কাশ্মীরের রাজা থেকে রাজ-ভিখারি কবি মাতৃগুপ্ত

History of India
know about raja matrigupa who was the king of kashmir
Raja Vikramaditya
ভারাক্রান্ত মনে কাশ্মীরের পথে চলেছেন কবি মাতৃগুপ্ত। উজ্জ্বয়িনী থেকে কাশ্মীর অনেকটা দূরের পথ। রাজা বিক্রমাদিত্যের হুকুমে একখানি রাজপত্র নিয়ে একাকী সহায়-সম্বলহীন মাতৃগুপ্ত চলেছেন। কাশ্মীরের প্রধান রাজকর্মচারীদের হাতে সে পত্রখানি তুলে দিতে হবে। পত্রে কি লেখা আছে, তা দেখা বারণ।
এভাবে একাকী সহায়-সম্বলহীনভাবে মাতৃগুপ্তকে কাশ্মীরে পাঠানো নিয়ে বিক্রমাদিত‍্যের সভাসদরাও অসন্তুষ্ট। কিন্তু রাজার আদেশ, তাই মানতেই হবে। পথে যেতে যেতে মাতৃগুপ্তের ফেলে আসা দিনগুলির কথা মনে পড়ছিল।
মাতৃগুপ্ত জানতেন, রাজা বিক্রমাদিত্য গুণীর কদর করেন। তাঁর কাছে কোনো কিছু চাইতে হয় না।

একদিন কবি মাতৃগুপ্ত উজ্জ্বয়িনীতে হাজির হলেন রাজা বিক্রমাদিত্যের দরবারে। বিক্রমাদিত্য তাঁকে রাজপুরীতে আশ্রয় দিলেন। রাজপ্রাসাদে থেকে মাতৃগুপ্ত রাজার অনুগত হয়ে থাকার চেষ্টা করতে লাগলেন। অন্দরমহলের কোনো দাসীদের দিকে ফিরেও চাইতেন না। তাঁকে কেউ অবজ্ঞা করলেও তিনি নীরব থাকতেন। রাজার অপ্রিয় লোকজনের সঙ্গে মিশতেন না। সব সময় পরের প্রশংসা করতেন। নিজের প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ খুঁজতেন।

এমনিভাবেই কেটে গেল পুরো একটি বছর। দেখতে দেখতে এসে গেল শীত। একদিন কবি মাতৃগুপ্তকে দেখতে পেলেন বিক্রমাদিত্য। কবির মলিন বেশ, চেহারা অনেক রোগা হয়ে গেছে।
এমনি এক শীতের রাতে মাতৃগুপ্তের ডাক পড়লো রাজা বিক্রমাদিত্যের শোবার ঘরে। ঘটনাটা আকস্মিক। রাত দুপুরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল রাজা বিক্রমাদিত্যের। জেগে উঠে দেখলেন, শীতে ঘর গরম রাখার জন্য আগুন পাত্রে আগুন জ্বলছে। আলোও জ্বলছে। কিন্তু প্রবল ঠাণ্ডা বাতাসে ঘরের আলোকশিখা কাঁপছে। যেকোনো সময় সেগুলি নিভে যেতে পারে।
রাজা বিক্রমাদিত্য আলোগুলিকে উসকে দিয়ে আরও জোরে জ্বালিয়ে দেবার জন্য চাকরদের ডাকলেন। কিন্তু কেউ জেগে নেই। শীতের রাতে সবাই ঘুমুচ্ছে। বাইরের ঘরে জেগেছিলেন একমাত্র মাতৃগুপ্ত। তিনি ঘরে এলেন। বিক্রমাদিত্য তাঁকে ঘরের নিভু নিভু আলোগুলিকে উসকে দিতে বললেন।
তাই করলেন কবি মাতৃগুপ্ত। এরপর বাইরে বেরোতে যাবেন, এমন সময় রাজা বিক্রমাদিত্য তাঁকে দাঁড়াতে বললেন।
সামান্য পোষাকে ঘরের ভেতরেই তখনও শীতে প্রবলভাবে কাঁপছিলেন মাতৃগুপ্ত। রাজার কথায় কিছুটা ভয় পেলেন।
রাজা বিক্রমাদিত্য তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, এখন রাত কত! মাতৃগুপ্ত জানালেন, রাত আর দেড় প্রহর মাত্র বাকি। বিক্রমাদিত্য ফের জানতে চাইলেন, কিভাবে তিনি এই সঠিক সময় বলছেন। তবে কি তিনি রাতে ঘুমোন না?

