ভারতবর্ষের অস্ত্রশস্ত্র কথা ও কৃষি সভ্যতা পত্তনে অস্ত্রের ভূমিকা
ছুঁড়ে মারলে অস্ত্র আর হাতে ধরে আঘাত করলে তা শস্ত্র। এই অস্ত্র এবং শস্ত্র নিয়েই অস্ত্রশস্ত্র। প্রাচীনকালে আদিম মানুষের কাছে অস্ত্র ছিল পাথর এবং শস্ত্র ছিল গাছের ডাল। এই দুটি আদিম অস্ত্র এখনো মানুষের কাছে বর্তমান। কাউকে ঢিল মারা কিংবা কাশ্মীরে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া প্রথম শ্রেণির অস্ত্র প্রয়োগের উদাহরণ। আর পুলিশের লাঠিচার্জ কিংবা কাউকে লাঠিপেটা করা শস্ত্র প্রয়োগ। ছোট লাঠির নাম "ডাং", যা থেকে ডাংগুলি খেলা। আবার ব্রিটিশ আমলে পথিকের ওপর পিছন থেকে হঠাৎ করে যে ছোট লাঠি ছুঁড়ে মেরে তাকে মাটিতে ফেলে দিতো, তার নাম "ফাবড়া।" সুতরাং, আদিম জীবন থেকেই মানুষের সঙ্গী এই অস্ত্র এবং শস্ত্র।
আগে বিদ্যাশিক্ষার পাশাপাশি এ দেশের শিক্ষার্থীদের অস্ত্রবিদ্যাও শিখতে হতো। মহাভারতের কুরু-পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু ছিলেন দ্রোণাচার্য, একথা আমাদের জানা। এছাড়া মহাভারতে আমরা নাগ অস্ত্রের কথা পাই, যা ছুঁড়ে মারলে আকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে সাপ নেমে এসে শত্রুকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলতো। অস্ত্রের সঙ্গে ছিল ঢাল, মুকুট ও কবচ কুণ্ডল। এ তো গেল মানুষের অস্ত্রশস্ত্র। দেবতাদের হাতেও আছে অনেক অস্ত্র। যেমন, সুদর্শন চক্র, আগ্নেয়াস্ত্র, ব্রহ্মাস্ত্র, গড়ুড়াস্ত্র, কৌমদকী, নারায়ণ অস্ত্র, পাশুপত অস্ত্র, হর ধনু, বরুণ অস্ত্র, বায়ব অস্ত্র ইত্যাদি। রাক্ষস-দৈত্য-দানবরা তপস্যা করে দেবতাদের কাছ থেকে অনেক সময় দিব্য অস্ত্র পেয়েছে। দেবতাদের মধ্যে বিষ্ণুর রয়েছে সুদর্শন চক্র, শিবের ত্রিশূল, ইন্দ্রের বজ্র।
মহিষাসুরকে বধ করতে দেবতারা দেবী দুর্গাকে অস্ত্রসজ্জায় সজ্জিত করেছিলেন। বিষ্ণু দিয়েছিলেন চক্র, শিব দিয়েছিলেন ত্রিশূল, ঐরাবত, ঘন্টা ও বজ্র দিয়েছিলেন ইন্দ্র, হিমালয় দিয়েছিলেন বাহন সিংহ, পবন দেন ধনু, সমুদ্র দেন শঙ্খ ও অগ্নি শক্তি, ব্রহ্মা দিয়েছিলেন অক্ষমালা, কমণ্ডুলু ও দিব্য মুকুট, যম দিয়েছিলেন কালদণ্ড।
এই অস্ত্রশস্ত্রগুলির ব্যবহারিক তাৎপর্য আছে। যেমন, শঙ্খ হলো জাগরণের প্রতীক,
বজ্র হলো সংকল্পের প্রতীক,
চক্র হলো অশুভ বিনাশ ও সভ্যতার অগ্রগতি তথা ব্রহ্মাণ্ডের প্রতীক,
তরবারি হচ্ছে জ্ঞানের প্রতীক,
ত্রিশূল হলো সৎ গুণের প্রতীক,
পদ্ম হলো স্বতস্ফূর্ততার প্রতীক,
খড়্গ হলো মোক্ষের প্রতীক ও অভয় প্রদানকারিণী,
গদা বা কালদণ্ড হচ্ছে প্রীতি ও আনুগত্যের প্রতীক
ঘন্টা হলো আসুরিক শক্তিকে দুর্বল করার প্রতীক,
নাগপাশ হলো বিশুদ্ধ চেতনার প্রতীক।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিজয়া দশমীর দিন অস্ত্রপুজোর পরম্পরা প্রচলিত আছে। রাজপুতদের বাড়িতে অস্ত্র পুজো প্রচলন রয়েছে। জেলা বীরভূমের প্রান্তিক অঞ্চল রাজনগর ব্লকের পদমপুর গ্রামের রাজপুত বংশোদ্ভূত পূর্ণচন্দ্র সিংহ প্রতিবছরই নিজের বাড়িতে অস্ত্র পুজো করে থাকেন।
