'রহস্যে রোজাবল'

History of India
rohosye rozabal

-সন্দীপন মন্ডল

পর্ব ১ - পদব্রজ

লাস্ট প্রায় সাত আট পূর্ণিমার কষ্টকর হাঁটা এবার শেষ হতে চলেছে, অল্প কদিন আগেই সিন্ধুনদও পেরিয়ে যাওয়া গেছে। সামনে অবশেষে জ্ঞানের ভূমি, ষোলটি মহাজনপদের সমৃদ্ধ ইতিহাস দিয়ে ঘেরা ভারতভূমি। তক্ষশীলা, নালন্দা, উদন্তপুরী, বিক্রমশীলার মতো বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে সভ্যতার আদিলগ্ন থেকে বর্তমানের ইতিহাসকে সযত্নে আজো ধরে রাখার চেষ্টা করেন যে দেশের পন্ডিতরা। যেখানে ভ্রমণ বা পাঠ নিতে যাওয়ার মতো সৌভাগ্য সবাই পায় না।
সামনেই সেই অজানা দেশ, ভেবেই মনটা খুশি হয়ে উঠলো ইয়ুজ আসিফের। মধ্যপ্রাচ্যের জুডা দেশে জীবনের প্রথম বারোটা বসন্ত পার করে আসা এই ঝকঝকে কিশোরের মনে অনেক প্রশ্নের রহস্য রয়েছে, যেগুলোর উত্তর জানতে তার এই অজানা দেশে পদার্পণ। তাই এই প্রাচ্য দেশে আসার তাগিদে সে কোনো উপায় না দেখে বেছে নিয়েছে বিখ্যাত রেশম সরণী ধরে এই দেশে বাণিজ্যে আসা পশ্চিমের ব্যবসায়ী দলকে।
এই ভূমিতে পা রাখার কিছুদিনের মধ্যেই তিব্বতের শুষ্ক উঁচুভূমির এক অখ্যাত স্থানে অল্পকাল আগেই প্রতিষ্ঠিত বৌদ্ধ মঠে ছাত্র হিসেবে নিজের জ্ঞান অর্জন শুরু করলো ইয়ুজ। বেশ কয়েক মাস এই জ্ঞান অর্জন চলে ইয়ুজের। ধীরে ধীরে পালি ভাষা শিখে নানা বৌদ্ধ শাস্ত্রে পারদর্শী হয়ে উঠতে লাগে সে। কিন্তু এখানেই তাকে থেমে গেলে তো চলবে না, তার লক্ষ্য তো সম্পূর্ণ অন্য। অতএব মঠের শিক্ষা সম্পূর্ণ করে মঠাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে একদিন আবার নতুন লক্ষ্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে ইয়ুজ।
প্রাচীন ভারতের রাস্তায় ধীরে ধীরে তার সামনে আসতে থাকে উজ্জয়িন, পাটলিপুত্র, নালন্দা। এক একটি প্রদেশের এক এক রকম আচার আচরণ, একেক রকম নিয়ম, একেক রকম মানুষ। সাথে সাথে শিক্ষার মূল ধারা এক থাকলেও শিক্ষা পদ্ধতি বদলাতে থাকে।
rohosye rozabal
সবই রপ্ত করতে থাকে ইয়ুজ। এই ভূমি কেন সোনাফলানো ভূমি হিসেবে পরিচিত সেটা উপলব্ধি করতে থাকে সে প্রতি পদে। পূর্ব ভারতে শিক্ষালাভ শেষ করে সে বেরিয়ে পড়ে মধ্য ভারতের কাশীনগরের দিকে। উদ্দেশ্য কাশীনগরের বিদ্বান সনাতন পন্ডিতদের কাছে থেকে কিছু জ্ঞান অর্জন করা। কাশীতে পৌঁছে অনেক সময় কাটিয়ে ফেলে ইয়ুজ সংস্কৃত ভাষায় লিখিত নানা শাস্ত্র সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করতে যার অনেকটা সময় অতিবাহিত হয় ভাষা শিখতে। এইসব শাস্ত্র তার দেশে কোনোভাবে পৌঁছানো সম্ভব নয়, অতএব এভাবেই নিজের দেশ ও দেশের মানুষের থেকে দূরে থেকে জ্ঞান অর্জন ছাড়া কিছু করার উপায় নেই তার কাছে আর।
কিন্তু কী এমন উদ্দেশ্য এই রহস্যময় তরুণের যে যখন তার বয়সী বাকি জুডাবাসীরা সংসার শুরু করার পর্যায়ে চলে যায় তখন ব্যবসায়ীদের সাথে মিশে সে এসে একা এই গোলার্ধের এই প্রান্তে এসে বসে এরকম জ্ঞান অর্জন করে চলেছে?
উত্তর জানতে হবে আরো কিছু বছর অপেক্ষা করতে হবে আমাদের। ইয়ুজ এতদিনে তার এই ভূমিতে থাকার মধ্যভাগ শেষ করে এসেছে, এবার শেষ কিছু বছরের কিছু পাঠলাভের পালা।
কাশীতে থাকা শেষ হয়ে আসার আগেই ইয়ুজ ভারতীয় দেবতা শ্রীকৃষ্ণের গীতা ও বাকী ভারতীয় সংস্কৃত শাস্ত্র ও বেদ সম্বন্ধে পারদর্শী হয়ে ওঠে। কাশীতে বিদ্বান গুরুর কাছে প্রয়োজনীয় শাস্ত্র পরীক্ষা দিয়ে সফল হয়ে সে বেরিয়ে পরে এই ভূমিতে তার শেষ লক্ষ্যের দিকে। কাশ্যপ মুনীর পদধূলি ধন্য কাশ্মীর উপত্যকায় তার এক রাজবংশের সাথে দেখা করার আছে।
