ছোট্ট ঘটনার তকমা দিয়ে চেপে দেওয়া হয়েছে ইতিহাসের পাতায়। কিন্তু সত্য যে চাপা থাকে না, তার প্রমাণ উত্তর প্রদেশের চৌরিচৌরা। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, চৌরিচৌরা ছিল জনগণের স্বত: স্ফূর্ত আন্দোলন। ঘটনার একশো বছর পর সম্মানিত হলেন চৌরিচৌরার শহীদরা। কিন্তু কি ঘটেছিল চৌরিচৌরায়? জানতে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে ইংরেজি ১৯২২ সালের ৫ ই ফেব্রুয়ারিতে। দেশে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন গান্ধী। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মন বুঝে নিজের আন্দোলনকে বরাবর সেদিকেই পরিচালিত করে এসেছেন গান্ধী। দেশের মানুষকে বোঝাতেই কি গান্ধী ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, বিষয়টি রীতিমতো বিতর্কিত। তবে আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল দেশ। উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার এক অখ্যাত গ্রাম "চৌরিচৌরা।" সেদিন ছিল হাটবার। বহু মানুষের ভিড়ে সরগরম এলাকা। কিছু সত্যাগ্রহী আন্দোলনের জন্য হাটে দু-এক পয়সা সাহায্য ভিক্ষা করছিলেন। মানুষজন দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে বাগড়া দেয় ব্রিটিশ পুলিশ। হাটে সাহায্য তোলা যাবে না।
এর মধ্যে ১৯২২-এর ২ রা ফেব্রুয়ারি স্থানীয় বাজারে মাংসের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করেও একপ্রস্থ ঝামেলা বাঁধে পুলিশের সঙ্গে সত্যাগ্রহীদের। পুলিশ সবাইকে লাঠিপেটা করে। কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর ধৃতদের মুক্তির দাবিতে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় থানায় সত্যাগ্রহী নেতাদের সঙ্গে পুলিশের মিটমাট হয়ে যায়। যে যার বাড়ির দিকে পা বাড়াতেই দারোগার নির্দেশে চলে গুলি। এমনকি, সেপাইদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও শুধুমাত্র দারোগার নির্দেশে এই গুলি চলেছিল সেদিন। ঘটনাস্থলেই বেশকিছু হতাহত হোন। এরপর পাল্টা রুখে দাঁড়ায় ক্ষিপ্ত জনতা। সেদিন ছিল ১৯২২-এর ৫ ই ফেব্রুয়ারি। জনতার তাড়া খেয়ে পুলিশের দল পিঠটান দিয়ে স্থানীয় চৌরিচৌরা থানায় ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
রাগে উত্তেজিত জনতা আগুন লাগিয়ে দেয় থানায়। ১ জন দারোগাসহ ২২ জন কনস্টেবল আগুনে জ্যান্ত পুড়ে মারা যান। সেই সঙ্গে ৩ জন আন্দোলনকারীও প্রাণ হারান।"মর্মাহত" গান্ধী এরপর প্রত্যাহার করে নেন তাঁর আন্দোলন। এজন্য গান্ধী কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির অধিবেশনে "বারদৌলি" প্রস্তাব পেশ করে তা অনুমোদন করিয়ে নেন এবং অহিংস অসহযোগ আন্দোলন বিপথগামী হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু মাত্র কয়েকজন ব্যক্তিকে বাঁচাতে দেশের এক বিরাট অংশের মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবার পরেও গান্ধীর আন্দোলন কতটা অহিংস ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। গান্ধীর এই সিদ্ধান্তে হতাশ তখন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, লালা লাজপৎ রায়ের মতো প্রথম শ্রেণির কংগ্রেস নেতারা।
ক্ষুব্ধ নেতাজী সুভাষচন্দ্র মন্তব্য করলেন, এটি গান্ধীর "হিমালয়ান ব্লাণ্ডার!" শুধুমাত্র গান্ধীর সিদ্ধান্তের জন্যই স্বাধীনতার দরজায় পৌঁছেও সেদিন থেমে যেতে হয়েছিল দেশবাসীকে। তার প্রমাণ ধরা পড়েছে লুই ফিশারের পর্যবেক্ষণে।
তিনি জানাচ্ছেন, যেখানে গান্ধীর এক কথাতেই গোটা দেশ ফেটে পড়তে পারতো, কিন্তু সেই কথাটি আর বলা হলো না। নেতাজী সুভাষের অনুগত হিসেবে নিজেকে "সুভাষী" বলে পরিচয় দিতেন কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিক্রিয়া হলো, "মহাত্মাজী ভয়ানক ভুল করলেন। এই অবস্থায় আন্দোলন স্থগিত রাখা মানে টুঁটি টিপে আন্দোলনের অপমৃত্যু ঘটানো। ...সুন্দরবনে দাঁড়িয়ে শান্তির বাণী প্রচার করলে বাঘ ভাল্লুকের খুশি হওয়ারই কথা।"
