বিন্দুসারের পরে মৌর্য সাম্রাজ্যের ক্ষমতার সিংহাসন কিভাবে পেলেন অশোক

History of India
history of prince ashoka in battle of life
কলিঙ্গযুদ্ধে এক লক্ষ মানুষের মৃত্যু দেখে যাঁর জীবনের মোড় ঘুরে গিয়েছিল, "চণ্ডাশোক" থেকে যিনি হয়েছিলেন "ধর্মাশোক", সেই অশোকের প্রথম জীবন কিন্তু মোটেই সুখের ছিল না। রাজকুমার হলেও তিনি ছিলেন পিতার কাছে অবহেলিত। কিন্তু নিজের অদম্য চেষ্টা আর আত্মবিশ্বাসের জোরে অশোক হয়েছিলেন ভারতের শ্রেষ্ঠ সম্রাট। সম্রাট অশোকের সারনাথের স্তম্ভ আজ ভারত রাষ্ট্রের প্রতীক। তাহলে শুরু করি রাজকুমার অশোকের সংগ্রামের কাহিনী।
শুরু করার আগে আমাদের ফিরে যেতে হবে খ্রিস্ট পূর্ব ২৭২ অব্দে তদানীন্তন মোর্য সাম্রাজ্যের রাজধানী পাটলিপুত্রে। পাটলিপুত্র আজকের পাটনা।
পাটলিপুত্রের রাজসিংহাসনে তখন মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্তের জ‍্যেষ্ঠ পুত্র বিন্দুসার। বিন্দুসারের জ‍্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন রাজকুমার সুসীম। বিন্দুসারের ইচ্ছে ছিল তাঁর মৃত্যুর পর মৌর্য বংশের পরবর্তী সম্রাট হবেন সুসীম। সে সময় বর্তমান ভাগলপুরের কাছে চম্পানগরে এক সম্ভ্রান্ত সুন্দরী ব্রাহ্মণকন্যা ছিলেন, নাম---সুভদ্রাঙ্গী। কোথাও কোথাও লোকমুখে তিনি "জনপদকল‍্যাণী" নামেও পরিচিতা ছিলেন। সুভদ্রাঙ্গীর পিতা নিজে কন্যাকে রাজদরবারে নিয়ে গিয়ে রাজা বিন্দুসারের সঙ্গে বিয়ে দেন। কিন্তু অন্দরমহলের সবাই সুভদ্রাঙ্গীকে ঈর্ষা করতে থাকে। তাদের আশঙ্কা, সুভদ্রাঙ্গীর প্রতি সম্রাট সদয় হলে অন্যদের কপাল পুড়বে। তাই শুরু হলো সুভদ্রাঙ্গীর বিরুদ্ধে অন্দরমহলের ষড়যন্ত্র।
এরপর অন্যান্য রাণীরা সুভদ্রাঙ্গীকে ক্ষৌর কাজে নিযুক্ত করলেন। সুভদ্রাঙ্গী ক্ষৌর কাজে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করলেন। তারপর তাকে রাজা বিন্দুসারের চুল-দাড়ি কাটার কাজে বহাল করা হলো। সুভদ্রাঙ্গীর ক্ষৌর কাজের সময় আরামে ঘুম এসে যেতো বিন্দুসারের।
এভাবে সন্তুষ্ট রাজা বিন্দুসার একদিন সুভদ্রাঙ্গীকে তাঁর মনের ইচ্ছে জানাতে বললেন। উত্তরে সুভদ্রাঙ্গী চাইলেন রাজমহিষীর মর্যাদা। প্রথমে আপত্তি থাকলেও শেষ পর্যন্ত সুভদ্রাঙ্গী হলেন রাজমহিষী। পরবর্তী সময়ে রাজমহিষী সুভদ্রাঙ্গী দুই পুত্রের জননী হলেন। জ‍্যেষ্ঠ পুত্রের নাম রাখা হলো "অশোক" এবং কনিষ্ঠ পুত্রের নাম হলো "বীতশোক।"
