পুরোনো নাম "মলমল।" পরে হয় "মসলিন।" বিশ্বের প্রথম "গ্লোবাল ব্র্যাণ্ড" এই মসলিন।
ব্রিটিশরা এদেশে তুলো গাছ লাগিয়ে চেষ্টা করেছিল মসলিন তৈরি করতে, পারে নি। কিছুতেই তারা এদেশের তাঁতিদের সঙ্গে দক্ষতায় পেরে উঠছিল না। বাংলার মসলিনের কাছে হেরে গিয়ে শেষে তাঁতিদের হাতের বুড়ো আঙুল কেটে দিয়েছিল। ছন্দের যাদুকর কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত চরকার গান গাইতে গিয়ে বাংলার মসলিনের কথা বলেছেন, ---
"চরকায় সম্পদ, চরকায় অন্ন। বাংলার চরকায় ঝলকায় স্বর্ণ। । বাংলার মসলিন বোগদাদ রোম চিন। কাঞ্চন তৌলেই কিনতেন একদিন। ।"
আগেই বলেছি, বেনিয়া ব্রিটিশরা নিজেদের দেশের তৈরি কাপড়ের বাজার ধরতে কেটে দিয়েছিল এদেশের তাঁতিদের হাতের বুড়ো আঙুল। বুড়ো আঙুলের যাদুতেই তৈরি হতো মসলিনের মতো সূক্ষ্ণ কাপড়। শোনা যায়, মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কন্যা একবার রাজদরবারে বকুনি খেয়েছিলেন আদুর গায়ে (? ) আসার জন্য।
উত্তরে শাহজাদি জানিয়েছিলেন, তিনি মোটেই আদুর গায়ে আসেন নি, সাত-সাতখানা কাপড় গায়ে জড়িয়ে এসেছেন! এতটাই সূক্ষ্ম ছিল বাংলার মসলিন। আংটির ভেতর দিয়ে এপার-ওপার করা যেতো আস্ত একটি মসলিন কাপড়। ভাঁজ করে রাখা যেতো শামুকের খোলের ভেতরে কিংবা দেশলাইয়ের বাক্সে।
আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে মিশরের ফ্যারাওদের মমির গায়েও পাওয়া গেছে বাংলার মসলিন। ভারতে আসা গ্রীক দূত মেগাস্থিনিস জানাচ্ছেন, সোণার কারুকাজ করা ও ফুলের নকশা তোলা উৎকৃষ্ট মানের মসলিন কাপড় পরতো ভারতীয়রা।
আবার "পেরিপ্লাস অব্ দ্য ইরিথিয়ান সি" থেকে ড: উইলিয়াম ভিনসেন্ট (১ম খণ্ড, ১৮০০) জানাচ্ছেন, সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের ছিল গাঙ্গেয় মসলিন।"পেরিপ্লাস" অনুসারে, মোটা মসলিনের নাম ছিল "মলোচিনা", মসৃণ ও চওড়া মসলিন "মোনাচি" এবং সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের যে মসলিন, তার নাম "গ্যাঞ্জেটিক্" অর্থাৎ "গঙ্গাজলী।"
মুর্শিদাবাদে জগৎ শেঠের বাড়িতে আংটির ভেতর দিয়ে চলাচল করতে পারে, এমন সূক্ষ্ম মসলিন আছে বলে জানা যায়। বাণভট্টের "হর্ষচরিত"-এ এক ধরণের দেশিয় রেশম বস্ত্রের উল্লেখ আছে, যার নাম ছিল "পৌণ্ড্রবাস।"
কৌটিল্যের "অর্থশাস্ত্র"-এ বঙ্গ ও পুণ্ড্র অঞ্চলের বিভিন্ন সূক্ষ্ম বস্ত্রের নাম আছে, যেমন---ক্ষৌম, দূ-কূল, পত্রোর্ণ ও কার্পাসী।
প্লিনি বলেছেন, মসলিনের ক্ষীণ আবরণের ফাঁকে রোমান সুন্দরীরা তাঁদের শরীরের বাঁকা রেখা প্রকাশ করতেন।
"মসলিন" নামের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রীক বণিকরা ভারতের মসুলিপট্টম বন্দর থেকে যে কাপড় কিনে নিয়ে যেতেন, তা মসলিন হিসেবে পরিচিত ছিল। এজন্য মসুলিপট্টম শহরটিকে "মাইসোলস্" (Maisolos) নামে ডাকা হতো।
হেনরি ইউলের হবসন জবসন অভিধান থেকে জানা যাচ্ছে, "মসূল" থেকেই এসেছে "মসলিন" নামটি।
মসুলিপট্টম অঞ্চলে মসলিনের কথা বলেছেন মার্কোপোলো। তিনি জানাচ্ছেন, ---
"The Muslin was famous for fine cotton textures. Sense as our word, quoting the Arabian Nights (Macnaghten's ed., (i). 176, and (ii), 159, in both of which the word indicates the material of a fine turban. (Burton, i, 211) translated 'Masul Stuff', and says it may mean either of "Mosul Fashion, or Muslin). The quotation from lves, as well as that from Marco Polo, seems to apply to a different texture from what we can muslin. 1298, ----"All the cloths of gold and silk that are called Mosolins are made in this country (Masul)"----Marco Polo, BK. i.
