ভারতে সতীদাহ বাধ্যতামূলক ছিল না, বলছেন ইবন বতুতা
মৃত স্বামীর সঙ্গে একই চিতার আগুনে তার স্ত্রী পুড়ে মরার যে তথাকথিত প্রথা ভারতের মধ্যযুগে প্রচলিত ছিল, এককথায় বহুচর্চিত সেই প্রথাটিকে আমরা ইতিহাস থেকে "সতীদাহ" নামেই জেনে এসেছি। কিন্তু প্রাচীন ভারতবর্ষে কি সত্যিই সতীদাহ প্রথা ছিল? বেদে, বিশেষ করে, প্রাচীন গ্রন্থ ঋগ্বেদেও সতীদাহ প্রথার উল্লেখ পাওয়া যায় না। এমনকি, পরবর্তীকালে পৌরাণিক যুগে রামায়ণ ও মহাভারতেও সতীদাহ প্রথার উদাহরণ নেই।
স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবা স্ত্রীর পুনর্বিবাহের কথা বলা হয়েছে অথর্ব বেদে। যেমন, ----
ইয়ং নারী পতিলোকং বৃণাশনিপদ্যত উপত্ব্য মর্ন্ত্য প্রেতম।
ধর্মং পুরাণমনু পালয়ন্তী তস্মৈ প্রজাং দ্রবিনং চেহ ধেহী। ।
---অথর্ববেদ ১৮/৩/১
অর্থাৎ, হে মানব, পতির মৃত্যুর পর এই নারী তোমার কাছে এসেছে পুনর্বিবাহের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। সনাতন ধর্ম পালন করে সন্তানাদি নিয়ে সে সুখভোগ করতে পারে।
আরেকটি মন্ত্রে রয়েছে, ---
উদীবর্ষ নার্ষ্যভি জীবলোকং গতাসুমেতমুপশেষ এহি।
হস্তাগ্রাভস্য দিধিষোস্তবেদং পত্যুর্জনিত্বমভি সংবভূব। ।
অথর্ববেদ ১৮/৩/২
অর্থাৎ, হে নারী, মৃত পতির শোকে অচল হয়ে কী লাভ? ফিরে এসো বাস্তব জীবনে। পুনরায় পাণিগ্রহণকারী পতির সঙ্গে তৈরি হবে তোমার পত্নীত্ব। এই মন্ত্রটি ঋগ্বেদেও (১০/১৮/৮) রয়েছে। বেদের ভাষ্যকার সায়নাচার্য তাঁর তৈত্তিরীয় আরণ্যক ভাষ্যে একথাই বলেছেন। সুতরাং, যেখানে বিধবাদের পুনর্বিবাহের কথা বলা হয়েছে, সেখানে সতী প্রথা যে ছিল না, তা বলাই বাহুল্য। আর সতী প্রথা ছিল না বলেই তার কোনো উল্লেখ প্রাচীন গ্রন্থে নেই। রামায়ণে দেখা যাচ্ছে, রাজা দশরথের মৃত্যুর পর তাঁর তিন রাণী---কৌশল্যা, কৈকেয়ী ও সুমিত্রার মধ্যে কাউকেই জীবন্ত পোড়ানো হয়নি।
মহাভারতের মধ্যেও দেখা যায়, রাজা শান্তনুর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী সত্যবতী স্বামীর চিতায় জীবন্ত দগ্ধ হয়ে "সতী" হোন নি। শান্তনুর মৃত্যুর পর পূর্ব প্রতিজ্ঞামতো তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ভীষ্ম হস্তিনাপুরের সিংহাসনে বসেন নি। যতদিন না পৌত্র পাণ্ডুর রাজ্যাভিষেক হয়েছিল, ততদিন সত্যবতী ও ভীষ্ম মিলে হস্তিনাপুরের শাসনকাজ চালিয়ে গেছেন। পরে পাণ্ডু রাজপাট ছেড়ে বনে চলে যান এবং তখন অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রকে কার্যনির্বাহী রাজা মনোনীত করা হয়েছিল। এরপর ধৃতরাষ্ট্রের কাছে অপমানিতা হয়ে সত্যবতী বনবাসিনী হোন এবং সেখানে এক আশ্রমে তাঁর বাকি জীবন কাটে। পরে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কিছু বছর আগেই তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
তবে পাণ্ডুর সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয়া স্ত্রী মাদ্রীর মৃতদেহ একসঙ্গে দাহ করা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এটিও সতীদাহের উদাহরণ নয়। কারণ, স্বামী পাণ্ডুর মৃত্যুর শোকেই মাদ্রীর মৃত্যু হয়েছিল। এটাকে আজকের দিনের স্ট্রোক্ বলা যেতে পারে। তবে দু'জনের মৃত্যু আলাদাভাবে ঘটেছিল। কিন্তু দু'জনকে দাহ করা হয় একসঙ্গেই। তবে মাদ্রী স্বামীর সঙ্গে সজ্ঞানে সহমরণে যান নি। কাজেই এটিও সতীদাহের উদাহরণ নয়। তাছাড়া পাণ্ডুর অন্য স্ত্রী কুন্তীকে স্বামীর চিতায় পাঠানো হয়নি। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পরেও কুন্তী জীবিত ছিলেন। তাই বলা যায়, মহাভারতযুগেও সতীদাহ প্রথা প্রচলিত ছিল না। আসলে সতীদাহ প্রথা দেখা যায় মধ্যযুগে।
