'অপরাজেয় বাংলা' ভাস্কর্য নির্মাণের ইতিহাস

Bangladesh
history of aparajeyo bangla sculpture
রাইজ়িং বেঙ্গল ঢাকা ব্যুরো: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথে যে প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিল, নিজ ছাত্র-শিক্ষকের রক্ত দিয়ে। আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন প্রাঙ্গনের সম্মুখে ঠিক যে স্থানে ‘অপরাজেয় বাংলা’ সেখানেই ছিল একদা ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকা একটি বটগাছ।
১৯৬৯ সালের ঐতিহাসিক ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের কেন্দ্রও ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বটতলা। ১৯৭১ সালের ২ রা মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলন হয়েছিল এই বটতলায়। পশ্চিম পাকিস্তানী বর্বর সেনাবাহিনীর ক্ষোভ থেকে সেই বটগাছটিও রেহাই পায়নি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। তারা স্বাধীনতার ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত এ গাছটি সমূলে উৎপাটন করেছিল। মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একই স্থানে নতুন একটি বটগাছের চারা রোপণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের পরম সুহৃদ সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি। কালক্রমে এই গাছটি মহীরুহ। ঐ প্রাঙ্গণে ছাত্র সমাজের সমাবেশ নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়। কখনও প্রতিবাদে আবার কখনও আনন্দ উৎসবে।
কিন্তু সমাবেশস্থলের নামে পরিবর্তন এসেছে বটতলা থেকে 'অপরাজেয় বাংলা'। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনন্য সাধারণ অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু মনোযোগী হয়। এ জন্য বটতলার অদূরে শিল্পী আবদুল লতিফের নকশায় নির্মিত হয় একটি ভাস্কর্য। কিন্তু রাতের আঁধারে কুচক্রীমহল এ ভাস্কর্যের ক্ষতি করে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বোস প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরী, ডাকসু ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব জামানসহ ডাকসু নেতৃবৃন্দ মজবুত ভিতের ওপর আরও আকর্ষণীয় করে নির্মাণে উদ্যোগী হউন।
এ কাজ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা হয় মুক্তিযোদ্ধা অভিনয় শিল্পী ও ডাকসু'র সাংস্কৃতিক সম্পাদক ম. হামিদের ওপর। সে সূত্রেই ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। ভাস্কর খালিদ প্রথমে মাটি দিয়ে মডেল তৈরি করেন, যা সেই পরিকল্পনার সাথে যুক্ত সবার পছন্দ হয়। বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা।
নির্ধারিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ডাকসু সমানভাবে এ অর্থ জোগান দেবে।
মডেলের মাটি কেনার জন্য সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদকে দেওয়া হয়েছিল ৩০০ টাকা। বঙ্গবন্ধুর সরকারের তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামানের কাছ থেকে সিমেন্ট কেনার অনুমতি নেয়া হয়। বালু ও পাথর আনা হয়েছিলো সিলেট থেকে।
১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে মডেল অনুসারে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আমাদের ‘জীবন্ত কিংবদন্তী’ প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, এই ভাস্কর্য নির্মাণে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেন। ভাস্কর আবদুল্লাহ খালিদ কাজ শুরুর কিছুদিন পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে চাকরি পান। ফলে নির্মাণ কাজে বিঘ্ন ঘটে। সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসেন তৎকালীন উপাচার্য আবদুল মতিন চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চিঠি লিখে আবদুল্লাহ খালিদের জন্য ছুটির ব্যবস্থা করেন। মাসে বরাদ্দ হয় মাত্র ৬০০ টাকা ভাতা। এই যৎসামান্য পারিশ্রমিকেই তিনি রাতদিন পরিশ্রম করেন।

"স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এবং সামরিক শাসকের কুনজর পড়েছিলো অপরাজেয় বাংলার উপর"

সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ কাজ ধরবার কিছুদিন পরেই ঘটে গেলো ইতিহাসের অন্যতম কালো অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অপরাজেয় বাংলার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপরে কাজ স্তিমিত হয়ে আসে। শহরের বুকে জায়গা করে নেয় বিধ্বংসী ট্যাংক। ইতিহাস বলে, একটা ট্যাংকের নল নাকি সবসময় অর্ধনির্মিত ঐ অপরাজেয় বাংলার দিকে তাক করা থাকতো।

পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে পাকিস্হানপন্থী ধর্মীয় লেবাস পরিহিত ফ্যানাটিকেরা রব তুললো, ভাস্কর্য ধ্বংস করা তাদের দায়িত্ব এবং সে লক্ষ্যে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র জামায়াতে ইসলামী এবং মুক্তিযুদ্ধকালে তাদের কুখ্যাত বাহিনী আলবদরের উত্তরসূরি সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির এ ভাস্কর্য ভেঙে ফেলতে জনমত সৃষ্টির জন্য ছাত্রছাত্রীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করে। ১৯৭৭ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাসে স্বাক্ষর সংগ্রহকালে তারা ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগ (জাসদ) সহ সকল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের প্রবল বাধার সম্মুখীন হয়।

পরবর্তীতে ছাত্রশিবিরের কর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা ধাওয়া করে এবং কয়েক জনকে গণধোলাই দিয়ে মুখে চুন কালি মেখে গলায় জুতার মালা পরিয়ে ক্যাম্পাস ঘোরানো হয়। পরদিন নির্মাণাধীন অপরাজেয় বাংলার সামনেই অনুষ্ঠিত হয় বিশাল বিক্ষোপ সমাবেশ। তৎকালীন সামরিক শাসক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পুলিশ বাহিনী ছাত্রশিবিরের পক্ষ নেয় এবং ক্যাম্পাসে পুলিশি হামলায় প্রতিবাদী অনেক সাধারন ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। গ্রেফতার করা হয় সে সময়ের ছাত্রনেতা ও বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাহিদুল বারীকে।
ছাত্র সমাজের এ সাহসী অবস্থান থেকে প্রমাণ হয়ে যায়, সামরিক স্বৈরশাসকদের পৃষ্ঠপোষকতা যতই থাকুক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অবিনাশী। এ আদর্শ ধ্বংসের ক্ষমতা কারও নেই। এ প্রেক্ষাপটে দাবি ওঠে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সমাপ্তির। ততদিনে সামরিক শাসকদের নির্দেশে ডাকসু ভেঁঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু নতুন উপাচার্য ড. ফজলুল হালিম চৌধুরী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদকে দায়িত্ব দেন শিল্পী আবদুল্লাহ খালিদের সহযোগিতায় নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার। তৎকালীন ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, যিনি ভাস্কর্য নির্মাণ কমিটিরও সদস্য ছিলেন নব উৎসাহে সাগ্রহে সাড়া দিলেন। চরম প্রতিকূল পরিবেশেও তাঁরা আন্তরিকভাবেই সহযোগিতা করেছিলেন। অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে, সে সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক সামরিক শাসকদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন এবং তারা অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ নানা অজুহাতে বিঘ্নিত করেছিল।
কিন্তু সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ কোনো অবস্থাতেই দমে যাওয়ার পাত্র ছিলেন না। তিনি আবার চট্টগ্রাম থেকে ছুটি নিয়ে ঢাকায় আসেন এবং নির্মানে কঠিন পরিশ্রম শুরু করেন। তখন তাঁর পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হয় প্রতি মাসে মাত্র ১৫০০ টাকা। এ পর্যায়ে প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এমন একজন দক্ষ রাজমিস্ত্রি দিয়েছিলেন, যিনি কারিগরি দিক থেকে জটিল এ শিল্পকর্ম নির্মাণ কাজের নকশা যত্নের সঙ্গে অনুসরণ করেন।
