বর্ণভেদ থেকে জাতিভেদ প্রথায় বহুধা বিভক্ত ভারতবাসী ও সংঘশক্তিহীন হিন্দু সমাজ
"সংখ্যাগরিষ্ঠ" বা " বিশাল হিন্দু সমাজ " শুধু কাগজ-কলমের একটি অসার কথামাত্র। দেশের একশো শতাংশ হিন্দু থেকে কমে প্রায় ৬৬ শতাংশে নেমে যাওয়াটাই এর প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট। এর পিছনে রয়েছে হিন্দুধর্মের স্বধর্মচ্যুতি, বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় কুসংস্কার আর বর্ণাশ্রম ধর্ম থেকে বিচ্যুত জাতিভেদ প্রথা।"হিন্দুধর্ম" বলতে এখানে সমাজ ব্যবস্থা বা বর্ণাশ্রম ধর্মের কথা বলা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে একসময় সরব হয়েছিলেন কাশীর বিদগ্ধ মনীষী ড: ভগবানদাস। তিনি কলকাতার হিন্দু মহাসভার অধিবেশনে হাজির হতে না পেরে অভ্যর্থনা কমিটির সম্পাদকের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন, কিন্তু সে চিঠি অধিবেশনে পাঠ করা হয়নি। সংবাদপত্রে বেরিয়েছিল বিষয়টা।
চিঠিতে ড: ভগবানদাস স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, "আমাকে যদি কেহ জিজ্ঞাসা করে, হিন্দু সমাজের এই অনৈক্য, বিশৃঙ্খলা এবং সঙ্ঘশক্তিহীনতার কারণ কি, তাহা হইলে আমি দ্বিধাহীনচিত্তে উত্তর দিব---প্রাচীন বর্ণাশ্রমধর্মকে বিকৃত করিয়া জাতিভেদে পরিণত করাই ইহার কারণ।"
বহু বিভিন্ন সংখ্যালঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে হিন্দু সমাজ বর্তমানে সংঘশক্তিহীন, ঐক্যহীন, পরস্পরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত একটি ক্ষয়িষ্ণু জাতি। পাঠক, এ পর্যন্ত পড়ে যদি মনে হয়, আত্মঘাতী হিন্দুর দু'গালে এটি সপাটে দু'চড়, তবে পড়া চালিয়ে যান। অন্যথায় ঈশ্বরের নামে দোহাই পেড়ে ভাগ্যের লিখন বলে এখানেই থেমে যান। কারণ, জেগে ঘুমানো " মানুষ" নামের জীবকে জাগানো অসাধ্য। তাহলে ফিরে আসি মূল বিষয়ে। হিন্দু সমাজের জাতিভেদ প্রথার বিষফল প্রসঙ্গে। শুরুটা হয়েছিল মহাভারত যুগ থেকেই।
প্রাচীন বর্ণাশ্রম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত ছিল গুণ ও কর্ম অনুসারে। যে ব্যক্তি যে কাজের যোগ্য, তাকে দেওয়া হতো সেই কাজের অধিকার। এটি বংশানুক্রমিক ছিল না এবং এজন্য কোনো বাঁধাধরা নিয়মের শাসনও ছিল না। সেজন্য ভারতের প্রাচীন বর্ণাশ্রম ধর্ম ছিল একটি স্বাভাবিক কর্মবিভাগ, যা বৃত্তির ওপরেই প্রতিষ্ঠিত ছিল।
কিন্তু কালক্রমে প্রাচীন বর্ণাশ্রম ধর্মের প্রচলিত প্রথা বিকৃত হয়ে তৈরি হলো "জাতিভেদ" প্রথা। এর ফলে কর্ম হয়ে গেল বংশানুক্রমিক এবং এক্ষেত্রে তখন আর গুণ বা যোগ্যতার কোনো মূল্য থাকলো না। এর ফলে নির্দিষ্ট হয়ে গেল, কোনো ব্রাহ্মণ যদি মূর্খ হয়, তবুও সে পুরোহিত হবে। দুর্বল, ভীরু, কাপুরুষ হলেও তার কৌলিক বৃত্তি হবে যুদ্ধ। ঠিক তেমনিই বাণিজ্য বুদ্ধিহীন বৈশ্যপুত্রকেই দিতে হবে অর্থনীতির অধিকার। এভাবেই বিভিন্ন বৃত্তিকে ঘিরে বংশানুক্রমিকভাবে জাতিভেদ প্রথার মধ্য দিয়ে তৈরি হলো প্রায় হাজার তিনেক স্বতন্ত্র জাতি, যারা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন এবং অবশ্যই মূল হিন্দু সমাজের থেকে সহানুভূতিহীন।
এর ফলে মুষ্টিমেয় মানুষের মধ্যে থেকে গেল শাসন কর্তৃত্ব, অন্যদিকে কমতে লাগলো যোগ্য লোকের সংখ্যা।
উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের দম্ভে নিচু স্তরের বৃহত্তর ব্রাত্য হিন্দু জনগোষ্ঠীর লোকজন সন্ত্রস্ত হয়ে থাকলো সব সময়। ব্রাত্যজনের ছায়া মাড়ালেও অশুদ্ধ হয়ে যেতে লাগলো উচ্চ বর্ণের মুষ্টিমেয় দাম্ভিক হিন্দু গোষ্ঠীর লোকজনের দেহ। আর এর ফলে শূদ্রদের মধ্যে আবার একটা বিভাজন করে তাদের "অন্ত্যজ" সম্প্রদায় আখ্যা দিয়ে শাস্ত্রে না থাকলেও তাদের দেশাচার ও লোকাচারে পঞ্চম বর্ণ বলে অভিহিত করা হলো।