এছাড়া বীরভূমের দুবরাজপুরে ( থানা ও ব্লক: দুবরাজপুর ) প্রতি বছরই চিরাচরিত প্রথায় দুর্গাষ্টমী ও নবমীর সন্ধিপুজোর লগ্নে দা, তলোয়ার ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন বয়সী পুরুষের দল রাস্তায় মিছিল বের করে এবং এলাকার প্রতিটি পুজো মণ্ডপে ঘোরে। এই অনুষ্ঠানের নাম "জয়তাড়া।" মূলত, অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধে দেবতাদের জয় হয়েছে এবং তাঁরা ফের স্বর্গরাজ্য ফিরে পেয়েছেন---সেই জয়ের আনন্দেই এই "জয়তাড়া।"
তাছাড়া স্বামী প্রণবানন্দ প্রতিষ্ঠিত ভারত সেবাশ্রমে অনুষ্ঠিত হয় "ত্রিশূল উৎসব।" বীরভূমের জেলা সদর সিউড়িতে প্রতি বছরই এই ত্রিশূল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আশ্রমের সন্ন্যাসীরা রাস্তায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে ত্রিশূলকে স্নানে নিয়ে যান আবার নিয়ে আসেন। তারপর হয় এই ত্রিশূল পুজো। সব মিলিয়ে ত্রিশূল উৎসব। সুতরাং, দেখা যাচ্ছে, অতীতকাল থেকেই ভারতবর্ষে অস্ত্র পুজোর প্রচলন রয়েছে। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে সমস্ত দুর্বলতা ঝেড়ে ফেলে গাণ্ডীব ধরতে বলেছিলেন।
ভারতবর্ষের কাছে ক্ষত্রিয়ের ধর্ম বা ক্ষাত্রধর্ম হলো লোককল্যাণের বিরুদ্ধ আচরণকারীর দমন। সোজা কথায়, যারাই লোককল্যাণে বাধা দেবে ক্ষত্রিয়ের অস্ত্র তাকে শাসন করবে। তাই গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে ক্ষত্রিয়ের ধর্ম স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, বুঝিয়ে দিয়েছেন, অর্জুনের সাধনা হলো ক্ষাত্রধর্মের সাধনা। তাই অর্জুন যাকে হত্যা বলছেন, আসলে তা হলো অর্জুনের কাছে ক্ষাত্রধর্ম অনুমোদিত যুদ্ধ। সেজন্য শ্রীকৃষ্ণ বললেন, "উত্তিষ্ঠিত: , জাগ্রত: যশ: লভস্তু।" অর্থাৎ ভ্রান্তি পরিহার করে জাগো, যশ খ্যাতি লাভ করো।
তাই অন্যায়কে সরাতে গেলে অর্জুনকে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে যেতেই হবে। আর সে পথে যদি দুর্যোধনের হয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ান পিতামহ চিরকুমার ভীষ্ম, অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যের মতো মহারথীরা, তবুও তাঁদের ধ্বংস অনিবার্য। কারণ, পর্বতগহ্বরে বন্দিনী প্রবল জলস্রোতকে বর্ষায় আটকানো যায় না কোনোমতেই। সমস্ত জঞ্জালকে প্রবল স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে জীর্ণ পুরাতনকে ফেলে নবীনের জয়গান সে গাইবেই।
বলা হয়, ভগবানের চতুর্থ অবতার নৃসিংহ তাঁর নখ দিয়ে হত্যা করেছিলেন দৈত্য হিরণ্যকশিপুকে। অর্ধেক পশু, অর্ধেক মানুষের চেহারার এই হিরণ্যকশিপু আসলে জীবের বিবর্তনের অলিগোসিন-মাইয়োসিন যুগের ট্রানজিশন ফেজ। প্রকৃতির স্বাভাবিক খাদ্য ফসলকে যখন প্রতিকূল শক্তি নষ্ট করতো, তখন তাকে নখ দিয়েই হত্যা করা হয়েছে। এই প্রকৃতিজাত খাদ্য ফসলটি হলো, কলা। পুজো ও মঙ্গল অনুষ্ঠানে আজও কলা এবং কলাগাছের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেই কলাগাছকে ধ্বংস করতে থাকে এক ধরণের কেঁচো। অবতার হিরণ্যকশিপু সেই মানুষের খাদ্য বিনষ্টকারী কেঁচোদের নখ দিয়ে হত্যা করেছিলেন।
(--"অবতার তত্ত্ব কবিতা: "কবিশেখর পণ্ডিত ভুবনমোহন দাস)
পরবর্তীকালে ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম একুশবার তাঁর কুঠার দিয়ে পৃথিবী নি: ক্ষত্রিয় করেছিলেন। হত্যা করেছিলেন মা রেণুকাকে। তারপরেও তিনি ভগবানের ষষ্ঠ অবতার ! কিন্তু মাতৃহন্তাকে ভগবানের অবতার বলা সম্ভব?
