ওপার বাংলায় হিন্দু নিধন, এপার বাংলায় সরব রামকৃষ্ণ মিশন
এখন নীরব, কিন্তু একসময় ১৯৪৬-৪৭ সালে ওপার বাংলায় হিন্দু নিধন সম্পর্কে সরব হতে দেখা গিয়েছিল এপার বাংলার বেলুড় মঠের শ্রীরামকৃষ্ণ মিশনকে। স্বামী বিবেকানন্দের প্রতিষ্ঠিত পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার বেলুড় মঠ, শ্রীরামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী মাধবানন্দ মহারাজের সদর্থক ভূমিকার কথা আমরা আগের পর্বে আলোচনা করেছি।
ওপার বাংলায় হিন্দু নিধনের বিষয়ে শুধুমাত্র বিবৃতি দিয়েই থেমে থাকেননি তিনি, বিপন্ন হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ফের স্বধর্মে ফিরে আসার পথের দিশাও দেখিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে দেশের বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনের কাছ থেকে যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছিল, সে বিষয়েও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বেলুড় মঠের শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ।
জোর করে ধর্মান্তরকরণের মাধ্যমে সমাজে নতুন করে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, সে বিষয়েও দিশা দেখিয়েছেন শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন, বেলুড় মঠ। এ বিষয়ে বেলুড় মঠ, রামকৃষ্ণ মিশন থেকে "পূর্ববঙ্গ ও হিন্দুসমাজ" নামে ২০ পাতার একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন।
গ্রন্থের প্রচ্ছদে ছিল স্বামী বিবেকানন্দের ছবি। কলকাতা অদ্বৈত আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী পবিত্রানন্দের দ্বারা ১৩৫৩ বঙ্গাব্দের অঘ্রাণে এটি প্রকাশিত হয়েছিল। মুদ্রাকর হিসেবে নাম দেখা যাচ্ছে, কলকাতার ব্রজনাথ মিত্র লেনের "বোস প্রেস"-এর নগেন্দ্রনাথ হাজরা।
গ্রন্থটিতে রয়েছে "সমাজব্যবস্থাপক পণ্ডিতগণের নির্দেশ" শিরোনামে দুটি অধ্যায়।
এর মধ্যে দ্বিতীয় অধ্যায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ---
"...বর্তমান অত্যাচার-পীড়িত ও বলপূর্বক ধর্মান্তরিত জনসমূহের ও ধর্ষিতা নারীগণের হিন্দুত্ব অক্ষুন্ন আছে। বলপূর্বক বিবাহ হইয়া থাকিলেও তাহা শাস্ত্রদৃষ্টিতে বিবাহই নহে। তাহাদের সকলেই স্বসমাজে পূর্ববৎ স্বচ্ছন্দে অবস্থান করিতে পারিবেন, এ বিষয়ে কাহারও কোনও মতভেদ নেই---ইহা সকল ধর্মাচার্য, বিদ্বদ্বর্গ ও ব্রাহ্মণমণ্ডলী একবাক্যে উদঘোষিত করিয়াছেন।"
গ্রন্থটিতে পুরীর গোবর্ধন মঠের জগৎগুরু স্বামী যোগেশ্বর আনন্দতীর্থ, কামকোটী পীঠের জগৎগুরু শংকরাচার্য, গান্ধীজী, পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য, কাশীর পণ্ডিতসভার বিধান, গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মতের সপক্ষে নবদ্বীপ শ্রীশ্রীবিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির অন্যতম সভ্য হংসগোপাল গোস্বামী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মশাস্ত্র বিষয়ের অধ্যাপক পণ্ডিত কৃষ্ণগোপাল গোস্বামীর মূল্যবান মতামত তুলে ধরা হয়েছে। সকলেই একবাক্যে বলেছেন, ওপার বাংলায় জোর করে ধর্মান্তরিত হিন্দুদের পুনরায় স্বধর্মে ফিরে আসতে গেলে তাদের জন্য কোনো শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন নেই, এমনকি লাঞ্ছিতা হিন্দু নারীদের ক্ষেত্রেও একথা সমানভাবে প্রযোজ্য। তাঁরা প্রত্যেকেই প্রাচীন মনুস্মৃতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শাস্ত্রের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, জোর করে ধর্মান্তরকরণ অবৈধ এবং জোর করে বিধর্মীদের দ্বারা হিন্দু নারীর বিবাহ অসিদ্ধ।
আমরা নিচে একে একে মতামতগুলি তুলে ধরছি।
শুরু করি পুরীর গোবর্ধন মঠের জগৎগুরু স্বামী যোগেশ্বর আনন্দতীর্থ'র বক্তব্য দিয়ে। তিনি স্পষ্ট বলছেন, ---