কিন্তু জাতির বিশুদ্ধতা বজায় থাকলো না, বিভিন্ন জাতির মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কের ফলে তৈরি হলো বহু সংকর জাতির। যদিও সংকর জাতি ছিল নিন্দনীয়, তার প্রমাণ গীতায় বলা হচ্ছে, --- "সঙ্করো নরকায়ৈব কুলঘ্নানাং কুলস্যচ।"
কিন্তু বাস্তবে চার জাতি ভেঙে তৈরি হলো বহু জাতি। তার প্রমাণ হিসেবে আমরা ১৯৩১-এর আদমসুমারীতে এ দেশে ১৩৫ টি জাতির উল্লেখ পাই।
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, মহাভারতের সময় থেকেই ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় এই দুটি জাতির মধ্যে বৃত্তি বা পেশা অনেকটাই বংশানুক্রমিক হয়ে গিয়েছিল। দ্রোণাচার্য, কৃপাচার্য, অশ্বত্থামা, পরশুরামের মতো ব্যক্তিরা ব্রাহ্মণ হয়েও ক্ষত্রিয় বৃত্তি নিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা শেষ পর্যন্ত "ব্রাহ্মণ"-ই ছিলেন, "ক্ষত্রিয়" হোন নি। আবার বৈশ্য অধিরথের পালিত পুত্র কর্ণ ক্ষত্রিয় বৃত্তি নিলেও তিনি কিন্তু "ক্ষত্রিয়" হিসেবে স্বীকৃতি পাননি।
হিন্দু সমাজের বর্ণাশ্রম ধর্মের বিকৃত রূপ জাতিভেদের বিষময় ফল হলো, মূল হিন্দু সমাজ ভেঙে প্রায় দুই থেকে তিন হাজার বিভিন্ন হিন্দু সংখ্যালঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ের উৎপত্তি। আর এই সংখ্যালঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ের প্রায় সাত থেকে আট কোটি মানুষ গণ্য হয়েছেন অস্পৃশ্য ও অন্ত্যজ হিসেবে, যাঁরা নামে মাত্র হিন্দু সমাজে রয়েছেন। এর বাইরে আরও প্রায় সাত থেকে আট কোটি হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষ খ্রিস্টান ও মুসলমান হয়েছেন। এসবের বিষময় ফল হিসেবে হিন্দু সমাজে ক্রমাগত জাতি বিদ্বেষ বেড়েছে, অনৈক্য তৈরি হয়েছে, বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে, যা থেকে সতর্ক না হলে হিন্দুদের আগামী ভবিষ্যৎ শুধুই অন্ধকার।
বৈদিক আর্য ঋষিরা অনার্যদেরও মূল সমাজদেহে জড়িয়ে গোটা ব্যবস্থায় একটা সমন্বয়ের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু উত্তরকালে বর্ণভেদের বিষাক্ত পরিণামে তা ব্যর্থ হয়। আর তখন শতধা বিভক্ত হিন্দু সমাজ বিদেশি আক্রমণের মুখে পড়ে বিপর্যস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত ভারতের শতকরা একশো ভাগ হিন্দুর সংখ্যা কমে গিয়ে আজ প্রায় ৬৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
শ্রীচৈতন্যের ভক্তি আন্দোলন, নিত্যানন্দের চৈতন্যপ্রেম প্রচার, নিত্যানন্দ-পুত্র বীরভদ্রের অসম-মণিপুরের মতো পাহাড়ি জাতিদের হিন্দুধর্মে সামিল করা এবং আরও পরে স্বামী শ্রদ্ধানন্দের "শুদ্ধি আন্দোলন"-এর মাধ্যমে হিন্দু সমাজের ভেদ-বিভেদ গণ্ডি মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তারপর একসময় থেমে যায় তার রেশ এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজ ক্রমশ জাতিভেদে দীর্ণ হয়ে তৈরি হয় সংঘশক্তিহীন এক ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু সমাজ।
তথ্যসূত্র:
1) The Vedic Age: Dr. R.C. Majumder (Ed.), , London, 1951.
2) Socio-Economic Life of Indian in the Vedic Pperiod, (Calcutta, 1986): H.P. Chakraborty.
3) আর্য সভ্যতার সন্ধান: খগেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত (কলকাতা, ১৯৮৫).
4) হিন্দু সমাজের গড়ন: নির্মলকুমার বসু (কলকাতা, ১৯৪৯).
৫) ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু: প্রফুল্লকুমার সরকার, আনন্দ-হিন্দুস্থান প্রকাশনী, কলকাতা, তৃতীয় সংস্করণ, অক্টোবর, ১৯৭৫.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.