এখানেও বিষয়ের গভীরে যেতে হবে আমাদের।
বলা হয়, সহস্রবাহু কার্তবীর্যাার্জুনকে হত্যা করেছিলেন আগুনের ব্যবহার জানা অগ্নিহোত্রী ব্রাহ্মণ পরশুরাম। আসলে পরশুরাম বনের অর্জুন গাছের সহস্র শাখা-প্রশাখাকে তাঁর কুঠার দিয়ে কেটে জঙ্গল পরিস্কার করে মানুষের বাসযোগ্য ভূমি তৈরি করেন এবং তারপর মা ধরিত্রীর বুকে অস্ত্রাঘাত করে মাটি রেণু রেণু করেন। এর ফলে অনাবাদি জমি পরিণত হয় কৃষিজমিতে। মাটি রেণু রেণু অর্থাৎ গুঁড়ো গুঁড়ো করা মানেই মা রেণুকাকে হত্যা করা। বিবর্তনের পথে এই সময় থেকেই মানুষ হলো দ্বিপদ অর্থাৎ এই সময় থেকেই মানুষ তার পূর্ণ মানুষের রূপ পেল।
সপ্তম অবতার ধনুর্বাণধারী রাম। দূরক্ষেপণ অস্ত্র হলো রামের এই ধনুর্বাণ। আর এই অস্ত্রের কাছে পরাজিত হলো পরশুরামের পুরোনো অস্ত্র কুঠার। তখনই দর্পচূর্ণ হলো পরশুরামের।
চির বিদায় নিলো জীর্ণ পুরাতন। দেখা দিল, স্থায়ী জনপদ, তৈরি হলো রাজ্য, গোষ্ঠীপতি হিসেবে রাজা এলেন। সেই সঙ্গে বিবর্তিত হলো মাতৃতান্ত্রিক সমাজ এবং সে সমাজে এলেন আদর্শ পিতা-মাতা-পতি-পত্নী-ভাই।
এই পর্বের দ্বিতীয় দফায় হলো রামের অহল্যা উদ্ধার। হালের সাহায্যে অনাবাদি জমি কর্ষণ করেই তাকে পরিণত করা হলো কৃষি জমিতে। এটাই রামের পাষাণী অহল্যা উদ্ধার।"সীতা" অর্থে লাঙলের ফলা এবং রাম তাই "সীতাপতি।" পরবর্তীকালে হলধর বলরাম এলেন। নদী মোহনায় লৌহ লাঙলের ফলায় পরিপূর্ণভাবে গড়ে উঠলো কৃষি সভ্যতা ও নদীমাতৃক সভ্যতা।
তাই যুগে যুগে ভারতের সভ্যতা-সংস্কৃতি গড়ে ওঠার পিছনে রয়েছে অস্ত্রের অপরিহার্য ভূমিকা আর সে অস্ত্র কখনও ব্যবহৃত হয়েছে পরশুরামের কুঠার হিসেবে, কখনও কৃষি যন্ত্রপাতি লাঙলের ফলা হিসেবে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, অরণ্যের মাঝে মানুষের বাসযোগ্য বাস্তুজমি ও বেঁচে থাকার জন্য নিশ্চিত খাদ্যের কৃষিজমির পত্তন। আর এই লোককল্যাণকর কাজেই ব্যবহৃত হয়েছে অস্ত্রধারী মানুষের শক্তি।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.