সরস্বতী: মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও সম্ভাবনাময় এক নদীর নাম

History of India
saraswati river in history of bengali literature
মজে হারিয়ে গেলেও, এখনো বেঁচে রয়েছে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের নদী সরস্বতী। এ সরস্বতী ঋগ্বেদের সিন্ধু অঞ্চলের সরস্বতী নয়, এ সরস্বতী বাংলার নদী। খ্রিস্টিয় ষোড়শ শতক পর্যন্ত ভাগীরথীর এক শাখানদী হিসেবে অস্তিত্ব ছিল হুগলির সপ্তগ্রাম অঞ্চলে। এখানেই রয়েছে গঙ্গা ও তার দুই প্রধান শাখা নদী---যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থল "মুক্তবেণী।" সপ্তগ্রামের কাছেই সরস্বতীর উৎপত্তি। হুগলির সপ্তগ্রাম ছিল এই অঞ্চলের প্রধান নদী বন্দর। শিবপুর, বাঁশবেড়িয়া, খামারপাড়া, ত্রিশবিঘা, বাসুদেবপুর, দেবানন্দপুর ও কৃষ্ণপুর---এই সাতটি গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠেছিল সপ্তগ্রাম। খ্রিস্টিয় ষোড়শ শতকেও ত্রিবেণী থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক ধরে সপ্তগ্রাম ( চলতি কথায় "সাতগাঁ) হয়ে বয়ে চলতো সরস্বতী নদী। দক্ষিণ-পূর্বে বয়ে চলতো যমুনা। যমুনা এখন খালের আকার নিয়েছে।
খ্রিস্টিয় সপ্তম শতাব্দী থেকেই ধীরে ধীরে পলি জমতে থাকে সরস্বতীর উৎপত্তিস্থলে এবং তারপর খ্রিস্টিয় ষোড়শ শতাব্দীতে এসে প্রায় শুকিয়ে যায়। রূপনারায়ণের খাত বরাবর বয়ে চলে তাম্রলিপ্ত ( অধুনা তমলুক) হয়ে মোহনায় পড়তো সরস্বতী। রূপনারায়ণ, দামোদরসহ অনেক ছোট নদী তখন ছিল সরস্বতীর উপনদী। হুগলি জেলার কোন্নগর রেলস্টেশনের উল্টোদিকে নৈটি রোডের ধার দিয়ে এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেখা যায় সারি সারি পুকুর, যা একসময় ছিল এগুলি সরস্বতীর খাত। কোন্নগর রেলস্টেশনের উল্টোদিকে নবগ্রাম। এর উত্তর-পূর্বে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে বারুজীবী কলোনি, যেখানে গিয়ে হারিয়ে গেছে সরস্বতীর পথ। আবার পশ্চিমদিকে পারডানকুনির কাছাকাছি এলাকায় গিয়ে নদীখাত মিশে গেছে ঘন জনবসতির ভেতরে। খাতটি ঢুকেছে কোন্নগর ও ডানকুনি এলাকায়। এরপর এই এলাকায় নদী হয়ে গেছে পুকুর, আর তারপর পুকুর বুজিয়ে জনবসতি। নদীর তীরে একসময় বণিকদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন মন্দির। বিশালাক্ষীতলা এখনো তার সাক্ষী দিচ্ছে।
হুগলির ত্রিবেণীর গঙ্গা পেরিয়ে ৭৭ কিলোমিটার পথ যাবার পর হাওড়ার সাঁকরাইলে গিয়ে পুনরায় ওই নদীতেই মিশেছে সরস্বতী। তবে অনেক জায়গায় নদীর অস্তিত্ব নেই। সরস্বতীর এই ৭৭ কিলোমিটার যাত্রাপথে দুটি ভাগ---হুগলি জেলায় "উত্তর সরস্বতী" এবং হাওড়া জেলায় "দক্ষিণ সরস্বতী।" হুগলির বাঁশবেড়িয়া থেকে আদি সপ্তগ্রাম এবং চন্দননগর থেকে চণ্ডীতলা পর্যন্ত কিছু কিছু এলাকায় সেচের কাজে ব‍্যবহৃত হয় সরস্বতীর জল। এরপর চণ্ডীতলার পর থেকে হাওড়ার আন্দুল ও সাঁকরাইল পর্যন্ত শুধুই আবর্জনা, কলকারখানা ও খাটালের বর্জ্য পড়ে চলেছে সরস্বতীর গর্ভে। আর বলুহাট থেকে সাঁকরাইল পর্যন্ত সরস্বতীর পাড় জং দং অর্থাৎ জবর দখল। হাওড়া থেকে হুগলির সিঙ্গুরের পথে আছে নদীর চর বা চড়া, যার নাম "দিয়াড়া।" মূল নদীর পরিত্যক্ত খাত এই "দিয়াড়া।"