history of aparajeyo bangla sculpture
অপরাজেয় বাংলার মডেল যারা হয়েছিলেন, অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটিতে যে তিনজন মানুষকে দেখা যায়, তারা হলেন – ফার্স্টএইড বাক্স হাতে একজন সেবিকা, সময়ের প্রয়োজনে রাইফেল কাঁধে তুলে নেয়া গ্রীবা উঁচু করে ঋজু ভঙ্গিমায় গ্রামের টগবগে তরুন এবং দু’ হাতে রাইফেল ধরা আরেক শহুরে মুক্তিযোদ্ধা।
ফার্স্ট এইড বাক্স হাতে সেবিকার ভূমিকায় যিনি মডেল হয়েছিলেন, তিনি হলেন হাসিনা আহমেদ। অপরাজেয় বাংলার রাইফেল হাতে মূর্তির মডেল সৈয়দ হামিদ মকসুদ। তিনি ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। অপরাজেয় বাংলার মাঝের মূর্তিটি গ্রামের তরুন মডেল চারুকলার ছাত্র বদরুল আলম বেনু। তিনি শুধু একজন মডেলই ছিলেন না ছিলেন সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের একান্ত সহযোদ্ধা। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত সকল চড়াই উৎরাইতে শিল্পী আবদুল্লাহ খালিদের সাথে যে সর্বাত্মক ভাবে জড়িত ছিলেন তিনি হলেন তৎকালিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ডাকসু’ র সাংস্কৃতিক সম্পাদক ম. হামিদ।
স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশের সর্বত্র ‘নাই নাই’ রব। খাদ্যে ঘাটতি। যাতায়াত ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত। আমদানি নির্ভর দেশের জন্য বিপদ বহুগুণ বেড়ে যায়; বিশ্ববাজারে চাল, জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বিপুলভাবে বেড়ে যাওয়ায়। এ অবস্থায় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে প্রচার শুরু করেছিল মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা সব অর্থহীন।
বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের নেতৃত্ব প্রদানের জন্য বিশেষ মর্যাদার স্থানে অধিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নেতৃবৃন্দ এমনই এক সময়ে কলাভবনের সামনের বটতলার অদূরে এ ভাস্কর্য নির্মাণে উদ্যোগী হন। তাদের মনোভাব সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন শিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ।
অপরাজেয় বাংলা নির্মাণকালে দুটি বিষয় মনে রাখতে হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের আঘাত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘাতক স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বর্তমান নূর হোসেন চত্বর এলাকায় স্থাপিত এক ক্রীড়াবিদের কংক্রিটের ভাস্কর্য রাতের আঁধারে সমূলে উৎপাটন করে ফেলেছিল।
অপরাজেয় বাংলার প্রতিও তাদের কুনজর পড়েছিলো। এ কারণে নির্মাণ কাজের গতি বাড়ে; সাথে নির্মাণের ব্যয় বেড়ে গিয়েছিলো। কিন্তু কতটা বেড়েছিলো? সব কাজ শেষ হওয়ার পর দেখা গেলো, মোট ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা! এ ব্যয় অবিশ্বাস্যভাবে কম। আর এটা সম্ভব হয়েছে শিল্পী আবদুল্লাহ খালিদ ও তাঁর সহকর্মীদের আন্তরিকতার কারণে।