৭১২ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ বিন কাশিমের সঙ্গে যুদ্ধে সিন্ধুরাজ দাহির সেনের পরাজয়ের পরেই দেখা যাচ্ছে, সেখানকার অন্দরমহলের নারীরা আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জহরব্রত পালনের মাধ্যমে নিজেদের আত্মাহুতি দিচ্ছেন। জহরব্রতের প্রথায় বিষপান ও আগুনে আত্মাহুতি---দুটো পদ্ধতিই প্রচলিত হয়েছিল। তবে বিষপানে আত্মহত্যার পরেও বিধর্মীদের হাতে শারীরিকভাবে নিগৃহীতা হবার আশঙ্কা ছিল। তাই দেহের পবিত্রতা রক্ষায় সর্বগ্রাসী আগুনের লেলিহান শিখায় রাজা দাহিরের অন্দরমহলের নারীরা সেদিন নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই স্বামীর মৃত্যুর পর সম্ভ্রম রক্ষায় হিন্দু নারীদের মধ্যে প্রচলিত হয়ে যায় "সতী" প্রথা এবং পরবর্তীতে এটি হিন্দু সমাজের অঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়।
তবে সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের সময় ভারত ভ্রমণে আসা মরক্কোর পর্যটক ইবন বতুতা জানাচ্ছেন, এটি ছিল ঐচ্ছিক প্রথা। ইবন বতুতা লিখছেন, স্বামীর মৃত্যুর পর জীবিত স্ত্রীকে তার সঙ্গে দাহ করা তাদের মধ্যে প্রশংসাসূচক কাজ বলে গণ্য, কিন্তু তা বাধ্যতামূলক ছিল না। নিজেকে পোড়াতে তাকে জবরদস্তি করা হতো না। ইবন বতুতা আমঝেরা শহরে তিনজন নারীকে স্বেচ্ছায় স্বামীর সঙ্গে সহমরণে যেতে দেখেছিলেন। ওই তিন নারীর স্বামীরা যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী ইবন বতুতার একদিকে যেমন দেখা যাচ্ছে, সতী প্রথা স্বেচ্ছায় ঘটছে, আবার অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, মুসলমান আমলে সতী প্রথার ঊর্ধ্বগতি।
আবুল ফজল আল্লামীর লেখা "আকবরনামা" থেকে জানা যাচ্ছে, মোগল সম্রাট আকবর কোনো অনিচ্ছুক নারীকে জোর করে জীবন্ত দগ্ধ করার ঘটনাকে বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সফল হোন নি। তবে সে চেষ্টা কতটা জোর দিয়ে করা হয়েছিল, তা নিয়ে আকবরের মতো একজন দক্ষ প্রশাসকের কাজে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে ছোটবেলায় নিজের বৌদিকে সতী হতে দেখে নিদারুণ ব্যথা পেয়েছিলেন রাজা রামমোহন রায়। প্রাণপণ চেষ্টায় লেগে পড়েন সতীদাহ বন্ধ করতে। শেষ পর্যন্ত সফল হোন। রামমোহনের অক্লান্ত পরিশ্রমের জেরে ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ ঠা ডিসেম্বর তৎকালীন ভারতের ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড উইলিয়াম বেণ্টিঙ্কের সহযোগিতায় পাশ হয় সতীদাহ বন্ধের আইন।
এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে লণ্ডনের প্রিভি কাউন্সিলে মামলা দায়ের হয়। কিন্তু ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে প্রিভি কাউন্সিল বেঙ্গল গভর্ণর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের ১৮২৯-এর আদেশকেই বহাল রাখেন। আসলে সনাতন ধর্মে যে সতীদাহ বলে কিছু নেই, আদালতে তা প্রমাণ করে দেন রাজা রামমোহন রায়। কিন্তু যেটা রামমোহন পারলেন, সেটা প্রবল শক্তিশালী সম্রাট আকবর পারলেন না! চেষ্টা করেছিলেন মোগল সম্রাট হুমায়ুন, আকবর ও শাহজাহান। কিন্তু তাঁরা কেউই সফল হোননি। কেন?
তথ্যসূত্র:
Ibn Battutah: Travels in Asia and Africa by HAR Gibb, D.K.Publishers, New Delhi, 2004, Page-191-192.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.