কিন্তু গান্ধী তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ইচ্ছে তখন তাঁর কাছে মূল্যহীন। পরের দিন বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে ঘিরে ফেলে গোটা এলাকা। তারপর নির্বিচারে চলে অত্যাচার। কয়েকশো মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। ১০ জনকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। ২২৮ জনের বিরুদ্ধে রুজু হয় মামলা। মামলা চলাকালীন ৬ জনের মৃত্যু হয়।
দীর্ঘ আট মাস বিচার চলে। শেষে ১৯২৩-এর ৯ ই ফেব্রুয়ারি বিচারক মিস্টার হোমস ১৭২ জনকে ফাঁসির আদেশ দিলে ফের প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এর ফলে রায় বদলাতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। শেষে ১৯ জনের ফাঁসি, ১১০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ঘোষণা হয়।
না, এই কথাগুলি বিদ্যালয়ের ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে পাওয়া যায় না। প্রশ্নপত্রে চৌরিচৌরা নিয়ে বেশির ভাগ সময় সংক্ষিপ্ত টীকা লেখাতেই শেষ হয় এর গুরুত্ব। এ হেন চৌরিচৌরা আন্দোলনের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে নতুন করে সামনে এলো এর গুরুত্ব। সৌজন্যে অবশ্যই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১-এ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন চৌরিচৌরা শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে। সেখানে ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর উদ্যোগে চৌরিচৌরা স্মরণে উত্তর প্রদেশের ৭৫ টি জেলাতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই উপলক্ষে প্রকাশিত হয় একটি স্মারক ডাকটিকিট।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, চৌরিচৌরা ওয়াজ এ সেলফ-মোটিভেটেড্ স্ট্রাগল অব্ কমন্ পিওপল। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, থানায় আগুন দেওয়ার মধ্যেই চৌরিচৌরার ঘটনাকে আটকে রাখলে হবে না। বিরাট প্রভাব ছিল এর। বিভিন্ন কারণেই এই ঘটনাকে ছোট করে দেখানো হয়েছে। আমাদের তা ওভাবে দেখলে চলবে না। আগুন শুধুমাত্র থানাতেই লাগানো হয়নি, আগুন লেগেছিল মানুষের হৃদয়ে।
চৌরিচৌরার ঘটনায় শহীদদের কখনোই যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়নি। খুবই দুর্ভাগ্যজনক এটি। দেশের জন্য তাঁদের বলিদান উদ্বুদ্ধ করেছে সবাইকে, অথচ এই আত্মবলিদান সেভাবে জায়গা করে নিতে পারেনি ইতিহাসের পাতায়। শেষ পর্যন্ত দেরিতে হলেও চৌরিচৌরার শহীদরা আজ যথাযথ মর্যাদা পাচ্ছেন। তবে এতদিন এটিকে ছোট্ট ঘটনার তকমা দিয়ে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল কেন, তার কোনো সদুত্তর নেই। শতবর্ষ পরে চৌরিচৌরা জেগে উঠেছে এখন।
তথ্যসূত্র:
1) The Indian Struggle by Subhas Ch. Bose.
2) Gandhi and Chauri Chaura by Nishant Batsha, Intersections, Vol. 10, No.3, Autumn 2009, PP.28-41.
3) ওরা আকাশে জাগাতো ঝড়: শৈলেশ দে,
4) ভারতের স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, কোরক সাহিত্য পত্রিকা, প্রাক্ শারদ সংখ্যা ২০১৭.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
I am a history aficionado, wandering along the path in search of history, archaeology and folk culture. This journey is aimed at constructing an undiscussed chapter of the forgotten Bangla with the information obtained from field survey.