কাশ্মীরে এসে মোহিত হয়ে যায় ইয়ুজ আসিফ। এটাই তো সেই স্বর্গ যা সে এতদিন কল্পনা করে এসেছে মাত্র। এই অসামান্য সুন্দর উপত্যকা, এই সুমিষ্ট আপেল বাগান, কয়েক পা এগোতেই পা ধুয়ে দেয় ঝর্ণার জল, সাথে ভদ্র নম্র ও সহজ সরল মানুষজন, এরকম একটা ভূমিকেই তো সে স্বর্গ হিসেবে কল্পনা করে এসেছিল এতদিন। ধীরে ধীরে সাতবাহন বংশের তৎকালীন প্রতাপশালী রাজার সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পায় ইয়ুজ। তাঁর রাজ্যে থেকে এই সমৃদ্ধ ভূমি থেকে পাঠ নেওয়া শেষ করে সে। অবশেষে ফিরে যায় নিজের দেশের দিকে, জীবনের আঠাশতম বসন্ত শেষে। কিন্তু, প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজের দেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় থেকে আবার এই ভূমিতে ফিরে আসে ইয়ুজ। এবার সাথে নিয়ে আসে মধ্যপ্রাচ্যের একদল পিছিয়ে থাকা উপজাতিদের।
rohosye rozabal
এই উপজাতিদের প্রধান কাজ ছিল পশু প্রতিপালন। পথিমধ্যে গান্ধার অঞ্চলে ইয়ুজ নিজের মাকেও হারিয়ে ফেলে। অবশেষে এই উপজাতির সাথেই ইয়ুজ নিজেও কাশ্মীরে বসবাস শুরু করে। রাজা গোপদত্তের কথা মেনে, সম্রাট অশোকের পুত্র সম্রাট জালৌকের আমলে নির্মিত শ্রী জেষ্ঠ্যেশ্বর দেবের মন্দির পুনর্নির্মাণ করতে সাহায্য করে রাজার প্রধান স্থাপতিকে। সাথে সাথে নিজের সাথে আসা মানুষদের শিক্ষা দিতে থাকে, সেই শিক্ষা যা একটু একটু করে এই মহান ভূমি তাঁর প্রতিটি সন্তান থেকে প্রতিটি আগন্তুকের মধ্যে সুপ্তভাবে সঞ্চার করে গেছে। মানবতার শিক্ষা, ভালোবাসার শিক্ষা, নির্দোষ এর পক্ষে থাকা ও অন্যায়ের সংহার করার শিক্ষা।
এরকম ভাবে পশু প্রতিপালনের মাধ্যমেই ইয়ুজ গড়ে তোলে কাশ্মীরে পওলগাম বা রাখালদের বাসস্থান ভূমি। ধীরে ধীরে আরো কিছু কাজে জড়িয়ে পড়ে ইয়ুজ, শীঘ্রই সেগুলোও জানা যাবে। আর বর্তমান ভারত আজ যে পহেলগাঁও এর নাম জানে সেটার মানে প্রথম গ্রাম না, সেটার মানে রাখালদের গ্রাম।
ইয়ুজ আর ফিরে যায়নি তার দেশ জুডিয়ায়, কারণ সে জানতো সে ফিরে গেলে তাকে হাতে পায়ে পেরেক পুঁতে ক্রুশে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে,
আবার, আগের বারের মতোই।
আজ্ঞে হ্যাঁ, আমি ‘তার’ কথাই বলেছি, কারণ ইয়ুজ আসিফ কথাটার বর্তমান গোদা বাংলার তর্জমা দাঁড়ায়,
‘যীশু-খৃস্ট’
rohosye rozabal
যীশুর জন্ম হিসেবে আমরা সব্বাই জানি জেরুজালেম নগরের বেথলেহেম নামের একটি জায়গার কথা। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞর মতে তার জন্ম বেথলেহেমে হলেও তার বাড়ি ছিল নাজারেথ শহরে। যে কারণে যীশুকে শুধু যীশু না বলে ‘নাজারেথ এর যীশু’ নামেও অনেক জায়গায় ডাকা হয়। তবে নাজারেথ ছিল তৎকালীন জুডা দেশের একদম বাইরে, যেখানে বেথলেহেম ছিল উত্তর জুডার সীমান্ত ঘেঁষে সেখানে নাজারেথ ছিল সীমান্ত পেরিয়ে অনেক দূরে, কাজেই যীশুর জন্ম বেথেলেহেমে হলেও নাজারেথ ও তৎসংলগ্ন এলাকাতে তার জীবনের একটা বিশাল অংশ কেটেছিল।
এইবার যদি আমরা যীশুর জন্মের সময়ের জেরুজালেমের ব্যাপারে খোঁজ নিই হলে জানতে পারব সেই সময়ে জেরুজালেম এর এক বিশাল অংশের মানুষের মধ্যে পাপকর্ম, ভেদাভেদ, চৌর্যবৃত্তি এবং নীচু মানসিকতা খুবই বেড়ে গেছিল। কিছু মতানুসারে ইহুদিদের এই চিত্রটা সত্য হলে এক হাজার বছর আগে শুরু হওয়া সমাজ যে খারাপ মানুষের হাতে পরে একদম গুরুত্বহীন হয়ে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। যীশুর দেশ সেটারও ব্যতিক্রম হয়নি।
জন্মের সময় বেথেলেহেমে যে মানবজাতির অন্যতম একজন প্রধান মাথা জন্ম নেবেন, সেটা বুঝতে পেরে সেই শহরে তিনজন দার্শনিক গিয়েছিলেন, তাঁরাই প্রথম জেরুজালেম বাসীকে বলেন যে এবার তাদের পাপমুক্তির সময় আসছে। সাধারণ আর পাঁচজন মানুষের মতোই যীশু খ্রিস্ট বেড়ে ওঠেন জেরুজালেমে। কিন্তু দেশের নানা ভুল সমাজ ব্যবস্থা ও নানারকম শোষণ দেখে তিনি উপলব্ধি করতে শুরু করেন যে দেশের মানুষদের নতুন ভাবে জীবন শুরু করার দিশা দেখাতে হবে।
