প্রাচীন ভারতে ন‍্যায় বিচারের জন্য প্রচলিত হয়েছিল বিচার-ঘণ্টা

History of India
history of judgment bells in india
ন‍্যায় বিচার ছিল প্রাচীন ভারতের আদর্শ। আর এই উদ্দেশ্যে চালু হয়েছিল বিচার-ঘণ্টা।
কৌটিল‍্য তাঁর "অর্থশাস্ত্র" গ্রন্থে জানাচ্ছেন, ---
"উপস্থান-গত: কার্যার্থিনাম্ অ-দ্বারাসঙ্গং কারয়েৎ।
দুর্দর্শো হি রাজা কার্যাকার্য-বিপর্যাসম্ আসন্নৈ: কার্যতে।
তেন প্রকৃতি-কোপম্ অরিপরবশং বা গচ্ছেৎ।"
অর্থাৎ, সভায় আসীন থেকে রাজা বিচারপ্রার্থী ব‍্যক্তিদের দরজায় অপেক্ষা করতে বাধ‍্য করবেন না। প্রজাদের কাছে যদি রাজার দেখা পাওয়াটা কঠিন হয় এবং রাজকাজের ভার যদি সহকারি কর্মচারিদের হাতে থাকে, তাহলে বিচারের কাজে শৃঙ্খলা থাকে না। এর ফলে রাজা প্রজার বিরাগভাজন হোন এবং তাঁকে শত্রুর বশীভূত হয়ে থাকতে হয়।
এই ছিল প্রাচীন ভারতের রাজ-আদর্শ। আর এই আদর্শকে বজায় রাখতে প্রচলিত হয়েছিল বিচারের ঘণ্টা বাঁধা। খ্রিস্টিয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে পালি ভাষায় সংকলিত সিংহলী বৌদ্ধ কাহিনী "মহাবংস" গ্রন্থে উল্লিখিত আছে, সিংহলরাজ এড়ার বিচার-ঘণ্টা বেঁধেছিলেন। চোলদেশ অর্থাৎ আজকের তাঞ্জাবুরের তিরুচিরাপল্লীর অধিবাসী ছিলেন এই রাজা এড়ার। তিনি ছিলেন তামিল বংশোদ্ভূত। তিনি আনুমানিক ১৪৫ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ থেকে ১০১ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত সিংহলের রাজপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ছিলেন ন‍্যায়পরায়ণ। কথিত আছে, তাঁর শয্যার শিয়রের দিকে একটি ঘণ্টা বাঁধা থাকতো এবং প্রাসাদের বাইরে ছিল তার লম্বা দড়ি। যে কেউ সেই ঘণ্টা বাজিয়ে রাজদরবারে বিচার চাইতে পারতো।
history of judgment bells in india
এ থেকে প্রমাণিত, খ্রিস্টিয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে বৌদ্ধগ্রন্থ "মহাবংস" রচিত হবার আগে দক্ষিণ ভারত ও সিংহলে বিচার ঘণ্টার ব‍্যবহার প্রচলিত ছিল। খ্রিস্টিয় দ্বাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে কাশ্মীরি পণ্ডিত কলহন তাঁর লেখা "রাজতরঙ্গিণী"-তে কাশ্মীররাজ হর্ষ (১০৮৯-১১০১ খ্রি: ) প্রসঙ্গে লিখছেন, ---
"সিংহদ্বারে মহাঘণ্টাশ্চতুর্দিশমন্ধয়ৎ।
জ্ঞাতুং বিজ্ঞপ্তিকামান্ স প্রাপ্তাংস্তদ্ব‍্যসংজ্ঞয়া। ।
আর্তাং চ বাচমাকর্ণ‍্য তেষা তৃষ্ণা-নিবারণম্।
প্রাবষেণ‍্য: পয়োবাহশ্চাতকানাম্ ইবাকরোৎ। ।"
history of judgment bells in india
