বলরাম হাড়ি, লোকমুখে "বলা হাড়ি।" এই বলরাম হাড়িকে জানতে আমাদের যেতে হবে খ্রিস্টিয় ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার মেহেরপুরের ভৈরব নদীর ঘাটে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশে।
ব্রাহ্মণের দল জানতে চাইলে, বলা হাড়ি কি আজকাল তাদের মতো পিতৃতর্পণ করছে নাকি? বলরাম জবাব দেয়, না, ঠাকুরমশাই। আমি আমার শাকের ক্ষেতে সেচন দিছি। অবাক ব্রাহ্মণের দল জানতে চায়, এখান থেকে জল কিভাবে তোর জমিতে যাচ্ছে? আকাশ পথে নাকি?
বলরাম বলেন, যেভাবে আপনাদের জল পিতৃপুরুষের কাছে যাচ্ছে, ঠিক সেভাবে আমার জল জমিতে যাচ্ছে। রীতিমতো অপমানিত ব্রাহ্মণের দল রেগে চলে গেলেন। বুক ফুলিয়ে বাড়ির পথ ধরলেন বলরাম। পরে অবশ্য মিথ্যে চুরির দায়ে বলরামকে গাঁ ছাড়তে হয়েছিল। আসছি সে কথায়। অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার এক ছোট্ট শহর মেহেরপুর। শহরের পশ্চিমদিকে ব্রাত্যজনগোষ্ঠীর বসবাস। এই অঞ্চলেই মালোপাড়ায় ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে জন্ম বলরামের। বাবা---গোবিন্দ হাঁড়ি, মা---গৌরমণি। সে সময় শুয়োর চরানো, লেঠেলগিরি, দারোয়ানগিরি ও ওষুধ হিসেবে গাছ-গাছড়ার শেকড়-বাকড় বিক্রি ছিল হাঁড়ি সম্প্রদায়ের জীবিকা।
বলরাম ছিলেন মেহেরপুরের ধনী পদ্মলোচন মল্লিকের বাড়ির দারোয়ান। একদিন সে বাড়ির গৃহদেবতার সব অলংকার চুরি হয়ে গেল। সন্দেহ হলো বলরামকে। গাছে বেঁধে রীতিমতো পেটানো হলো তাঁকে। এরপর গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হলো। এই অত্যাচারের জেরে বদলে গেল বলরামের ভাবগতিক। ব্রাত্য অত্যাচারিত বলরামের ভেতর থেকে জন্ম নিলো এক প্রতিবাদী বলরাম।
এরপর বেশ কয়েক বছর পর বলরাম যখন মেহেরপুরে ফিরে এলেন, তখন সম্পূর্ণ অন্য মানুষ। জটাজুটধারী সাত্ত্বিক এক সাধক চেহারার মানুষ। সাধু বলরাম আসন পাতলেন ভৈরব নদীর তীরে। ইতিমধ্যে মল্লিক বাড়ির অলংকার চোর ধরা পড়েছিল। এজন্য বলরামের কাছে অনুতপ্ত পদ্মলোচন মল্লিক। শেষে বলরামকে দিলেন জমি এবং সেই সঙ্গে টাকা। গড়ে উঠলো বলরামের মন্দির। তৈরি হলো বলরামের নতুন ধর্মমত, "বলা হাড়ির মত।" বলরাম হলেন "হাড়িরাম।" কৈবর্ত, বাগ্দী, বেদে, নম: শূদ্রের মতো সমাজের ব্রাত্যজনগোষ্ঠীর মানুষ দলে দলে বলরামের শিষ্য হয়ে গেল। সেই সঙ্গে জুটলো বেশ কিছু মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ, যাঁরা হাড়িরামকে বলেন, "হাড়িআল্লা।" প্রায় হাজার বিশেক মানুষ বলরামকে গুরু বলে স্বীকার করলো।
ব্রহ্ম মালোনী হলেন বলরামের সাধনসঙ্গিনী। বলরাম নিজের পরিচয় প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তিনি হলেন "হাড়িরাম।" এই "হাড়ি" কোনো জাতি নয়, শরীরের "হাড়", যা দিয়ে তৈরি মানুষের কাঠামো। এই হাড়ের যিনি স্রষ্টা, তিনিই হাড়িরাম। তার তত্ত্বকথা হলো, --- "হাড় হাড্ডি মণি মগজ গোস্ত পোস্ত গোড়তালি। এই আঠারো ছেপে আছেন আমার বলরামচন্দ্র হাড়ি। ।" দুই নাক, দুই কান, দুই চোখ মিলে ছয় এবং এক মুখ, এক নাভি, এক পায়ু ও এক উপস্থ (লিঙ্গ) সব মিলে বিধাতার দেওয়া দশ। আর তার সঙ্গে পিতার চার পদার্থ---হাড়, হাড্ডি (মজ্জা), মণি (বীর্য) ও মগজ। তার সঙ্গে মায়ের দেওয়া চার পদার্থ--- ত্বক, রক্ত, মাংস ও কেশ। সব মিলে মোট আঠারো মোকাম।