বারো বছর বয়সের পর থেকে তিরিশ বছর বয়সের আগে অব্দি যীশু খ্রিস্ট কোথায় কীরূপে ছিলেন
rohosye rozabal
তাঁর কোনো খবর আজ অব্দি প্রমাণসহ কেউ দিতে পারেননি। কেউ বলেন তিনি ইংল্যান্ডের জঙ্গলে তপস্যা করেছেন সেই সময়ে, কেউ বলেন তিনি নাজারেথে সমুদ্রতীরে মৎস চাষ করতেন ইত্যাদি নানারকম কথাবার্তা। তবে ভারতবর্ষের উত্তরভাগের শক অঞ্চলের সীমান্তের একজন রাজা তাঁর নগর ভ্রমণকালে ইসামসিহ নামের একজনের দেখা পান, যার বয়স ছিল যথেষ্ট কম, চেহারা ছিল ফর্সা বা খানিকটা রোদেপোড়া বৈশিষ্ট্যযুক্ত ফর্সা চামড়ার, টিকালো নাক, এবং সাদা পোশাক। তাকে যখন রাজা জিজ্ঞেস করেন তিনি কে তখন রাজা উত্তর পান,
“আমি ঈশ্বরের পুত্র, আমার নাম ঈসা, তবে আমার জন্ম হয়েছে একজন কুমারীর গর্ভে, আমি পশ্চিমের এক ম্লেচ্ছদেশ থেকে এসেছি, এই দেশে জ্ঞান অর্জনে, যাতে আমার দেশের মানুষদের উদ্ধার করতে পারি”।
এই দেশে যীশু তার পঠনপাঠন সম্পূর্ণ করে ফের পাড়ি দেন জেরুজালেম, নিজের মানুষজনদের উদ্ধার করতে। সেখানে গিয়ে তিনি সফলভাবেই মানুষকে ভালোবাসার, মানুষের প্রতি ক্ষমা ও প্রেম দর্শানোর কথা প্রচার করেন। খুবই অল্প দিনের মধ্যেই তিনি নিজের দেশের হতভাগ্য পিছিয়ে থাকা মানুষজনদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ইহুদীদের জুডিজম বা জুডাইজম ছেড়ে প্রচুর মানুষ খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হতে লাগেন। ইহুদী একচ্ছত্রাধিকারের অবস্থা খর্ব হতে থাকে সমাজের নানা দিকে। ক্ষেপে ওঠে কট্টরপন্থীরা।
এরই ফলাফল হিসেবে নেমে আসে যীশুখ্রিস্টের ওপরে শাস্তি। ভারত থেকে নিজের দেশে পৌঁছনোর কিছু বছরের মধ্যেই তাকে হাতে ও পায়ে পেরেক বিদ্ধ করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ক্রুশে। প্রায় চার পাঁচ ঘণ্টা ঝুলে থাকার পরে দিন শেষ হয়ে এলে তাকে ক্রুশ থেকে নামিয়ে দেহে কিছু ভেষজ উপাদান মাখিয়ে তার পার্থিব দেহকে এক গুহায় লুকিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই প্রায় তিনদিন পরে বাইরে বেরোনোর সময় তার সাথে প্রথমেই দেখা হয় তার স্ত্রী বিশ্ববিখ্যাত মেরী ম্যাগডালেন বা ম্যাগডেলের মেরীর। তার সাহায্যে যীশু আশ্রয় নেন গ্যালিলি উপসাগরের তীরে গ্যালিলি নামেরই এক পাহাড়ের এলাকায়, দিনটি ছিল শুক্রবার। আর তার সমাধির ফলক সরিয়ে সমাধি খালি অবস্থায় দেখা যায় দুইদিন পরে রবিবার।
সমাধি ফাঁকা দেখে খ্রিস্টানরা রটিয়ে দেন যীশু সশরীরে স্বর্গারোহণ করেছেন আর ইহুদীরা খুবই স্বাভাবিকভাবে সেটা বিশ্বাস না করে মনে করতে থাকেন যীশু ফিরে আসবেন। এদিকে গ্যালিলি পাহাড়ি অঞ্চলে বসেও যীশু জেরুজালেমের উষ্ণতার আঁচ পাচ্ছিল। বুঝতে পারছিল তিনি ফিরলে তাকে আবার হত্যার চেষ্টা করা হবে। অগত্যা উপায় না দেখে বেশ কয়েকবছর নানা এলাকায় ভ্রমণ করে। মিশর থেকে শুরু করে দামাস্কস অব্দি নিশ্চত আশ্রয় খুঁজতে থাকে। অবশেষে তার আবার সেই ভারত ভূমির কথা মনে পড়ে। ফিরে আসে ভারতে।
কিন্তু ফেরার সময় যীশু একা ফেরেনি।
জেরুজালেমের হারিয়ে যাওয়া দশটি উপজাতি সাথে নিয়ে ফিরেছিল। সর্বশেষ উপজাতির সাথে সে নিজেও আসে ভারতে। কাশ্মীরের এক উপত্যকায় পওলগম নামে রাখালদের একটি গ্রাম প্রতিষ্ঠা করে। সেখানেই বহুদিন নিজের মানুষগুলির সাথে নিশ্চিন্তে বসবাস করে কালের নিয়মেই একদিন নিজের ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে যেতে সফল হয়। কাশ্মীরের খান-ই-ইয়ারে ‘রোজাবল’ নামের একটা জায়গায় এখনো ইয়ুজ আসিফ বা যীশু খ্রিস্টের সমাধি রাখা রয়েছে।