"আমরা দৃঢ়তার সহিত ঘোষণা করিতেছি যে, বলপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণকে স্মৃতির বিধান অনুসারে কোন অবস্থাতেই ধর্মান্তর গ্রহণ বলা চলে না এবং জোরপূর্বক বিবাহ স্থায়ী বিবাহ বলিয়া গণ্য হইতে পারে না। পৃথিবীতে এমন কোন আইন নাই যদ্দ্বারা বলপূর্বক বিবাহকে সিদ্ধ বলিয়া গণ্য করা চলিতে পারে। একজন হিন্দুকে বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করিলেও তিনি হিন্দুই থাকিবেন---বলপূর্বক কেহ তাঁহাকে ধর্মান্তরিত করিতে পারে না।"
এরপর কামকোটী পীঠের জগৎগুরু শংকরাচার্য বলছেন, ---
"বলপূর্বক যে সকল হিন্দু ধর্মান্তরিত হইয়াছেন, তাঁহারা স্বধর্মচ্যুত হইয়াছেন বলিয়া বিবেচিত হইবেন না, অথবা যে সকল হিন্দু নারী অপহৃতা বা অপমানিতা হইয়াছেন, হিন্দু সমাজ তাঁহাদিগকে পরিত্যাগ করিতে পারিবেন না। এই সমস্ত ব্যক্তিকে সমাজে ফিরাইয়া আনিয়া আবার স্বস্থানে প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে।"
এ বিষয়ে "কাশী পণ্ডিতসভার বিধান" হচ্ছে, ---
"বারাণসীর পণ্ডিতদের প্রতিনিধিমণ্ডলী কাশী পণ্ডিতসভা বলিয়াছেন যে, বলপূর্বক ধর্মান্তরকরণ ও নারীদের সতীত্ব হরণে হিন্দুদের জাতিচ্যুতি হওয়ার আশংকা নাই। এইরূপ বিপদের সময় ভগবানের নাম জপ করিলেই শুদ্ধ হওয়া যায়। সমগ্র ভারতে কাশীর পণ্ডিতদের বিধানকে শ্রদ্ধা করা হয়।"
আরও বলা হয়, "নোয়াখালী ও অন্যত্র যে বর্বরতা ও অমানুষিক অত্যাচার চলিতেছে, পণ্ডিতসভা তাহার তীব্র নিন্দা ও দুর্গতদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানাইয়া বলিয়াছেন যে, ঐ দুর্বৃত্তদের প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করা এবং প্ররোচনাকারীদের কঠোর দণ্ড দেওয়া উচিত।"
এ বিষয়ে "গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মত" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ---
"শ্রীধাম নবদ্বীপে শ্রীশ্রীধামেশ্বর গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর শ্রীমন্দিরে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের এক সভা----
বলপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণ প্রভৃতি বর্বরোচিত কার্যের নিন্দা করিয়া ও উক্ত কার্যের পরিসমাপ্তি কামনা করিয়া নিম্নলিখিত মন্তব্য প্রকাশ করেন----
জীব মাত্রেই হরি ভজনে অধিকারী।
ধর্ম চিত্তের অভিরুচির উপর নির্ভর করে।
বলপূর্বক কেহ কাহাকেও ধর্মান্তরিত করিতে পারে না।
নোয়াখালী, ত্রিপুরা (পূর্ববঙ্গের একটি জেলা) প্রভৃতি স্থানে অনেকে বলপূর্বক ধর্মান্তরিত হওয়ায় বিমর্ষ হইয়াছেন। তাঁহাদের দু: খে দু: খী হইয়া ও তাঁহাদিগকে সান্ত্বনা দিবার নিমিত্ত শ্রীশ্রীবিষ্ণুপ্রিয়া সমিতি জানাইতেছেন যে, কোনরূপ শুদ্ধি ব্যতিতই ধর্মান্তরিত সকলকে তাঁহারা সাদরে ও সাগ্রহে ক্রোড় দিতে প্রস্তুত আছেন।
----ইতি---
শ্রীশ্রীবিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির পক্ষে অন্যতম সভ্য
হংসগোপাল গোস্বামী।"
এ বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মশাস্ত্র বিষয়ের অধ্যাপক পণ্ডিত কৃষ্ণগোপাল গোস্বামী জানাচ্ছেন, ---
"বলপূর্বক কাহাকেও ধর্মান্তরিত করিলে সে তজ্জন্য স্বধর্মচ্যুত হয় না, কারণ মনুস্মৃতিতে আছে, 'বলপূর্বক দান, বলপূর্বক উপভোগ, বলপূর্বক লিখন এবং অপর যাহা কিছু বলপূর্বক করা হয় তৎ সমস্তই মনুর মতে অসিদ্ধ।'
এতদ্ব্যতীত বলপূর্বক ধর্ষিতা নারীগণকে পরিবারে ফিরাইয়া লইবার বিধান অত্রিস্মৃতিতে আছে, সম্পূর্ণ অনিচ্ছা সত্ত্বেও যদি কোন নারী ছলে, বলে বা কৌশলে ধর্ষিতা হয়, তবে ঐ নারীর পাপস্পর্শ হয় না এবং সে পরিত্যক্তাও হইতে পারে না, কারণ ঐ কার্যে তাহার অনুমোদন ছিল না।"
১৯৪৬-৪৭-এ শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন, বেলুড় মঠ এবং আজকের এই সময়ের তফাৎ অনেকটাই। গঙ্গা দিয়ে বয়ে যাওয়া জলের যেমন খোঁজ নেই, তেমনি কোথায় যেন চাপা পড়ে গিয়েছে মঠের সেদিনের সদর্থক ভূমিকার কথা, কে তাঁর খোঁজ রাখে?
মঠ-মিশনের অন্দরে বহুল প্রচলিত বাণী শোনা যায় আজও, "উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত: , প্রাপ্য বরাণ নিবোধত: ।"
কিন্তু মঠ-মিশনের সন্ন্যাসীরাই কি জেগে আছেন?
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.