মসলিন তৈরির যে তুলো, সেই তুলোগাছের আদি নাম "ফুটি কার্পাস।" বৈজ্ঞানিক নাম---"গসিপিয়াম আরবোরিয়াম ভার নেগলেক্টা" ( Gossypiam Arboreum Var Neglecta)।
প্রায় ঊনিশশো প্রজাতির তুলোগাছ আছে, এর মধ্যে "ফুটি কার্পাস" একটি।
ফুটি কার্পাসের বৈশিষ্ট্য হলো--
১) সাধারণ তুলোগাছের পাতায় তিনটি করে আঙুল থাকে, কিন্তু ফুটির থাকে পাঁচটি।
২) গাছের কাণ্ড লালচে ধরণের।
৩) সাধারণ তুলোগাছের চেয়ে ফুটি গাছের উচ্চতা কম।
৪) সাধারণ তুলোগাছের তুলনায় তুলো কম হয় ফুটি গাছে।
৫) বেশির ভাগ তুলোগাছের ফল উপরদিকে মুখ করে থাকে, কিন্তু ফুটি গাছের তুলোর ফলের মুখ থাকে নিচের দিকে। এজন্য বৃষ্টিতে মসলিন তুলো নষ্ট হয় না।
৬) এই গাছ বছরে দু'বার ফল দেয়।
এবার দেখা যাক্, কোথায় কোথায় এই মসলিন তুলোর চাষ হতো। বতর্মান বাংলাদেশের মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীর ধারে এই ফুটি কার্পাসের চাষ হতো বলে জানা যায়। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ডেনিশ ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, বাংলার তাঁতিরা কোনোরকম যন্ত্র ছাড়াই মসলিন তৈরি করতেন।
বর্তমান বাংলাদেশের ভাওয়াল জঙ্গল পরিবেষ্টিত গাজীপুরের কাপাসিয়া অঞ্চল। কাপাসিয়ার পূর্ব নাম---তিতাবাড়ি।
পরবর্তী সময়ে মধ্যযুগে সোণারগাঁও এবং আরও পরে পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা বেষ্টিত ১, ৯৬০ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে ছিল ঢাকাই মসলিন তৈরির এলাকা।
মসলিনের তুলো উৎপাদনকারী ফুটি কার্পাসের তুলো থেকে ১৬ থেকে ৩০ বছরের মেয়েরা তাদের নরম আঙুল দিয়ে মিহি সুতো তৈরি করতো। আর এ কাজ হতো ভোরে ও বিকেলে।
৭০০ থেকে ৮০০ কাউণ্টের মিহি সুতো দিয়ে তৈরি হতো মসলিন। সুতোর কাউণ্ট যত বেশি, মসলিন সূক্ষ্ম হতো তত বেশি। আর মসলিন বুনতে দরকার হতো ২, ৫০০ থেকে ৩, ০০০ মাত্রার বিশেষ প্রজাতির বাঁশ দিয়ে তৈরি শানা। মসলিন তৈরির জন্য ঘরে আর্দ্রতা দরকার ছিল এবং সেজন্য তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হতো।
বাংলাদেশের অন্যতম বড়ো নদী মেঘনা। সমুদ্রের কাছাকাছি এটি। বর্ষায় দু'কুল ছাপিয়ে বয়ে যেতো। ফলে পলি জমতো দু'পাশে। আর এই পলি মাটিতেই ভালো ফুটি কার্পাস উৎপন্ন হতো। ১ বিঘে জমিতে ফুটি কার্পাস তুলো পাওয়া যেতো ৬ কেজি। প্রায় ১৭০ বছর পর বর্তমান বাংলাদেশের হাসিনা সরকার সেখানে ফের মসলিন তৈরি করতে পেরেছেন।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা সে দেশের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়কে মসলিন ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন এবং এজন্য গবেষকদের প্রয়োজনীয় সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তৈরি হয় একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। পুঁজি তখনও সুইডিশ গবেষক ক্যারোলাস লিনিয়াসের লেখা "স্পেসিস প্লান্টেরাম" ও আব্দুল করিমের লেখা "ঢাকাই মসলিন" জাতীয় কিছু বই।
এরপর গাছটি খুঁজে পেতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের এক ছাত্রকে দিয়ে একটি ছবি আঁকানো হয়। বিভিন্ন সংবাদপত্রে সেই ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক মাধ্যমেও বিষয়টির প্রচার করা হয়।
এরপর ২০১৭ সালের মার্চ মাসে গাজীপুরের কাপাসিয়া ও রাঙামাটি এলাকা থেকে ফুটি কার্পাস গাছের খবর আসে।
তারপর গবেষকরা তুলোর মোট ৩৮ টি প্রজাতির নমুনা সংগ্রহ করেন। ভারতের কলকাতার জাতীয় যাদুঘরেও তাঁরা আসেন। এখানে এসে জানতে পারেন, মুর্শিদাবাদে নতুন করে যে মসলিন তৈরি হচ্ছে, তার তুলো আসে দক্ষিণ ভারত থেকে এবং সেটি ততটা মোলায়েম নয়।
এরপর গবেষকদলটি পাড়ি দেন লণ্ডনে। সেখানকার ভিক্টোরিয়া অ্যাণ্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়ামে রাখা ঢাকাই মসলিনের ডি এন এ সিকুয়েন্স বের করা হয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশের কাপাসিয়া অঞ্চলের ফুটি কার্পাসের সঙ্গে মিল রয়েছে দেখা যায়। উৎসাহ বাড়ে গবেষকদের। তৈরি হয় সুতো কাটার নতুন চরকা। তৈরি করেন মঞ্জুরুল ইসলাম ও টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক আলীমুজ্জামান।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
I am a history aficionado, wandering along the path in search of history, archaeology and folk culture. This journey is aimed at constructing an undiscussed chapter of the forgotten Bangla with the information obtained from field survey.