পর্ব ৩ - পরিশিষ্ট-ক

আপনাদের এর আগে পড়িয়েছি যীশু খ্রিস্ট কীভাবে বিশাল লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে এই দেশে এসে শিক্ষালাভ ও মানবতার বাণী লাভ করেছে নানা জায়গায়। কিভাবে যীশু জেরুজালেমকে পাপ থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে পাড়ি দিয়েছে তিন হাজার কিলোমিটার এরও বেশি পথ। অনেকেই হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন দাবীগুলো। স্বাভাবিক। এবার আপনাদের জানাব কোন কোন তথ্যগুলোর মাধ্যমে এই দাবী উঠে আসে।
যীশু খ্রিস্টের জীবন ও বাণীর সবথেকে পুরোনো তথ্যগুলো যেখানে সংকলিত হয়ে আছে সেটি হলো ওল্ড টেস্টামেন্ট। হ্যাঁ, নিউ টেস্টামেন্ট সৃষ্টি করা হয়েছিল যীশুর জন্মের প্রায় তিন শতাব্দী পরে 325 খ্রিস্টাব্দের আশেপাশে। তাই সেটিতে যে তথ্যের বিকৃতি হতেই পারে সেটাই সবথেকে স্বাভাবিক। তা এই ওল্ড টেস্টামেন্ট কিন্তু যীশুর বারো থেকে তিরিশ বছর বয়স অব্দি জীবনের ব্যাপারে চুপ। অনেক ঐতিহাসিক বলেন যীশু সেই সময়ে ইংল্যান্ডে কাটিয়েছেন, কেউ বলেন উত্তর আমেরিকাতে কাটিয়েছেন।
●কিন্তু এত বড় একজন সাধক কীকরে সমুদ্র পেরিয়ে উত্তর আমেরিকা গেলেন বা ইংল্যান্ডে থাকলেও কোনো প্রমাণ কোথায় সেটার, সেই ব্যাপারে সমস্ত খ্রিস্টান গ্রন্থই বরাবরই নিশ্চুপ থেকেছে। কেন?
কিন্তু অপর দিকে যদি দেখি এই ভারত ভূমিতে, তাহলে কী কী দেখতে পাই, আসুন সেগুলো দেখে নেওয়া যাক। যদি ষোড়শ মহাজনপদের ইতিহাস বাদ দিয়েও ভাবি, তবুও সবাই প্রথমেই যেটা ভুল করে সেটা হলো, সবাই ভাবে সেই সময়ে ভারত পাশ্চাত্য থেকে সম্পূর্ণ ভাবেই বিচ্ছিন্ন ছিল। এটি সর্বৈব ভুল কথা। ভারতকে ‘সোনে কে চিরিয়া’ বলার বহু বহু আগের রোম সাম্রাজ্যের কয়েন বা মুদ্রা দক্ষিণ ভারতের তৎকালীন বন্দর এলাকা থেকে পাওয়া গেছিল। কাজেই সেই সময়েও যে ভারত পৃথিবীর সাথে জল ও স্থল পথে যোগাযোগ রাখতো সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কাজেই যে কেউই আসতে পারতো এই পথে।
ভারতের লাদাখের দিকের হেমিস মঠ ও ওই এলাকারই আরেকটি প্রাচীন মঠে যে প্রাচীনতম ও গোপনতম পুঁথিগুলো রাখা রয়েছে তার মধ্যেও কয়েকটি পুঁথিতে একজন ‘ক্লান্ত বিধ্বস্ত অবস্থায় আসা বিদেশী সাদা চামড়া’ র মানুষের শুশ্রূষা ও পরে তাঁর পড়াশোনা করার কথা বলা রয়েছে। দুঃখের
rohosye rozabal
ব্যাপার আজ থেকে প্রায় দুশো বছরেরও বেশি আগে নিকোলাই নটভিচ নামের একজন অভিযাত্রী এই পুঁথি গুলো দেখা ও সেগুলোর ইংরেজি তর্জমা নোট করে রাখার শেষ সাক্ষী। পরে বাংলারই স্বামী অভেদানন্দও এই বিদেশীর ব্যাপারে খবরটি নিজে অনুসন্ধান করে কনফার্ম করেন।
একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিখ্যাত আঁকা ‘সালভাতোর মুন্ডি’ তে যীশুর ছবির সাথে গৌতম বুদ্ধের মূর্তির ভঙ্গিমার ভীষণ মিল পাওয়া যায়। (ওপরের ছবি)
একই ভাবে ইতালির রেভেনা শহরে প্রাপ্ত যীশুর একটি মোজাইক ছবিতেও একই মিল দেখা যায়।
কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে পাওয়া এই উদাহরণ গুলো কি শুধুই কাকতালীয় ব্যাপার?