মাতৃগুপ্ত সঙ্গে সঙ্গে একটি সংস্কৃত শ্লোক রচনা করে নিজের দুর্দশার কথা তুলে ধরলেন। তিনি বললেন, সব সময় তাঁর চিন্তা। ঠাণ্ডা বাতাসে শরীর কাঁপছে তাঁর। শীতের পোষাক নেই। তাই আগুন জ্বালিয়ে জেগে থাকতে হয়। সে আগুন বারে বারে নিভে যায়। ফুঁ দিতে দিতে ঠোঁট ফেটে গেছে, খিদের জ্বালায় গলা শুকিয়ে কাঠ। এ অবস্থায় নিদ্রাদেবী তাঁকে ছেড়ে গেছেন।

মাতৃগুপ্তের কবিত্বের প্রশংসা করলেন বিক্রমাদিত্য। ভাবতে লাগলেন, কিভাবে কবির সুব‍্যবস্থা করা যায়।
সুযোগ এসে গেল। কাশ্মীর রাজ‍্যের প্রধান অমাত্যরা সেখানকার জন্য একজন সুশাসক চেয়ে বিক্রমাদিত্যের কাছে আবেদন জানালেন।
রাজা বিক্রমাদিত্য ঠিক করলেন কবি মাতৃগুপ্তকেই সেখানকার রাজা করে পাঠাবেন। সেইমতো পত্র লিখে দিলেন।
এ লেখার শুরুতেই আমরা কবি মাতৃগুপ্তকে সেই রাজপত্র নিয়ে কাশ্মীরের পথে যেতে দেখেছি। সময়কাল খ্রিস্টিয় চতুর্থ থেকে পঞ্চম শতাব্দী।
একসময় কাশ্মীরের ক্রমবর্ত প্রদেশের শূরপুরে এসে পৌঁছলেন মাতৃগুপ্ত। সেখানে তিনি রাজকর্মচারীদের একটি শিবির দেখতে পেলেন। শুনতে পেলেন, তাঁরা কার জন্য যেন অপেক্ষা করছেন সেখানে।
রাজা বিক্রমাদিত্যের দূত এসেছেন জেনে মাতৃগুপ্তকে দ্বাররক্ষীরা সসম্মানে ভেতরে নিয়ে গেল।
এরপর রাজপত্রখানি নিয়ে রাজকর্মচারীরা ভেতরে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে মাতৃগুপ্তকে তাঁরা একটি সোণার সিংহাসনে বসিয়ে বহু মূল্যবান অলংকার পরিয়ে তাঁকে রাজপদে অভিষিক্ত করলেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, আমরা কাশ্মীরের জন্য মহারাজ বিক্রমাদিত্যের কাছে একজন সুশাসক চেয়ে পাঠিয়েছিলাম। তিনি আপনাকে পাঠিয়েছেন। আজ থেকে কাশ্মীরের রাজা আপনি।
মাতৃগুপ্ত এবার বিষয়টি জানতে পারলেন। বিক্রমাদিত্যের প্রতি কৃতজ্ঞতায় তখন তাঁর দু'চোখে জল!
এরপর বিক্রমাদিত্যকে উপহার পাঠালেন মাতৃগুপ্ত। সঙ্গে রাজার প্রতি অসীম শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় লেখা সংস্কৃত শ্লোকে পত্র।

চার বছর আট মাস ঊনত্রিশ দিন কাশ্মীর শাসন করার পর মাতৃগুপ্তের কাছে খবর এলো, রাজা বিক্রমাদিত্যের মৃত্যু হয়েছে। শুনে সঙ্গে সঙ্গে সিংহাসন ত‍্যাগ করলেন মাতৃগুপ্ত। চলে গেলেন কাশীতে। সেখানে নিলেন গেরুয়া বসন। সন্ন্যাসী হয়ে কবি মাতৃগুপ্ত তাঁর বাকী জীবন এভাবে কাশীতেই কাটিয়ে দিলেন।

অন্যদিকে, মাতৃগুপ্তের প্রতিনিধি হিসেবে কাশ্মীর শাসন করতে লাগলেন রাজা প্রবরসেন।
রাজ‍্যের উদ্বৃত্ত অর্থ কাশীতে মাতৃগুপ্তের কাছে পাঠিয়ে দিতেন রাজা প্রবরসেন। কিন্তু সন্ন্যাসী মাতৃগুপ্ত সেসব গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন, আর নিজে ভিক্ষা করে দিন কাটাতেন।
এভাবেই দশ বছর পর কাশীতেই মৃত্যু হয় রাজ- ভিখারি মাতৃগুপ্তের।
তথ্যসূত্র:
রাজতরঙ্গিণী: কলহন্, তৃতীয় তরঙ্গ, শ্লোক ১২৪-৩২২
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.