ছোটবেলা থেকেই অশোকের গায়ের চামড়া ছিল রুক্ষ। সেজন্য পিতা বিন্দুসার তাঁকে বিন্দুমাত্র পছন্দ করতেন না। তাই সাবালক হবার পরেও অশোকের জীবনের দুর্ভোগ কাটলো না। আজীবিক সম্প্রদায়ের একজন পরিব্রাজক ছিলেন পিঙ্গলবৎস। রাজা বিন্দুসার তাঁকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। একদিন রাজা বিন্দুসার জানালেন, তিনি তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত করতে চান এবং এজন্য রাজকুমারদের যোগ্যতা নির্ণয়ের পরীক্ষা হবে। পিঙ্গলবৎস যেন একাজে তাঁকে সাহায্য করেন। পিঙ্গলব‍ৎস রাজকুমারদের নগরের বাইরে স্বর্ণমণ্ডপ বাগানে নিয়ে যাবার পরামর্শ দিলেন। সেইমতো সকল রাজকুমার নির্দিষ্ট দিনে গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা হলেন। কিন্তু অশোকের কোনো ডাক এলো না।
মা সুভদ্রাঙ্গী পুত্র অশোককে সেখানে যাবার পরামর্শ দিলেন। মায়ের কথায় নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও অশোক সেখানে যেতে রাজি হলেন। মা তাঁর পুত্র অশোকের খাবার হিসেবে সঙ্গে দিলেন মাটির পাত্রে কিছুটা শালি ধানের ভাত ও দৈ।
ঘর থেকে বেরিয়ে বিন্দুসারের প্রধানমন্ত্রীর পুত্র রাধাগুপ্তের সঙ্গে দেখা হলো অশোকের। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও রাধাগুপ্ত রাজকুমার অশোকের জন্য কোনো যানবাহনের ব‍্যবস্থা করে দিতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত অশোকের জন্য জোগাড় হলো একটি বুড়ো হাতি। সেই হাতির পিঠে চেপেই পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হলেন অশোক। কিন্তু অশোকের বসার জন্য সেখানে ছিল না কোনো আসন। অগত্যা মাটিতেই বসলেন অশোক। যথাসময়ে শুরু হলো পরীক্ষাপর্ব। বিচক্ষণ পিঙ্গলবৎস দেখলেন, রাজকুমারদের মধ্যে একমাত্র অশোকের মধ্যেই রয়েছে সুস্পষ্ট রাজলক্ষণ। কিন্তু যেহেতু অশোককে পছন্দ করতেন না পিতা বিন্দুসার, সেহেতু একটি কৌশল নিলেন পিঙ্গলবৎস। তিনি জানালেন, যে রাজকুমার শ্রেষ্ঠ যানে এসেছেন, তিনিই হবেন ভবিষ্যতের রাজা। অশোক ছাড়া অন্যান্য রাজকুমাররা কেউ ঘোড়া, কেউ বা রথে চেপে এসেছিলেন। তাই সবাই ভাবলেন, তাঁরাই হবেন রাজা। কেননা, অশোকের বুড়ো হাতি শ্রেষ্ঠ যান হতে পারে না।
কিন্তু অশোক বুঝে গেলেন, পিঙ্গলবৎস তাঁকেই ইঙ্গিত করেছেন।
শুরু হলো দ্বিতীয় পরীক্ষা। পিঙ্গলবৎস জানালেন, রাজকুমারদের মধ্যে যাঁর যান, আসন, খাদ্য, পানীয় এবং ভোজন পাত্র শ্রেষ্ঠ, ভবিষ্যতে তিনিই হবেন রাজা। অশোক বাদে অন‍্যান‍্য রাজকুমারদের আসন ছিল বহুমূল্য, খাদ্য ছিল উত্তম মানের আর ভোজন পাত্র ছিল সোণার। অশোকের ছিল মাটির থালা আর বসার আসন ছিল মাটি অর্থাৎ পৃথিবী।
এবারেও অশোক ভাবলেন, তিনিই হবেন রাজা। পরীক্ষা থেকে ফিরে অশোক চাইলেন, রাজকাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে। এসে গেল সুযোগ। বিদ্রোহ দেখা দিল তক্ষশীলায়। একদল সৈন্য নিয়ে অশোক তক্ষশীলায় গেলেন বিদ্রোহ দমনে। তক্ষশীলার বিদ্রোহীরা জানালে, তাদের বিদ্রোহ রাজার বিরুদ্ধে নয়, অমাত্যদের অত‍্যাচার সহ‍্য করতে না পেরে তাদের বেছে নিতে হয়েছে এই বিদ্রোহের পথ। অশোক অত‍্যাচারী অমাত‍্যদের ঠাণ্ডা করে বিদ্রোহ থামিয়ে দিলেন।