● কেই বা ছিল সেই সাদা চামড়ার মানুষটি?

তিব্বতে প্রাপ্ত বৌদ্ধ গ্রন্থ কাঁচের আয়না বা ‘গ্লাস মিরর’ এর মধ্যে ‘ইয়েশু’ নামের একজন বিদেশীর শিক্ষালাভের বিবরণ পাওয়া যায়। তিব্বতের সাথে বরাবরই বৌদ্ধ সংস্কৃতি শিক্ষা এবং লাদেখের নিবিড় যোগাযোগ আছে।

● এই ইয়েশু আর ওপরের বিদেশী মানুষ কি একই? কে তিনি?

যীশুর দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার প্রমাণ আমরা কোথায় পাই সেটা বলি। প্রফেসর বর্তক যিনি খোদ ইউএসএর পত্রিকাতেই স্টিফেন হকিংয়ের বিভিন্ন বিজ্ঞানের কোটেশনকে সঠিকভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন বেদের সূত্র দিয়ে তিনি নিজে যীশুর ক্রুশ বিদ্ধ অবস্থায় বলা কথাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। যীশুর ক্রুশবিদ্ধ অবস্থার কথা ছিল “এলৈ এলৈ লাম সাবাকথানি” ধরনের কিছু শব্দগুচ্ছ। কিছু কিছু জায়গায় এগুলোকে গ্রীক শব্দগুচ্ছ বললেও সেগুলোর বর্তমান পাশ্চাত্য সাহিত্যের শব্দভান্ডারে কোনো ইতিহাস নেই। প্রফেসর বর্তকের মতে যীশুর দ্বারা উচ্চারিত আসল শব্দগুচ্ছ হলো “ইল্লে ইল্লে সাব্বিকা লামা থানি” এবং বর্তমান তামিলে এর অনুবাদ হলো “হে (ঈশ্বর) তুমি আমাকে এত কষ্ট কেন দিচ্ছ? ” এবং
rohosye rozabal
কষ্টের মুহূর্তে নিজের মাতৃভাষা না বলে বিদেশী ভাষা বলা একজন মানুষের পক্ষে তখনই সম্ভব যখন সে সাধনার মাধ্যমে জাগতিক দুঃখ কষ্টেও মানসিক ভাবে অবিচল থাকার বিদ্যা জানেন এবং নিজের অনুগামীদের সামনে নিজের শারীরিক কষ্ট ব্যক্ত করা এড়িয়ে যেতে চান।

● এছাড়া ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় একজন সাধক ভুল শব্দ বলবেন কেন?

একই ভাবে যীশুর জগন্নাথ ধামে পা রাখার কারণের প্রমাণ তখন পাওয়া যায় যখন আমরা জানতে পারি যে শ্রীক্ষেত্র বা পুরীতে একটি শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল 483 খ্রিস্টপূর্বাব্দে যা অনেক পরে জগন্নাথ মন্দিরের সাথে যুক্ত হয়ে ধর্মীয় ও শাস্ত্র শিক্ষাকেন্দ্র হয়ে যায়। আবার বিন্ধ্য পর্বতের সংলগ্ন অঞ্চলে প্রাপ্ত ‘নাথ নামাবলী’ নামের এক প্রাচীন পুঁথিতে আমরা ‘ঈশানাথ’ নামের একজন বিদ্যার্থীর পরিচয় পাই যে মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে পশ্চিম দিক থেকে এদেশে এসেছিল জ্ঞান অর্জন করতে।

● কে এই রহস্যময় ঈশানাথ? তার আর কোথাও কোনো উল্লেখ নেই কেন?

