলরাজের প্রবীণা ঠাকুমা জানালেন, বিয়ের পর থেকেই বাসভক্ষত্রিয়া যেহেতু ছিলেন রাজার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং এরপর মা হয়ে আরও প্রিয় হয়ে রাজার বল্লভা হবেন। তাই রাজপুত্রের নাম হোক্ "বল্লভ।" ঠাকুমার গলার স্বর ছিল অস্পষ্ট, অন্যদিকে এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজার অমাত্য ব্যক্তিটিও ছিলেন কানে খাটো। বল্লভের জায়গায় তিনি শুনলেন "বিরূঢব।" রাজকর্মচারি ব্যক্তিটি কোশলরাজের দরবারে হাজির হয়ে "বিরূঢব" নামটি জানালেন। শুনে রাজা প্রসেনজিৎ এ নামের কোনো মানে খুঁজে পেলেন না। আবার ভাবলেন, ঠাকুমা যখন দিয়েছেন, তখন নিশ্চয়ই এটি তাঁদের কোনো বংশজাত নাম হবে। তাই রাজা প্রসেনজিৎ তাঁর নবজাত পুত্রের নাম রাখলেন "বিরূঢব।" কিন্তু বিরূঢবের কাছে মামার বাড়ি থেকে কোনো উপহার সামগ্রী, কিংবা কোনো লোকজন আসে না। বিষয়টি ভেবে বিষ্ময় জাগলো তাঁর। এরপর বিরূঢবের যখন সাত বছর বয়স, তখন মামার বাড়ি যাবার বায়না ধরলেন তিনি। মা বাসভক্ষত্রিয়া পুত্রকে বোঝালেন, মামারা বহু দূরে থাকেন। তাই যোগাযোগ নেই।
এরপর ষোল বছর বয়সে বিরূঢব তাঁর মাকে জানিয়ে দিলেন, তিনি মামার বাড়ি যাবেন। শুনে মুখ শুকিয়ে গেল বাসভক্ষত্রিয়ার। তিনি আগেই একখানি পত্র লিখে বিষয়টি জানিয়ে পাঠিয়ে দিলেন কপিলাবাস্তু নগরে পিতা মহানামার কাছে। বিরূঢব হাজির হলেন কপিলাবাস্তু নগরে তাঁর মামার বাড়িতে। তাঁকে মহাসমারোহে অভ্যর্থনা জানাতে সমস্ত শাক্য দলপতিরা অধিবেশন কক্ষে হাজির হলেন। এরপর কাউকে দাদু, কাউকে মামা বলে সকলের সঙ্গে বিরূঢবের পরিচয় করানো হলো। সকলকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে করতে কোমরে ব্যথা হয়ে গেল বিরূঢবের। কিন্তু বিরূঢবকে কেউই প্রণাম করতে এলো না দেখে অবাক হলেন তিনি। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে শাক্য নেতারা জানালেন, তাঁরা সবাই কাজে নগরের বাইরে গেছেন। তবে মামার বাড়িতে বিরূঢবের যত্নের কোনো অভাব হলো না।
মামার বাড়ি কপিলাবাস্তু নগরে কয়েকদিন কাটিয়ে নিজের ঘরে ফিরলেন বিরূঢব। এ পযর্ন্ত সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু গোলমাল হয়ে গেল একটি ছোট্ট ঘটনায়। বিরূঢবের এক অনুচর ভুল করে একটি অস্ত্র ফেলে গিয়েছিল শাক্যদের অধিবেশন কক্ষে। সেটা নিতে গিয়েই তার চক্ষু চড়কগাছ! অনুচরটি দেখলে, বিরূঢব যে জায়গায় বসেছিলেন, এক দাসী দুধ-জল দিয়ে সেটা ধুচ্ছে আর সেই সঙ্গে বিড় বিড় করে বলছে, দাসীর মেয়ে বাসভক্ষত্রিয়ার ছেলে এই জায়গায় বসেছিল! ক্রমে কথাটা ছড়িয়ে গেল কোশল রাজ্যে। সবাই বলাবলি করতে লাগলো, পাটরাণী বাসভক্ষত্রিয়া আসলে দাসীকন্যা। রাজকুমার বিরূঢবের কানেও এলো কথাটা। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন, যে শাক্যরা তাঁর বসার জায়গাটিকে ক্ষীর জলে ধুয়েছে, তিনি রাজা হয়ে শাক্যদের গলার রক্তে সেই জায়গাটা ধুয়ে দেবেন। একথা জেনে কোশলরাজ প্রসেনজিৎ পাটরাণী বাসভক্ষত্রিয়া ও তাঁর পুত্র বিরূঢবের সমস্ত রকম আর্থিক সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দিলেন। দাস-দাসীদের প্রাপ্যটুকু শুধু তাঁদের জন্য বরাদ্দ হলো। এবার মাঠে নামলেন স্বয়ং গৌতম বুদ্ধ। তিনি কোশলরাজ প্রসেনজিতকে বোঝালেন, তাঁর জ্ঞাতি শাক্যরা অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছেন। তবে যেহেতু বাসভক্ষত্রিয়া ক্ষত্রিয় ঔরসে জন্মেছেন, সেহেতু রাজকুমার বিরূঢব ক্ষত্রিয় সন্তান।