অর্থাৎ, রাজা হর্ষের প্রাসাদের চারদিকে সিংহদ্বারে ঝোলানো ছিল বিরাট আকারের ঘণ্টা। বিচারপ্রার্থী প্রজারা সেই ঘণ্টা বাজিয়ে রাজাকে জানান দিতো। বর্ষার মেঘ যেমন তৃষ্ণার্ত চাতকের পিপাসা মেটায়, তেমনি প্রজাদের আর্তি শুনে রাজা হর্ষ তৎক্ষণাৎ তাদের সন্তুষ্ট করতেন। ভারতের বাইরেও ভারতীয় প্রভাবে বিচার-ঘণ্টা বাঁধার রীতি প্রচলিত হয়েছিল। এর মধ্যে হিন্দু-চিনের অন্তর্গত শ‍্যামদেশ ও ব্রহ্মদেশে এই ধরণের বিচার-ঘণ্টার ব‍্যবহার ছিল। খ্রিস্টিয় ত্রয়োদশ শতাব্দী শেষ ও খ্রিস্টিয় চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমদিকে শ‍্যামদেশের রাজা ছিলেন সুখোদয় বংশোদ্ভূত রামরাজ বা রাম খমহেং। শোনা যায়, তিনি এ ধরণের একটি বিচার-ঘণ্টা বেঁধেছিলেন। অন্যদিকে, ব্রহ্মদেশের বিখ্যাত রাজা ছিলেন তুংগূ বংশোদ্ভূত অনকপেতলুন (১৬০৫-১৬২৮ খ্রি: )। তিনিও তাঁর রাজধানী পেগুনগরের রাজদরবারে বিচার-ঘণ্টা চালু করেছিলেন।
history of judgment bells in india
যে কোনও বিচারপ্রার্থী এই বড়ো ঘণ্টা বাজিয়ে রাজাকে জানাতে পারবেন বলে এ সম্পর্কে ব্রহ্ম ও তলৈঙ্ ভাষায় নির্দেশ লেখা ছিল। ভারত ও ব্রহ্মদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং এটি তার প্রভাবের ফল। পরবর্তীকালে ভারতের বিচার-ঘণ্টা বাঁধার রীতি অনুসরণ করেছিলেন মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর (১৬০৫-১৬২৭ খ্রি: )। জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনী "তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী"-তে উল্লেখ রয়েছে, ত্রিশ গজ লম্বা খাঁটি সোণার শেকলে বাঁধা ছিল ষাটটি ঘণ্টা। শেকলের একটি দিক আটকানো ছিল আগ্রা দুর্গের প্রাচীরে এবং অন্য প্রান্তটা যমুনা তীরে একটি পাথরের স্তম্ভের গায়ে।
history of judgment bells in india
এছাড়া গোলাম হোসেন রচিত "সিয়ার-উল্-মুতাক্ষরীণ" গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ১৭২১ খ্রিস্টাব্দে জাহাঙ্গীরের অনুকরণে মোগল সম্রাট মুহম্মদ শাহ (১৭১৯-১৭৪৮ খ্রি: ) এই ধরণের বিচার-ঘণ্টা প্রচলন করেছিলেন। কোনো অত‍্যাচারিত ব‍্যক্তি দুর্গের ভেতরে ঢুকতে বাধা পেলে সে শেকল টেনে ঘণ্টা বাজিয়ে বাদশাহকে জানাতে পারতো। এরপর বাদশাহ বিচারপ্রার্থীকে ডাকিয়ে তার সমস্যার সমাধান করে দিতেন।
অনেকে বলেন, ভারতে বিচার-ঘণ্টা প্রথা মুসলমান আমলে চালু হয়েছিল। কিন্তু ভারতে মুসলমান শাসনের বহু আগে থেকেই ন‍্যায় বিচারের জন্য বিচার-ঘণ্টা প্রচলিত ছিল। সুতরাং, বলা যায়, বিচার-ঘণ্টা প্রচলনের পিছনে রয়েছে প্রাচীন ভারতীয় রাজাদের অবদান। এ লেখার শুরুতেই তার প্রমাণ দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র:
1) "The Chain of Justice", Indian Culture, Calcutta, Vol. VII, 1940, PP-1-2. by H.C.Roychowdury.
2) Studies in the Political and Administrative Systems in Ancient and Medieval India, 1974, PP-41-44 by D.C. Sircar.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.