saraswati river in history of bengali literature
খ্রিস্টিয় সপ্তদশ শতকের (১৬৪০ খ্রি: ) কবি ক্ষেমানন্দ দাস তাঁর "মনসা মঙ্গল" কাব‍্যে জানাচ্ছেন সরস্বতীর কথা। এই সরস্বতী দিয়ে সপ্তগ্রাম থেকে উজানে ত্রিবেণী হয়ে সাগরে যেত বণিক চাঁদ সদাগরের সপ্তডিঙা মধুকর। নদীর ধারে বণিকরা তৈরি করে দিয়েছিলেন বহু মন্দির। বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী মন্দির, অনন্ত বাসুদেব মন্দির সেই দূর অতীতের পাথুরে প্রমাণ। পরবর্তীকালে এই পথে বাণিজ্য জাহাজ নিয়ে চলাচল করতো পোর্তুগিজ বণিকরা। নৌকো ও জাহাজে মালপত্র তুলে দেওয়ার পর তারা তাদের নদীপাড়ের অস্থায়ী কুঁড়েঘরগুলিতে আগুন লাগিয়ে দিতো। পর্যটক সিজার প‍্যাট্রিক এ ঘটনা দেখেছেন। ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে প্রবল ভূমিকম্পে বদলে যায় এলাকার ভূ-প্রকৃতি। এরপর বন‍্যায় আরও পাল্টে যায় এলাকার ভূগোল। ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দের ভ‍্যান ডেক ব্রুকের মানচিত্রে রয়েছে বদলে যাওয়া সরস্বতী।
তাম্রলিপ্ত বন্দরের পতনের পরেই গড়ে উঠেছিল সপ্তগ্রাম বন্দর, তারপর সপ্তগ্রামের পর কলকাতা বন্দর। সপ্তগ্রাম বন্দরের নাব‍্যতা কমে গেলে পোর্তুগিজরা এই এলাকা ছেড়ে দেয় এবং মোগল সম্রাট আকবরের কাছে ফরমান নিয়ে ১৫৭৮ থেকে ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে তারা গড়ে তোলে "উগোলিম" বা হুগলি। শেষে বাণিজ্য ছেড়ে পোর্তুগিজরা এলাকায় ডাকাতি করতে শুরু করে এবং তাদের জন্য হুগলি নদীর নাম হয়ে যায় "রোগস রিভার" অর্থাৎ ডাকাতের নদী। ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট শাহজাহান সেনা পাঠিয়ে এখান থেকে পোর্তুগিজদের উৎখাত করেন।
একসময় মজে যাওয়া সরস্বতীর জন্য শুরু হয়েছিল "সরস্বতী বাঁচাও" আন্দোলন। তার চাপে রাজ‍্য সেচ দফতর হুগলির নসীবপুর থেকে হাওড়ার সাঁকরাইল পর্যন্ত এলাকায় ৩২ কোটি টাকা খরচ করে সরস্বতী সংস্কারের পরিকল্পনা হাতে নেয় এবং ২০০৮-এ সাঁকরাইলের দিক থেকে কাজ শুরু হয়। তারপর বর্ষা এলে কাজ বন্ধ হয়। আর তা চালু হয়নি। মধ‍্যযুগের বাংলার ইতিহাস রয়েছে এই নদীপথেই। সরস্বতীকে বাঁচিয়ে তুললে সমৃদ্ধ হবে বাংলার কৃষি থেকে কৃষ্টি। কিন্তু শুরু কি হবে?
তথ্যসূত্র:
Saptagram or Satgaon: Rakhaldas Bandopadhyay, Journal of the Asiatic Society of Bendal, 1909.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.