মঠে বৌদ্ধ শাস্ত্র চর্চা করার প্রমাণ হিসেবে আমরা খুঁজে পাই, ওল্ড টেস্টামেন্ট এর যীশুর বাণীগুলোর সাথে বুদ্ধের বাণীর ভীষণ মিল রয়েছে। যেমন, “বালির মধ্যে কেবল মূর্খরা বাড়ি বানায়” বা “অন্যের কাছে নিজের পাপকার্য স্বীকার করে একে অন্যের কাছে ক্ষমা চাও” বা “সূর্য সৎ এবং অসৎ দুজনকেই আলো প্রদান করে” এই বাণীগুলো বুদ্ধের এবং যীশুর উভয়ের মুখনিঃসৃত বাণীর মধ্যেই হুবহু রয়েছে। আরো বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, যদি ওল্ড টেস্টামেন্টের অন্যতম পুরাতন পুঁথিগুলো দেখা হয় তাহলে সেখানে একটা বইয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়, যার নাম হলো ‘ঘিদা’ (Gheeda) অথচ এই নামের কোনো প্রাচীন বই এর সন্ধান সমগ্র বিশ্বে পাওয়া যায় না। অথচ বৌদ্ধ পন্ডিতদের শাস্ত্রের মূল জ্ঞানটাও সেই সনাতন শাস্ত্র থেকেই পাওয়া।
● যদি যীশুর পৃথিবীতে আসার পরের সভ্যতাগুলোর মধ্যেও নানা রকম পার্থক্য থেকেই থাকে তাহলে যীশুর সময়ে দুটি ভিন্ন সংস্কৃতি ভিন্ন ধর্মের ভিন্ন ভাষার গ্রন্থের মধ্যে এই এত মিল সম্ভব কীকরে?
যীশুকে ক্রুশে ঝোলানোর সময়ে শুধু হাতে এবং পায়ে পেরেক পোঁতা হয়েছিল। বর্তমান দিনেও একজন মানুষের এভাবে মৃত্যু হতে একদিনের বেশি সময় লাগার কথা, বৈজ্ঞানিক মতে দুই থেকে পাঁচদিন অব্দি লাগতে পারে যদি ক্ষত নিজে থেকে কমতে থাকে। যীশুর সমস্ত ছবিতেই যীশুকে পেশীবহুল দেখানো হয়।
● আগের দিনের যে সময়ে মানুষ পশুর সাথে পাল্লা দিয়ে নিজের কাজ করতো, আগুন আর চাকা ছাড়া কিছুই আবিষ্কার করা হয়নি, তখনকার একজন শক্তিশালী মানুষের মাত্র আধ বেলারও কম সময়ে ক্রুশে ঝুলে মৃত্যু হয় যেতে পারে? এটা সত্যি?
● তাহলে যীশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়ার কিছুদিন পরেই ভক্তদের মাঝে যখন আসেন, তখন কেন ল্যুক অধ্যায়ের 24 নম্বর পর্বের 39 নম্বর স্তোত্রে তিনি বলেছেন “আমাকে ছুঁয়ে দেখো, এটি রক্তমাংসে গঠিত আমিই, কোনো আত্মা নই”?
● ক্রুশে বিদ্ধ হয়ে মারা গেলে কিছু মাস পরেই দামাস্কাসে সমুদ্রতীরে হুবহু যীশুর আদলে যাকে দেখার ব্যাপার লিপিবদ্ধ হয়ে আছে তিনি কে ছিলেন?

পর্ব ৪ - পরিশিষ্ট-খ (শেষ পর্ব)