এরপর হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত খশ রাজ‍্যটি জয় করে নিলেন অশোক। সবকিছু ঠিকঠাক করে অশোক ফিরে এলেন রাজধানী পাটলিপুত্রে।
history of prince ashoka in battle of life
বিন্দুসার যাকে রাজপদে বসাতে চাইছিলেন, তাঁর সেই পুত্র সুসীম ছিলেন দুষ্ট স্বভাবের যুবক। একদিন ঠাট্টা করে রাজসভাতেই প্রবীণ মন্ত্রী খল্লাটকের মাথায় চাঁটি মেরে দিলেন! রেগে গেলেন মন্ত্রী। এখন থেকেই যদি এরকম চলে, তাহলে রাজা হলে তো সুসীম তাঁদের গর্দান নিয়ে নেবে! এই আশঙ্কায় সভাসদরা সুসীমকে বাদ দিয়ে অশোককেই ভবিষ্যতে রাজা করতে চাইলেন। ইতিমধ্যে তক্ষশীলায় ফের বিদ্রোহ দেখা দিল। রাজা বিন্দুসার এবার সে বিদ্রোহ দমনে সুসীমকে পাঠালেন। বিন্দুসার চাইলেন, সুসীম জয়ী হয়ে রাজধানীতে ফিরলে তার সম্পর্কে প্রজাদের ভালো ধারণা জন্মাবে। আর তাতে সুসীমকে রাজপদে বসাতে সুবিধা হবে। কিন্তু বাস্তবে ফল হলো উল্টো। বিদ্রোহ দমনে ব‍্যর্থ হলেন সুসীম। আর বিদ্রোহ দমন না করে সুসীম রাজধানীতে ফিরতেও পারলেন না। ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লেন বৃদ্ধ বিন্দুসার। এ অবস্থায় তিনি সুসীমকে ফিরিয়ে এনে অশোককে বিদ্রোহ দমনে তক্ষশীলায় পাঠানোর নির্দেশ দিলেন রাজকর্মচারীদের।
কিন্তু রাজকর্মচারীরাও শুরু করলেন ষড়যন্ত্র। কারণ, তাঁদের পছন্দ ছিলেন অশোক, সুসীম নয়। কৌশলে রাজকর্মচারীরা অশোককে রোগি সাজিয়ে হাজির করলেন বিন্দুসারের মৃত্যুশয্যায়। জানালেন, অশোক ভীষণ অসুস্থ। তাই এ অবস্থায় তাঁকে বিদ্রোহ দমনে পাঠানো যাবে না। তবে তিনি সুস্থ হলেই তাঁকে এ কাজে তক্ষশীলায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। মনের উদ্বেগে ক্রমেই বেড়ে চললো বিন্দুসারের অসুখ। শেষে ঘনিয়ে এলো মৃত্যুকাল। এ অবস্থায় রাজকর্মচারীরা অশোককে রাজা সাজিয়ে হাজির করলেন বিন্দুসারের শয্যাপাশে। তাঁরা জানালেন, আপাতত অশোককেই সিংহাসনে বসানো হচ্ছে। সুসীম ফিরে এলে তাকেই রাজা করা হবে।
ক্রোধে স্তম্ভিত বিন্দুসার! কিন্তু নিরুপায়। রাজকর্মচারীরা মৃত্যুপথযাত্রী বিন্দুসারের চোখের সামনেই রাজমুকুট পরিয়ে দিলেন অশোকের মাথায়। অন্যদিকে, রক্ত বমি করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অসুস্থ বৃদ্ধ অসহায় বিন্দুসার।
মৌর্য সাম্রাজ্যের সম্রাট হলেন অশোক।
তথ্যসূত্র:
"দিব‍্যাবদান": পরশুরাম লক্ষ্মণ বৈদ‍্য সম্পাদিত, দ্বারভাঙ্গা, ১৯৫৯, পৃ: ২৩২.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.