‘অপরাজেয় বাংলা’ নামটি প্রদানের কৃতিত্ব সে সময়ে দৈনিক বাংলার সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরীর। তিনি ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগের বিষয়ে দৈনিক বাংলায় একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন, যার শিরোনাম ছিল ‘অপরাজেয় বাংলা’। আমাদের গৌরবের স্মারক অপরাজেয় বাংলা’ র জন্য এ নামটিই সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়।

১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের অষ্টম বিজয় দিবসে একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা উদ্বোধন করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম এই প্রতীকটি।"অপরাজেয় বাংলা ছিলো, আছে এবং থাকবে...।" কবি-সংগীত শিল্পী কফিল আহমেদ যেমন বলেন, ‘অপরাজেয় বাংলা আমাদের চেতনার সেই জাগ্রত শিল্প যা এদেশের মানুষের সংগ্রামে প্রত্যয়ে সব সময় আমাদের জাগিয়ে রাখছে। যা কিনা এদেশের মানুষেরই মুক্তিপ্রাণ মুখ। সেই মুখ ঢেকে দেওয়া কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না, সেই মুখ আমাদের চোখের সামনে স্পষ্ট থাকুক।'
কলা ভবনের ঠিক সামনেই ত্রিকোণাকৃতির বেদিতে দাঁড়িয়ে আছে তিনজনের অবয়ব। একজন গ্রামীণ নারী ও দুজন পুরুষ। সর্বডানে থাকা কুচি দিয়ে শাড়ি পরা এক গ্রামীণ নারী। তিনি সেবিকা, কাঁধে ফার্স্টএইডের বক্স। যেনো বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধাদের সেবায় প্রাণপণে প্রস্তুত। যেখানেই যুদ্ধাহত মুক্তিসেনাদের খোঁজ পাবেন সেখানেই ছুটবেন। এই নারীর অবয়ব জানিয়ে দেয় ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসা নারীদের বীরত্বের কথা।
তার পাশে কাঁধে রাইফেলের বেল্ট ধরা, লুঙ্গি কাছা দেওয়া এক যুবক। যার ডানহাতে একটি গ্রেনেড। দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে যেনো একটুও দমে না তার পাঁ। শত্রু নির্মূল করতে জীবন উৎসর্গে যেনো তাঁর স্বর্গসুখ। তাঁর বামপাশে জিন্সপ্যান্ট পরা অপেক্ষাকৃত খর্বকায় শহুরে তরুণ। যার হাতে থ্রি-নট রাইফেল এবং চোখে-মুখে স্বাধীনতার দীপ্ত চেতনা।
এটাই ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাস্কর্য। যা দেখে প্রেরণা পায় লাখ লাখ তরুণ-তরুণী। সাহস যোগায় কথা বলার। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই তো মূল আন্দোলনের জ্বলন্ত ইতিহাস। কোথায় নেই তাদের ভূমিকা? এসব প্রেরণা যে ওই অপরাজেয় থেকেই আসে। সিমেন্ট, পাথরের টুকরো, বালি, ইস্পাত এবং লোহার রড দিয়ে তৈরি তিনজনের অবয়বে পুরো জাতির প্রতিনিধিত্ব করছে তাঁরা তিনজন।
ভাস্কর্যের সামনে আবেগি হয়ে একজন আরেক জনের ছবি তুলছেন। ‘অপরাজেয় বাংলা’ নিয়ে অনুভূতি জানিয়ে অনেকেই বলেন, ‘আমরা যাদের জন্য স্বাধীন দেশ পেয়েছি তাদের একটা চিত্র দেখার অনুভূতি বলে বুঝানো সম্ভব নয়। তাদের সেই ত্যাগের জন্য আজীবন স্মরণ করলেও শেষ হবার নয়।’
কষ্ট লাগে, “নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছেই ভাস্কর্য গুলোর প্রতি শ্রদ্ধা বা আবেগের ভাষা জানা নেই। তারা অনুভব করতে পারে না ৭১ এ আমাদের সাহসী বীরদের অদম্য চেতনা নিয়ে যুদ্ধ করার সময়কে। “‘অপরাজেয় বাংলা’ সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ সুদীর্ঘ সময় নিয়ে নির্মাণ করেছেন। মূলত শিক্ষার্থীদের গণদাবি থেকেই তৈরি হয়েছে। ছাত্র সংসদের চাওয়া থেকেই তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৬ ফুট বেদির উপর নির্মিত এ ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১২ ফুট এবং প্রশস্থতা ৮ ফুট ও ব্যাস ৬ ফুট। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মিত দেশের প্রথম ভাস্কর্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের সময় এই ভাস্কর্যের সঙ্গে ছবি তোলেন না, এমন গ্র্যাজুয়েট বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আমাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার স্বাক্ষী এই ‘অপরাজেয় বাংলা’ এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাকে ধারণ করে, নান্দনিক শোভা নিয়ে মাথা উঁচু করে। দেশের বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখতে স্থাপিত হয়েছে ভাস্কর্য। এসব ভাস্কর্য তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রাখছে।
অথচ হেফাজত উগ্র সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে আমাদের চেতনা দেশপ্রেমের প্রেরনার প্রতিক ভাস্কর্য ভেঁঙ্গে দিতে চায়!! বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের জাতীয় বীর প্রয়াত সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদের তৈরি ভাস্কর্যের মধ্যে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত মুরাল আবহমান বাংলা এবং ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান দপ্তরের সামনে অবস্থিত টেরাকোটার ভাস্কর্য উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তাঁর আরো কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ হল অঙ্কুর, অঙ্গীকার, ডলফিন এবং মা ও শিশু।
তাঁর কাজের জন্য সম্মাননা হিসেবে শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হউন।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.