আমাদের এখনো অনেক তথ্য পড়ার আছে, চলুন তাই সরাসরি বাকী উপলব্ধ তথ্যপ্রমাণে যাওয়া যাক।
962 খ্রিস্টাব্দের একটি বই ‘ইকমল উদ্দীন’ এবং 1500 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ‘রাজউৎ উসসফা’ নামের দুটি বইয়ে পরিষ্কার ভাবে ইয়ুজ আসিফের ক্রুশবিদ্ধ থেকে বেঁচে উঠে আফগানিস্তানের দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে।
● সেই সময়ে আফগানিস্তান মানে বড় বড় পাথরের শুষ্ক দেশ ছাড়া কিছুই না, যদি যীশু আফগানিস্তান অব্দি অগ্রসর হয়ে থাকেন তাহলে থেমেছিলেন কোথায়?
কথিত আছে পথের ক্লান্তি সহ্য না করতে পেরে মেরী এই আফগানিস্তানেই দেহত্যাগ করেন। যে স্থানে তিনি মারা যান সেই স্থানের নাম বর্তমানে ‘মুরী’ এবং জায়গাটি পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এবং সেই স্থানে ‘মায়ি মারি দা স্থান’ নামের একটি সমাধি কম্পাউন্ড রয়েছে যার কোনো ইতিহাস পাকিস্তান আফগানিস্তানের সাথে জড়িত কোনো ইতিহাস বইয়েই পাওয়া যায় না। সবথেকে বড় পয়েন্ট হলো এই মুরী নামের জায়গাটি এবটাবাদের দিকে অবস্থিত হওয়ার জন্য শ্রীনগরের ভীষণ কাছেই।
● যদি ঘটনাটা মিথ্যেই হয় তাহলে কে এই মারি বা মেরি নামের মহিলা? এঁর বড় সমাধি রইলেও জন্ম কর্ম ও মৃত্যুর ইতিহাসই বা কোথায়?
যীশু সবসময় নিজেকে ইজরায়েলের বা তৎকালীন জুডার ‘হারানো মেষদের পালক’ বলে অভিহিত করত। এখানে মেষ বলতে রূপক অর্থে সেখানে অত্যাচারিত উপজাতিদের ব্যাপারে বলা হয়েছে। তাই যখন সেখান থেকে চলে আসে বেরিয়ে, তখন তার সাথে সেইসব পিছিয়ে থাকা উপজাতির মানুষদের
rohosye rozabal
12টির মধ্যে 10টি উপজাতি তার সাথে ইজরায়েল ছেড়ে বেরিয়ে আসে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বর্তমান আফগানিস্তানের পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতিদের যদি আমরা দেখি তবে তাদের সাথে ইজরায়েলীদের মুখের গঠনের বেশ খানিকটা মিল পাই। আফগান যুদ্ধনেতা থেকে শুরু করে পাশতুন জাতি, প্রায় সবার মধ্যেই এই মিলটা দেখা যায়। এঁরা নিজেদের ‘বানি ইজরায়েলি’ বলে ডাকেন, অর্থাৎ ইজরায়েলি বাসিন্দা নন কিন্ত মনপ্রাণে ইজরায়েলের সাথে শেকড়ের সম্পর্ক যুক্ত।
● যদি ব্যাপারটা ভুলই হয় তাহলে যীশুর সাথে বেরিয়ে আসা সেই 10 টি উপজাতি গেল কোথায়?
যে কাশ্মীরে যীশুর বসবাস নিয়ে এত রহস্য রয়েছে, সেই কাশ্মীরেই ‘গুটলিবাগ’ নামের একটা জায়গায় কিছু মানুষ বসবাস করেন। এঁরা কাশ্মীরি মানুষ হলেও, বাকী সমস্ত কাশ্মীরি মানুষদের থেকে এঁদের জীবনযাত্রা আলাদা। এঁরা নিজেদেরই কাশ্মীরের বাকী মানুষদের থেকে আলাদা হিসেবে দাবী করেন এবং সেই 10টি ‘হারানো মেষ’ উপজাতিদের মধ্যে শেষতম উপজাতি হিসেবে নিজেদের দাবী করেন। অর্থাৎ আমাদের এই দেশেই ‘বানি ইজরায়েলি’ দের বাসস্থান আছে। তাদের সাথে শুধু ভাষাগত বা জীবনযাত্রার পার্থক্য রাখেন তাইই নয়, তাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক অব্দি রাখেন না। এই সম্পর্কে শুধু সাধারণ মানুষ নন, গুটলিবাগের প্রধান মৌলবী অব্দি একই দাবী রাখেন। এখানেই অনন্তনাগের একটি স্থানে ‘আসাই ঈসা’ অর্থাৎ ঈসা যে লাঠি নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এই দেশে এসেছিলেন সেই লাঠিটিও রাখা আছে বলা হয় ‘আস মুকাম’ নামের মসজিদে যে জায়গাটার অর্থ হলো ঈসার শান্তিপূর্ণ বাসস্থান।
● কেন এই মানুষদের এই আলাদা হয়ে থাকা ও একই ধর্ম হলেও সম্পূর্ণ আলাদা পরিচয় নিয়ে বাঁচা?
আর আশ মুকামের লাঠির রহস্যই বা কী?
আফগানিস্তান থেকে এই কাশ্মীর অব্দি সমস্ত বাণী ইজরায়েলি উপজাতিদের মধ্যে যেসব পদবী বা টাইটেল আছে সেগুলোর উচ্চারণ কোনো না কোনো দিক দিয়ে, ওল্ড টেস্টামেন্টের সময়ে জুডার বাসিন্দাদের পদবীর সাথে সামঞ্জস্য রাখে।
● দুটো ভিন্ন সভ্যতার মধ্যে কোনো রক্তের সম্পর্ক না তৈরি হলেও এটা কীকরে এমনিই সম্ভব?
যীশু শুধু কাশ্মীরে বসবাস করেছিলেন তাইই নয়, তিনি সেখানে বেশ কিছু তৎকালীন সর্বধর্মীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যে কারণে কনিষ্কের প্রচলিত বিভিন্ন মুদ্রার মধ্যে যেমন গৌতম বুদ্ধের সাথে মিল রেখে ‘বদ্দো (Boddo)’ নামের একটি নাম পাওয়া যায় ঠিক তেমনই ‘ইয়ুজ (Youz)’ হিসেবেও একটি নাম পাওয়া যায়। এছাড়া জ্যেষ্ঠেশ্বর মন্দির যেটিই বর্তমানে শংকরাচার্য মন্দির নামে পরিচিত, সেই মন্দিরের গায়ে খোদাই করা 1869 সালে জেমস কোল দ্বারা সর্বপ্রথম ফটোগ্রাফড লিপির ছবিতেও ইয়ুজ নামের একজন ব্যক্তির নাম রয়েছে, লেখা আছে “78AD সালে ইজরায়েলের পুত্র ইয়ুজ এই স্থানে এসেছিলেন”।
● কে এই ইয়ুজ? বারবার এর নাম কাশ্মীরে ছন্নছন্ন ভাবে উঠেই বা আসছে কেন?
রোজাবলের সমাধিকে খ্রিস্টানদের কারোর সমাধি হিসেবে মানতে অস্বীকার করেন স্থানীয় মুসলিমরা। তাই রোজাবলের সমাধি অনুসন্ধান করার জেনে নিজেকে যীশুর 59তম প্রজন্ম হিসেবে দাবী করা সুজান অলসন নামের একজন ইতিহাসবিদ মহিলা রোজাবলে এসে সমাধিক্ষেত্রে কাজ শুরু করতেই বিশ্বজুড়ে হৈচৈ শুরু হয় এবং এই হৈচৈ শুরু হওয়ার আগেই রোজাবলের সমাধির গোপন কক্ষটি সিল করে দেওয়া হয়। এই সমাধিতে দুজন শায়িত আছেন। একজন মুসলিম ব্যক্তি এবং আরেকজন সেই বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ইয়ুজ আসিফ। অদ্ভুত ব্যাপারটি হলো, মুসলিম ব্যক্তির শবদেহ উত্তর দক্ষিণ মুখে শোয়ানো আছে ইসলামিক রীতি মেনে, কিন্তু রোজাবলের কবরের এই গোপন কক্ষ যাঁরা নিজের চোখে দেখেছেন তাঁদের বয়ানেই আরেকটি শবদেহ রয়েছে পূর্ব পশ্চিম মতে শোয়ানো। এই ভাবে মৃতদেহ শুইয়ে রাখা ইসলামিক মতে অধার্মিক কাজ শুধু নয়, এই কাজটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধই।
একইসাথে এই রোজাবল সমাধিক্ষেত্রে একটি পাথরে ইয়ুজের পায়ের ছাপ রয়েছে, যেটিতেও দুটি ক্ষতচিহ্নের আদলে চিন্হ খোদাই করা রয়েছে। তার থেকেও বড় রহস্য হলো যে এই চিন্হদুটি দুই পায়ে একই জায়গায় নেই, চিন্হ দুটি তখনই একে অপরের ওপর সরলরেখায় পরে যখন একটি পাকে
rohosye rozabal
আরেকটি পায়ের ওপরে চাপানো হয় এবং তার মধ্যে দিয়ে কোনো সরু দন্ড পাশ করানো হয়।
● রোজাবলের সমাধিতে সেই বিতর্কিত শবদেহ কার যা
ইসলামে নিষিদ্ধ রীতি মেনে শোয়ানো আছে? কেনই বা এরকম করা হয়েছে?
● পায়ে খোদাই করা ক্ষতচিহ্নই বা এত অদ্ভুত কেন এবং সেটি কেবলমাত্র যীশুর মতো করে কেউ ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রেই মেলে কেন?
সাথে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আসে,
যীশুর জন্মের দিনে যে তিনজন মানুষ জেরুজালেমে উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁরা এসেছিলেন পূর্ব দিক হতে। এবার ইজরায়েলের থেকে একটি কাল্পনিক সরলরেখা যদি পূর্বে চীন অব্দি টানা হয়, সেটিতে অবস্থানকারী তৎকালীন একমাত্র সভ্যতা হলো ভারতভূমি এবং দক্ষিণ ভারতের নাড়ি ওরাকল পদ্ধতি মতে যীশুর জন্মের বছরে শীতকালে সত্যিই একটি দিন বিশেষ দিন ছিল।

