রাজ্যশ্রী-গ্রহবর্মার বিবাহ বৃত্তান্ত
দিনে দিনে বেড়ে উঠছিলেন রাজকুমারী রাজ্যশ্রী। খ্রিস্টিয় সপ্তম শতাব্দীর প্রথমার্ধে লেখা বাণভট্টের "হর্ষচরিত"-এর চতুর্থ উচ্ছ্বাসে রাজ্যশ্রীর বিয়ের উল্লেখ রয়েছে এবং সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাণভট্ট রাজ্যশ্রীর বিয়ের বিষয়ে বলছেন, ---
"যৌবনম্ আরুরোহ।"
অর্থাৎ, রাজ্যশ্রী যুবতী। আবার বাণভট্টের ভাষায় রাজ্যশ্রীর বিষয়ে পিতা প্রভাকরবর্ধন তাঁর স্ত্রী যশোমতীকে অন্যত্র বলছেন, ---
"দেবী তরুণীভূতা বৎসা রাজ্যশ্রী: ।
হৃদয়ম্ অন্ধকারয়তি মে দিবসম্ ইব পয়োধরোন্নতিরস্যা: ।"
অর্থাৎ, অনূঢ়া রাজ্যশ্রী উন্নত-পয়োধরা তরুণী।
এখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বালিকা বয়সে রাজ্যশ্রীর বিয়ে হচ্ছে না, হচ্ছে তরুণী বয়সে। সুতরাং, মধ্যযুগের "অষ্টম বর্ষে গৌরীদান প্রথা" এখানে অচল। তাহলে, খ্রিস্টিয় সপ্তম শতাব্দীর প্রাচীন ভারতবর্ষে বালিকা বিবাহ প্রচলিত ছিল না। যৌবনকালেই মেয়েদের বিয়ে হতো। আর রাজকন্যার বিয়ে যদি যৌবন বয়সেই হয়, তবে প্রজাদের রাজার নীতিই মেনে চলার কথা।
এবার রাজ্যশ্রীর পরিচয় প্রসঙ্গে আসি।
খ্রিস্টিয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে পূর্ব পাঞ্জাবের কর্নাল-আম্বালা ও তার কাছাকাছি এলাকা জুড়ে ছিল শ্রীকণ্ঠ রাজ্য। এই রাজ্যের রাজধানী ছিল স্থাণ্বীশ্বর অর্থাৎ আজকের থানেশ্বর।
এই রাজ্যের শক্তিশালী রাজা ছিলেন প্রভাকরবর্ধন (আনুমানিক ৫৮০-৬০৫ খ্রি: )। তাঁর দুই পুত্র---রাজ্যবর্ধন ও হর্ষবর্ধন এবং এক কন্যা, নাম---রাজ্যশ্রী। এই রাজকুমারী রাজ্যশ্রীর বিবাহ হচ্ছে। পাত্র---কনৌজের মৌখরী রাজবংশের রাজা অবন্তীবর্মার পুত্র গ্রহবর্মা। বিয়ে উপলক্ষে সেজে উঠলো কনের বাড়ি। বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হলো শিল্পীদের। বিভিন্ন রাজাদের কাছ থেকেও উপহার সামগ্রী আসতে লাগলো। বাজনাদাররা উদ্দাম বাজনা বাজিয়ে চললো। সকল আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের পান ও সুগন্ধি চূর্ণ দেওয়া হলো যথেচ্ছভাবে। সূত্রধারদের হাতে সাদা ফুল, সুগন্ধি ও কাপড় দিয়ে তৈরি হলো বিবাহ বেদি। বিভিন্ন দেশ থেকে চারণকবিরা এসে পৌঁছলেন। রঙমিস্ত্রিরা কাঁধে সাদা রঙ পাত্র নিয়ে হাতে ব্রাশ দিয়ে রাজপ্রাসাদ সাদা রঙে রাঙিয়ে দিচ্ছিল। হাতি-ঘোড়ায় ভর্তি হয়ে গেল রাজবাড়ির উঠোন এবং সেসব দেখার জন্য ভীড় করলো কৌতূহলী মানুষের দল।
মাটি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল মাছ, কচ্ছপ, নারকেল, কলা। স্বর্ণকাররা সোণা পেটাচ্ছিল এবং সে আওয়াজে গমগম করছিল গলিপথ। বিভিন্ন সামন্তরাজারা কোমর বেঁধে বিয়ের কাজকর্ম তদারকি করছিলেন। সকাল থেকেই এয়োতিরা সেজেগুজে বিয়ের মণ্ডপে হাজির হয়ে হবু বর-বধূর গুণকীর্তন করে মধুর সুরে গান করছিলেন। কিছু অভিজ্ঞ মহিলা মাপজোপ করে বিভিন্ন কাপড় কাটছিল আর ধোপারা সেগুলি রঙ করছিল। রাণী যশোমতী নিজে আমন্ত্রিতা মহিলাদের আপ্যায়ণ এবং চাকরদের বিভিন্ন আদেশ দিচ্ছিলেন। অন্যদিকে, রাজা প্রভাকরবর্ধন তাঁর দুই পুত্র রাজ্যবর্ধন ও হর্ষবর্ধনকে নিয়ে সবদিক দেখাশোনা করছিলেন। গণকরা লগ্ন বিচার করতে বসে গেলেন। রাত্রির প্রথম প্রহরে বিয়ের লগ্ন। সেদিন সকালেই প্রতিহাররা সমস্ত অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের রাজপুরী থেকে দূর করে দিল। হাতির পিঠে চেপে বর গ্রহবর্মা এলেন। সঙ্গে সোণার সাজে ঘোড়ার পিঠে লোকলস্কর। ঘোড়াগুলি ডেকে উঠলো আর তাদের ডাক শুনে পাল্টা ডাক ডেকে কনের বাড়ির ঘোড়াগুলি যেন আহ্বান জানালো তাদের।
