রাজা সাতবাহন, দুই কবির লড়াই ও আধপোড়া "বৃহৎকথা"
বিদূষী রাণীর কাছে হেরে রাজকাজ ছেড়ে লজ্জায় ঘরের কোণে মুখ লুকিয়েছেন রাজা সাতবাহন। কিছুতেই বাইরে বেরোচ্ছেন না। এ নিয়ে রাজসভার দুই কবি শর্ববর্মা ও গুণাঢ্য ভীষণ চিন্তিত। কিন্তু কি এমন ঘটনা ঘটেছিল যার জন্য রাজা সাতবাহন মুখ লুকিয়েছেন ঘরে? আসুন, এবার আমরা সেই বৃত্তান্তে আসি।
সময়কাল: খ্রিস্ট পূর্ব প্রথম শতাব্দী।
স্থান: দাক্ষিণাত্যের মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ জেলার গোদাবরী নদীর তীরে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান নগর। বর্তমানে ওই অঞ্চলের "পৈঠান" গ্রামকে গবেষকরা প্রাচীন "প্রতিষ্ঠান নগর" বলে চিহ্নিত করেছেন। খ্রিস্ট পূর্ব প্রথম শতাব্দী নাগাদ সময়ে অন্ধ্র বংশীয় রাজা সিমুক সাতবাহন এই সাতবাহন সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। শাতবাহন ও সাতবাহন দুটি নামই প্রচলিত। সাতবাহন রাজাদের অনেকেই সাতকর্ণি বা শাতকর্ণি পদবি নিয়েছিলেন।"সাতটি তীর", "সূর্যের সাতটি রশ্মি", সাত বা শতেক কান যার আছে, সেই অর্থে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সংস্কৃত ভাষায় "শত" থেকে এসেছে "শাত" কথাটি। দেবদত্ত রামকৃষ্ণ ভাণ্ডারকর ও ভিনসেন্ট স্মিথ অন্ধ্রপ্রদেশে শাতবাহন রাজারা প্রথম রাজত্ব করেন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।
এই বংশের রাজারা নিজেদের "দক্ষিণাপথেশ্বর" উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। রাজা শাতবাহন প্রথম জীবনে ছিলেন অশিক্ষিত। সে সময় আমাদের দেশের সাধারণ মানুষেরা কথাবার্তা বলতেন প্রাকৃত ভাষায় এবং পণ্ডিতরা সাধারণত ব্যবহার করতেন সংস্কৃত। রাজা শাতবাহন অশিক্ষিত বলে কাব্যপাঠ করতে পারতেন না, কোনো শাস্ত্র গ্রন্থ পড়তেও পারতেন না। এজন্য তাঁর মনে ভীষণ দু: খ ছিল। তবে তাঁর রাজসভায় দু'জন বড়ো মাপের পণ্ডিত ছিলেন, একজন শর্ববর্মা ও অন্যজন গুণাঢ্য। রাজার ইচ্ছে হলো সংস্কৃত শিখবেন। কিন্তু রাজকাজ সামলে সময় কৈ? তাই তাঁর ইচ্ছে অপূর্ণই থেকে যাচ্ছিল।
রাজা সাতবাহনের একজন অত্যন্ত বিদূষী রাণী ছিলেন। সংস্কৃত ভাষাতেও তাঁর ভীষণ দখল ছিল। রাজা সাতবাহনের রাজপ্রাসাদের কাছেই ছিল একটি বাগানবাড়ি। সেখানে একটি দীঘিও ছিল। এক বসন্ত উৎসবের সময় রাজা সাতবাহন ও তাঁর রাণীদের মধ্যে জলখেলা (জলক্রীড়া) চলছিল। অনেকক্ষণ জলখেলা করে অবশেষে ক্লান্ত হয়ে গেলেন রাণীরা। তাঁরা এবার বিশ্রাম চাইলেন। এজন্য সংস্কৃতে সুপণ্ডিত ছিলেন যে রাণী, তিনি রাজাকে বললেন, " মোদকৈ: পরিতাড়য় মাম্।" অর্থাৎ, মহারাজ, আর জল ছিটোবেন না।"