● এই তিনজন রহস্যময় মানুষ আসলে কারা ছিলেন যাঁরা অলৌকিক উপায় জানতেন যে সেই সময়ে গ্যালিলি সমুদ্রের গা লাগোয়া একটি নগরে একজন বিশেষ সাধক জন্ম নেবে যার মাধ্যমে বিশ্বের ইতিহাস বদলানো শুরু হবে?
● এঁরা পূর্বের ঠিক কোন দেশ থেকে গেছিলেন?
● নানারকম সভ্যতার নানারকম জ্যোতিষ মতামত থাকতেও দক্ষিণ ভারতের নাড়ি পদ্ধতি মতে
rohosye rozabal
ওই সালেই বিশেষ একটি দিন এসেছিল কেন এবং তার সাথে কি এই তিনজন মানুষের ইজরায়েল পাড়ি দেওয়ার কোনো সম্পর্কই নেই?
● যীশুর জন্মের সময় জন্ম স্থানে প্রাচ্য থেকে এই তিনজন মানুষের যাওয়ার মধ্যে দিয়ে কি যীশুর জীবনের সাথে পূর্বের কোনো সভ্যতার যোগসূত্র তৈরি হয়েছিল?
● ভবিষ্য মহাপুরাণ নামের একটি পুঁথিতে সরাসরি ইসামসিহ নাম নিয়ে আসলে কার কথা বলে হয়েছে?
শেষে সবথেকে বড় যে প্রশ্নটি আসে,
প্রথম বিশ্বের দেশগুলির সমস্ত বড় বড় খ্রিস্টান সম্প্রদায় ও চার্চ ইয়ুজ আসিফের ভারতে আসার ব্যাপারে যীশুর সাথে এত মিল থাকার পরেও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ভীষণ নীরবতা পালন করে। নিজেরা যীশুর জীবনের মাঝের বারো বছর ও শেষ জীবনের কোনো প্রমাণসহ তথ্য ন দিতে পারলেও সময় বিশেষে এই যুক্তিকে তাচ্ছিল্য অব্দি করে দেয়।
■ কেন?
আরো অনেক রহস্যময় প্রশ্ন অনেক আছে, ইতিহাসের গর্ভে তার থেকেও বেশি অনেক কিছু হারিয়ে গেছে, আরো অনেক কিছু হারিয়ে যাওয়ার মুখে। জানিনা আদৌ কোনোদিন এই রহস্যের সমাধান হবে কিনা........
(সমাপ্ত)

সূত্র - ইন্টারনেট ও কিছু প্রাচীন পুঁথি (ছবি - অন্তর্জাল)

Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.