হাতির পিঠ থেকে নামলেন বর গ্রহবর্মা। নমস্কার জানালেন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভাবী শ্বশুরমশাই প্রভাকরবর্ধনকে। প্রভাকরবর্ধন ভাবী জামাইকে গাঢ় আলিঙ্গন করলেন। এরপর বর গ্রহবর্মা আলিঙ্গন করলেন রাজ্যবর্ধন ও হর্ষবর্ধনকে। তারপর রাজা প্রভাকরবর্ধন তাঁর ভাবী জামাইকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে বসালেন। দিলেন নানান্ উপহার।
লগ্ন উপস্থিত হলে বর গ্রহবর্মাকে কৌতুকগৃহে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হলো। অবশেষে পথে কৌতুহলী মহিলাদের ভিড় পেরিয়ে কৌতুকগৃহে পৌঁছলেন গ্রহবর্মা এবং সেখানে দেখতে পেলেন রাজকন্যা রাজ্যশ্রীকে। রাজ্যশ্রীর মুখ অবগুন্ঠিত আর তার সৌন্দর্যের কাছে দীপালোক যেন নিষ্প্রভ। ঘন ঘন নি: শ্বাস পড়ছে তাঁর। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন সমুদ্রমন্থনজাতা লক্ষ্মী। তবে এই মুহূর্তে তিনি বুঝি বিদায়ী কুমারীত্বের জন্য শোকাহতা। মুখ নিচু করে থাকা রাজ্যশ্রী বার বার মুখ তুলে বর ও লোকজনদের দেখার চেষ্টা করছিলেন। আর সখিরা ঠাট্টা-তামাশা করছিল। পরিহাসপ্রিয় নারীরা বরকে দিয়ে কৌতুকগৃহের যাবতীয় আচার শেষ করালেন। এরপর বর হাজির হলেন বিয়ের আসরে। কনের হাত ধরে বর দাঁড়ালেন সাদা বেদির সামনে। নিমন্ত্রিত রাজারা দাঁড়িয়েছিলেন বেদির চারদিকে। বেদির চারদিকে সাজানো মাটির পুতুল, পুতুলের হাতে ধরা মাঙ্গলিক ফল। সেই সঙ্গে পাঁচটি মুখবিশিষ্ট মঙ্গল কলসে সাজানো শিশিরভেজা অঙ্কুরিত যব।
উপস্থিত পুরোহিতরা হোম করছিলেন। সামনে রাখা খৈ। বর-বধূ একসঙ্গে বেদির ওপর উঠে দাঁড়ালেন। যজ্ঞে আহুতি দেওয়া হলো। বর-বধূ অগ্নি প্রদক্ষিণ করলেন। বধূর মুখ দেখতে আগুনের শিখাও যেন ডানদিকে ঘুরতে লাগলো।
যজ্ঞের আগুনে পড়লো লাজ (খৈ) অঞ্জলি। যজ্ঞের জ্বলন্ত অগ্নিশিখাকে দেখে মনে হলো, তিনি বর-বধূর সৌন্দর্য দেখে হাসছেন!বিয়ে শেষ। এবার কাঁদতে শুরু করলেন রাজ্যশ্রী। উপস্থিত আত্মীয়ারাও কাঁদতে লাগলেন। এরপর গুরুজনদের প্রণাম করতে বর-বধূ তাঁদের ঘরে গেলেন। সব শেষে বর-বধূ প্রবেশ করলেন তাঁদের সাজানো শয়নকক্ষে। ওই ঘরের দরজায় আঁকা ছিল রতি ও প্রীতি দেবতার মূর্তি। ভ্রমরের দল গুঞ্জন করতে শুরু হলো এবং তাদের ডানার নাড়াচাড়ায় কেঁপে কেঁপে উঠতে লাগলো ঘরের মঙ্গলদীপ।
ঘরের ভেতরে কামদেবের মূর্তি। আর বিছানার মাথার দিকে অমঙ্গল দূর করতে রাখা নিদ্রাকলস। অবশেষে লজ্জাবতী নববধূ পিছন ফিরে শুয়ে পড়লেন বিছানায় আর আয়নায় তার ছবি দেখতে দেখতে রাত কাটালেন গ্রহবর্মা। তাঁর যেন মনে হচ্ছিল, বুঝি তাঁদের প্রথম প্রেমালাপ শুনতে জানালায় কান পেতে আছে অনেকেই। নতুন জামাই দশদিন শ্বশুরঘরে থাকলেন। তাঁর মধুর ব্যবহারে মুগ্ধ সবাই। বিদায়ের দিন এসে গেল। রাজা প্রভাকরবর্ধন মনের কষ্টেই মেয়ে-জামাইকে বিদায় করলেন। তারপর সকলের মন জয় করে জীবনসঙ্গিনী রাজ্যশ্রীকে নিয়ে স্বদেশে ফিরলেন গ্রহবর্মা। বাণভট্টের কঠিন সংস্কৃত ভাষার অনুবাদ অত্যন্ত শক্ত। তবুও এখানে রাজ্যশ্রীর বিয়ের অনুষ্ঠানের সঙ্গে আজকের ভারতীয়দের আচার-অনুষ্ঠানের অনেক মিল পাওয়া যায়। তাই অতীত থেকে বর্তমানেও টিকে রয়েছে শ্বাশত ভারতীয় সংস্কৃতি।
তথ্যসূত্র:
The Harsha-Charita of Bana: (Trans.) E. B. Cowell and T.W. Thomas, Indian Reprint, 1961, PP.121-131.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.