মা" ও "উদকৈ: " পদ দুটি জুড়ে রাণী বলেছেন "মোদকৈ: ।" রাজা সাতবাহন বুঝলেন, ক্লান্ত রাণী বুঝি "মোদকৈ: " মানে মোয়া আনতে বলছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পরিচারিকাকে মোয়া আনতে বললেন এবং তা এলে রাজা সেগুলি রাণীর গায়ে ধীরে ধীরে ছুঁড়ে মারতে লাগলেন। তা দেখে রাণী বেশ জোরে জোরে হেসে উঠলেন।
এই ঘটনায় ভীষণ লজ্জা পেলেন রাজা শাতবাহন। সেই সঙ্গে ভীষণ দু: খও পেলেন। এরপর রাজা সাতবাহন মনের দু: খে ঘরের ভেতরে চুপচাপ বসে গেলেন। বাইরেও বেরোন না, রাজকাজ দেখেন না। রীতিমতো চিন্তায় পড়লেন মন্ত্রী থেকে সভাসদ সবাই। রাজসভার দুই কবি শর্ববর্মা ও গুণাঢ্য বিষয়টি নিয়ে ভাবতে লাগলেন। তাঁরা দেখলেন, রাজ্য সুরক্ষিত, কোনো শত্রুর আক্রমণ ঘটে নি। প্রজা বিদ্রোহ হয়নি। আবার কোনো চিকিৎসক আসছেন না। তার মানে রাজার কোনো অসুখ হয়নি। শেষে শর্ববর্মা কিছুক্ষণ ভেবে অপর কবি গুণাঢ্যকে জানালেন, রাজা কোনো কারণে নিজের মূর্খতা বুঝতে পেরে মনের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন।
পরের দিন সকালে দুই কবি গেলেন রাজার সঙ্গে দেখা করতে। গিয়ে দেখলেন, রাজা তাঁদের কোনোরকম অভ্যর্থনা জানালেন না। পণ্ডিতরা রাজাকে আশীর্বাদ করলেন, কিন্তু রাজা চুপচাপ। শেষে কবি শর্ববর্মা একটি কৌশল নিলেন। তিনি জানালেন, গত রাতে তিনি একটি স্বপ্ন দেখেছেন। একটি সুন্দর পদ্মফুল আকাশ থেকে মাটিতে পড়লো আর তার ভেতর থেকে স্বয়ং দেবী সরস্বতী বেরিয়ে এসে রাজার মুখে ঢুকে গেলেন! এটি রাজার বিদ্যালাভের ইঙ্গিত। এবার রাজার সামনে বিদ্যালাভের কোনো বাধা নেই। একথা শুনে রাজা বেশ খুশি হলেন। এবার মুখ খুললেন তিনি। জিজ্ঞেস করলেন, সংস্কৃতে পণ্ডিত হতে কতদিন সময় লাগবে? গুণাঢ্য জানালেন, সংস্কৃত ব্যাকরণ অত্যন্ত কঠিন। শিখতে বারো বছর লাগে। তবে তিনি ছ'বছরেই রাজাকে শিখিয়ে দেবেন।
অন্যদিকে, আরেক কবি শর্ববর্মা জানালেন, তিনি মাত্র ছ'মাসেই রাজাকে পণ্ডিত করে দেবেন। একথা শুনে রীতিমতো রেগে গেলেন গুণাঢ্য। জানিয়ে দিলেন, এ অসম্ভব। তবে শর্ববর্মা যদি সত্যিই তা পারেন, তাহলে তিনি নিজে আর সংস্কৃত চর্চাই করবেন না। শর্ববর্মাও রেগে জানালেন, তিনি যদি রাজাকে ছ'মাসের মধ্যে পণ্ডিত করে তুলতে না পারেন, তবে তিনি বারো বছর গুণাঢ্যের পায়ের জুতো মাথায় করে বয়ে বেড়াবেন। কিন্তু ঝোঁকের মাথায় কথা দিয়ে এলেন ঠিকই, কিন্তু ঘরে এসে রীতিমতো দুর্ভাবনায় পড়লেন শর্ববর্মা। স্ত্রীকে সব কথা খুলে বললেন। শেষে স্ত্রীর পরামর্শে দেব সেনাপতি কার্তিকের গোপন সাধনা শুরু করলেন তিনি। এরপর কার্তিকের বরে তিনি রচনা করলেন "কাতন্ত্র" বা "কলাপ ব্যাকরণ" নামে একটি উচ্চমানের সংস্কৃত ব্যাকরণ। এটি এখনো বঙ্গদেশ ও কাশ্মীরে যথেষ্ট জনপ্রিয়।