বলরাম নিজেকে বলেছিলেন, "রামদীন।" "রা" শব্দে পৃথিবী, "ম" শব্দে জীবের আশ্রয় এবং "দীন" শব্দে দীপ্তাকার। নদীয়া জেলার তেহট্ট থানার নিশ্চিন্তপুরে এক বেলগাছের তলায় হাড়িরামের একজোড়া খড়ম আছে।
ইংরেজি ১৯৮০ সালে, বাংলা ১২৯৭ সালের ৩০ শে অগ্রহায়ণ ৬৫ বছর বয়সে বলরামের জীবনাবসান হয়। বলরামপন্থীরা মানুষ ভজনা করেন, তাঁদের একমাত্র উপাস্য হাড়িরাম। কোনো দেবদবীর মূর্তিপুজো তাঁরা করেন না। এ হলো গৃহীর সাধনা। সাধনসঙ্গিনী নেই। নদীয়া জেলার তেহট্ট-১ ব্লকের নিশ্চিন্তপুরের তনু মণ্ডল ছিলেন বলরামের প্রথম শিষ্য। দেশভাগের আগে নদীয়ার মেহেরপুর ছিল একটি মহকুমা শহর। আশেপাশের গ্রামের লোকজন বিভিন্ন কাজে মেহেরপুর আসতো। এভাবেই নিশ্চিন্তপুরের তনু মণ্ডল এসেছিলেন। বলরামের ব্যক্তিত্ব বাকপটুতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁর শিষ্য হয়ে যান। তারপর ধীরে ধীরে এলাকার মৎস্যজীবী সমাজের লোকজন দীক্ষা নেন। এভাবেই তনু মণ্ডল, মহীন্দর, রামচন্দ্র দাস, জলধর, সদানন্দ, শ্রীমন্ত, রাজু ফকির এবং মেয়েদের মধ্যে নটু, দক্ষ ও জগো-র মাধ্যমে বলরামের মত ছড়িয়ে পড়ে ধরমপুর, সাহেবনগর, আরশিগঞ্জ, নাটনা, ধা'পাড়া, হাউলিয়া, গরীবপুর, পলাশীপাড়ায়।
এরপর দেশভাগের পর বলরামপন্থীরা দুই বাংলার বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে যান। একমাত্র চৈত্র মাসের চৈতি একাদশী তিথিতে অগ্রদ্বীপের বারুণির মেলায় সবাই মিলিত হতেন। এপার বাংলায় নদীয়ার তেহট্ট-১ ব্লকের নিশ্চিন্তপুর ও ওপার বাংলার মেহেরপুর এই দুটো জায়গায় রয়েছে বলরামের আসন। হাড়িরামের ধর্ম গৃহী ব্যক্তিদের ধর্ম।
বাংলার এইসব ব্রাত্যজনের গুরু বলরাম হাড়ি এভাবেই সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে স্বধর্মে ধরে রেখেছেন। তাঁর দলে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরাও এসেছেন। সমাজের রক্তচক্ষুকে অগ্রাহ্য করে, জাতপাতের বেড়া ভেঙে স্বধর্মী-বিধর্মীদের একসূত্রে গেঁথে এক সমাজ বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন যে বলরাম হাড়ি, আজও তাঁর পথ মানলে মানুষে মানুষে হানাহানি রক্তক্ষয় হয় না। তাই মানব প্রেমিক হাড়িরাম আজও প্রাসঙ্গিক এই মানবতা হারানোর দু: সময়ে। যখন বেশ কিছু মানুষ স্বধর্ম ছেড়ে বিধর্মী হয়, তখন স্বধর্মের আসনে বিধর্মীদের সামিল করাটা হাড়িরামের মতো ব্রাত্যজনের সাধকদের কাছে এক অনুসরণযোগ্য উদাহরণ বৈকি !
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
I am a history aficionado, wandering along the path in search of history, archaeology and folk culture. This journey is aimed at constructing an undiscussed chapter of the forgotten Bangla with the information obtained from field survey.