গৌতম বুদ্ধের অনুরোধে রাজা প্রসেনজিৎ তাঁর পাটরাণী বাসভক্ষত্রিয়া ও পুত্র বিরূঢবকে তাঁদের আগের আর্থিক বরাদ্দ ফিরিয়ে দিলেন। কিন্তু বিরূঢব পিতা প্রসেনজিতের অপমানের কথা ভুলতে পারলেন না। পিতাকে সরিয়ে নিজে রাজা হবার সুযোগ খুঁজতে লাগলেন। এদিকে রাজা প্রসেনজিতের এক সুদক্ষ সেনাপতি ছিলেন বন্ধুল। প্রসেনজিৎ তাঁর গুণে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে রাজ্যের বিচারক নিযুক্ত করলেন। এর ফলে এতদিন ধরে উৎকোচ নেওয়া রাজকর্মচারিদের মধ্যে দেখা দিলো অসন্তোষ। তাঁরাও প্রসেনজিতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেন। শেষ পর্যন্ত রাজদরবারের চক্রান্তে নিহত হলেন বন্ধুল ও তাঁর পুত্ররা। একসময় রাজা প্রসেনজিৎ তাঁর ভুল বুঝতে পারলেন। তখন বন্ধুলের ভাগ্নে দীর্ঘচারায়ণকে সেনাপতি নিয়োগ করলেন। কিন্তু দীর্ঘচারায়ণ তাঁর মামা বন্ধুলের হত্যার কথা ভুলতে পারলেন না। শুরু হলো চক্রান্ত। বিরূঢবের সঙ্গে জোট বাঁধলেন দীর্ঘচারায়ণ। ইতিমধ্যে একদিন বুদ্ধ এলেন শ্রাবস্তীর অদূরে উড়ুম্প নগরের এক বাগান বাড়িতে। বৃদ্ধ রাজা প্রসেনজিৎ গেলেন বুদ্ধ দর্শনে। এজন্য কাছেই তাঁর শিবির স্থাপন করলেন। সেখানে রাজা প্রসেনজিৎ সেনাপতি দীর্ঘচারায়ণের হাতে তাঁর খড়্গ, ছত্র, উষ্ণীব, পাদুকা ও চামর---এই পঞ্চ রাজচিহ্ন দিয়ে অত্যন্ত দীনভাবে বুদ্ধের আবাস গৃহে গেলেন।
এই সুযোগে সেনাপতি দীর্ঘচারায়ণ দ্রুত শিবিরে ফিরলেন। সেখানে একটি রুগ্ন ঘোড়া ও এক বৃদ্ধা দাসীকে রেখে সমস্ত সৈন্য নিয়ে শ্রাবস্তীতে চলে গেলেন। শ্রাবস্তীতে ফিরে রাজকুমার বিরূঢবের হাতে পঞ্চ রাজচিহ্ন তুলে দিয়ে তাঁকে কোশলের রাজসিংহাসনে বসিয়ে দিলেন। এদিকে বুদ্ধের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে বৃদ্ধা দাসীর মুখে সব শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন বৃদ্ধ প্রসেনজিৎ। প্রসেনজিতের ভাগ্নে তথা জামাতা ছিলেন মগধরাজ অজাতশত্রু। রাজ্য পুনরুদ্ধারের আশায় প্রসেনজিৎ গেলেন মগধে। মগধে যখন তিনি পৌঁছলেন তখন গভীর রাত। রাজপ্রাসাদের নগরের দরজা বন্ধ। অগত্যা নগরের বাইরে পড়ে রইলেন প্রসেনজিৎ। হতাশা ও পথশ্রমে ক্লান্ত কোশলরাজ প্রসেনজিৎ সে রাতেই মারা গেলেন।
ওদিকে সিংহাসনে বসেই বিরূঢব কপিলাবাস্তু নগরে শাক্য নিধনে অভিযান পাঠালেন। শোনা যায়, গৌতম বুদ্ধ তাঁর জ্ঞাতি শাক্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাঁর সে চেষ্টা সফল হয়নি। কপিলাবাস্তু নগরে শাক্যদের গলার রক্ত দিয়ে তাঁর বসার জায়গাটি ধুয়ে তবেই থেমেছিলেন বিরূঢব।
তথ্যসূত্র:
"জাতক ", চতুর্থ খণ্ড, কলকাতা, ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ, পৃষ্ঠা১০১ ("ভদ্দশাল জাতক"): ঈশানচন্দ্র ঘোষ অনূদিত।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.