শর্ববর্মার রচিত এই ব্যাকরণ পড়েই রাজা সাতবাহন ছ'মাসের মধ্যেই সংস্কৃতে পণ্ডিত হয়ে উঠলেন। একদিন রাজদরবারেই রাজার পরীক্ষা হয়ে গেল। এক ব্রাহ্মণ এসে রাজা শাতবাহনকে নিজের লেখা একটি সংস্কৃত শ্লোক পাঠ করে শোনালেন। সঙ্গে সঙ্গে রাজা শাতবাহন তার হুবহু পুনরাবৃত্তি করে শোনালেন। উপস্থিত সবাই রাজাকে ধন্য ধন্য করতে লাগলো। এ নিয়ে রাজবাড়িতে শুরু হয়ে গেল উৎসব। রাজা সাতবাহন নিজের হাতে কবি শর্ববর্মাকে বহু মূল্যবান ধনরত্ন উপহার দিলেন। এ ঘটনায় রাজদরবার ছেড়ে কবি গুণাঢ্য চলে গেলেন বনবাসে। সেখানে থেকে সংস্কৃত চর্চা ছেড়ে পৈশাচি প্রাকৃত ভাষায় গ্রন্থ রচনায় মনোযোগী হলেন গুণাঢ্য। লিখে ফেললেন সাত লক্ষ শ্লোকে সাতটি বিচিত্র কাহিনীর বিরাট এক গল্প সংকলন "বৃহৎকথা।" এটি তিনি উপহার দিলেন রাজা শাতবাহনকে।
কিন্তু কবি শর্ববর্মার সঙ্গে হেরে গিয়ে রাজসভায় কদর কমে গিয়েছিল গুণাঢ্যের। তাই তিনি সম্মান পেলেন না, উল্টে তাঁর লেখার বেশকিছু ত্রুটির উল্লেখ করলেন রাজা সাতবাহন। মনের দু: খে গুণাঢ্য তাঁর গ্রন্থটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলেন। একদিন রাজা শাতবাহনের কাছে খবর এলো, প্রতিষ্ঠান নগরীর কিছুটা দূরে একটি পর্বতের কাছে এক ব্যক্তি একটি বিরাট গ্রন্থের একেকটি পাতা পাঠ করছে এবং তারপর সেটি জ্বলন্ত আগুনে ছুঁড়ে দিচ্ছে। রাজা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে হাজির। গিয়ে দেখলেন, কবি গুণাঢ্য তাঁর "বৃহৎকথা" পোড়াচ্ছেন। রাজা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে থামালেন। ততক্ষণে গ্রন্থের বেশির ভাগটাই পুড়ে গেছে। মাত্র সাত ভাগ বাকি আছে। সেই বাকি অংশে বৎসরাজ উদয়ন ও তাঁর পুত্র নরবাহনদত্তর কাহিনী আছে। গুণাঢ্য আর রাজসভামুখী হলেন না।
তবে রাজার অনুরোধে তাঁর দু'জন শিষ্য রাজসভায় যোগ দেন এবং তাঁরা পরে বেঁচে যাওয়া গ্রন্থের একটি ভূমিকা লিখেছিলেন। মূল গ্রন্থটি পাওয়া যায় নি। তবে কেউ কেউ সংস্কৃত ভাষায় এটির সারাংশ লিখেছেন। এর মধ্যে বুদ্ধস্বামীর "বৃহৎকথাশ্লোক সংগ্রহ", ক্ষেমেন্দ্রর "বৃহৎকথা মঞ্জরী" এবং সোমদেব ভট্টর "কথাসরিৎসাগর" উল্লেখ্যযোগ্য। গুণাঢ্য মানে গুণধনী। এভাবেই পোড়া গ্রন্থের অবশিষ্টাংশের মধ্যে বেঁচে রয়েছেন মহাকবি "গুণধনী" গুণাঢ্য।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.