আর্য-অনার্য দ্বন্দ্ব ও বিধর্মী শাসকের তৈরি মিথ্যা শাস্ত্রের শাসনে বিপন্ন আমরা

History of India
aryan non aryan conflict and we are endangered by the rule of false scriptures made by infidel rulers
বেদ-পুরাণ-রামায়ণ-মহাভারতের মধ্যে আর্য সভ‍্যতার যেসব ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে, অনেক দেশীয় ইতিহাসবিদ্ তা থেকে তথ্য না নিয়ে শুধুমাত্র আর্য-অনার্য তত্ত্ব নিয়েই আগ্রহী হোন বেশি। এদেশের সবকিছুকেই তাঁরা আর্য-অনার্যের ছাঁচে ঢেলে বিচার করতে চান। আর এজন্য দেশীয় গ্রন্থের পাতায় লুকিয়ে থাকা ইতিহাসের উপাদান তাঁদের কাছে ব্রাত্যই থেকে যায়। তাঁরা আর্য সভ‍্যতা খুঁজতে হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো চলে যান, কিন্তু বাংলায় যে প্রকৃত আর্য সভ‍্যতার সূতিকাগারের নিদর্শণ রয়েছে, তার খোঁজ করেন না। অথচ বাস্তবে দেখা যায়, পৌরাণিক তথ্যের সঙ্গে ভারতের রাজপুত কাহিনী ও অন‍্যান‍্য বহু বিষয়ের মিল রয়েছে।

আজকের লেখায় ইতিহাসের খোঁজে সেই ব্রাত‍্য বাংলার পথে আমাদের যাত্রা। আসলে আমাদের দেশে পণ্ডিতদের লুকোচুরিও কিছু কম নয়। যেমন, নেপালের রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা পৃথ্বীনারায়ণের পিতা উদয়নারায়ণ ছিলেন বাংলার পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের প্রপৌত্র। গোপালের পুত্র বাকপালের বংশধর তিনি। বারেন্দ্রীর মধ্যে রাজশাহীর শেষ স্বাধীন রাজাও ছিলেন এই উদয়নারায়ণ। উদয়নারায়ণের নামের সঙ্গে "পাল" শব্দটি যুক্ত নেই, তাই এই বিভ্রান্তি। ১৭১২ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলি খানসহ বিভিন্ন এদেশীয় গোষ্ঠীর সংঘবদ্ধ আক্রমণের ফলে উদয়নারায়ণ সৈন্য-সামন্তসহ নেপালে চলে যান। সঙ্গে নিয়ে যান পালরাজাদের যাবতীয় গ্রন্থাবলী ও দলিলপত্র।

এই উদয়নারায়ণের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র পৃথ্বীনারায়ণ ১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দে নেওয়ারদের কাছ থেকে নেপাল রাজ‍্য দখল করেন এবং নেপালের স্বাধীন রাজা হোন। এরপর ব্রিটিশদের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পেরে তাঁদের করদ রাজা হিসেবে পরিচিত হোন। পরে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নেপালের সৈন্যরা অংশ নিয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায় এবং এজন্য ব্রিটিশ সরকার নেপালরাজকে স্বাধীন রাজা বলে ঘোষণা করেন। উদয়নারায়ণ বাংলা থেকে নেপালে যাবার সময় নিজেদের পালবংশের যেসব পুঁথিপত্র সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন, পরবর্তীকালে পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজদরবারে গিয়ে সেসব পুঁথিপত্র দেখতে পান। তিনি এরপর হাতে লেখা ৮০০ টি সংস্কৃত ও বাংলা পুঁথির তালিকা তৈরি করেন এবং লর্ড কার্জনের মারফৎ সেগুলি নিয়ে আসেন। এর মধ্যে লর্ড কার্জন সন্ধ্যাকর নন্দীর "রামচরিত" ও চর্যাপদ ছাড়া বাকি সবগুলোই ইংল্যাণ্ডের গ্রন্থাগারে পাঠিয়ে দেন। পরে পড়ে থাকা চর্যাপদের পুঁথি থেকে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী হাজার বছরের বৌদ্ধগান ও দোঁহা প্রকাশ করেন।
এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দেশের এতসব মূল্যবান পুঁথিপত্র নিজের দেশের কোনো গ্রন্থাগারে না দিয়ে লর্ড কার্জনের হাতে তুলে দিলেন কেন? ওইসব পুঁথিপত্র থাকলে কি বাংলার ইতিহাস সমৃদ্ধ হতো না? আসলে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী পালরাজাদের বৌদ্ধ প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। অথচ বাংলার পালরাজারা সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলেই বর্তমানে জানা যাচ্ছে। আরও একটি মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে, পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালরাজ পৃথ্বীনারায়ণের পাল বংশোদ্ভূত পিতৃ পরিচয় গোপন করে ব্রিটিশ সাংবাদিক পার্সিভ‍্যাল ল‍্যাংডনকে দিয়ে নেপালের ইতিহাস সংকলন করিয়েছিলেন। এছাড়া "পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর অনুমান, এক সময় দ্রাবিড় জাতি মেদিনীপুর জেলার তাম্রলিপ্ত বন্দরে নগর প্রতিষ্ঠা করেছিল।"
(---তাম্রলিপ্তের কথা: বিপ্লব মাজি )
কিন্তু কথা হলো, তাম্রলিপ্তের মতো এক প্রাচীন উন্নত সভ‍্যতার পত্তনকারীরা তো আর্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। বাঙালির বাংলা কেন "দ্রাবিড়" হবে? আসলে এদেশে জাতিভেদকে আরও তীব্র করে তুলতে আর্য-অনার্য তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে দ্রাবিড় তত্ত্ব আমদানি করা হয়েছে। ভারতের আর্য সভ‍্যতার মূল নির্মাতা হলেন পৌরাণিক যুগের গঙ্গানদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের উপকূল জুড়ে অবস্থিত শাকদ্বীপবাসী মহাভারত রচয়িতা ঋষি ব‍্যাসদেব। এক অখণ্ড বেদকে চার ভাগ করে ব‍্যাসদেব পরিচিত হয়েছিলেন "বেদব‍্যাস" নামে। গায়ের রঙ কালো ছিল বলে তাঁর আরেক নাম "কৃষ্ণদ্বৈপায়ন।" তথাকথিত ইতিহাসবিদদের প্রচারিত আর্য সভ‍্যতার চেয়ে প্রায় হাজার বছরের প্রবীণ এই ঋষি ব‍্যাসদেব। অথচ ঋষি পরাশর ও ধীবর কন্যা সত‍্যবতীর সম্পর্কজাত বলে ব‍্যাসদেবের মিথ্যা জন্মকাহিনী প্রচার করে তাঁকে অপমান করা হচ্ছে আজও। এর মূলে রয়েছেন বিধর্মী শাসক ও তাঁর পুরস্কার লোভী লেখক। গৌড়ের সুলতান হুসেন শাহের কর্মচারী ছিলেন গুণরাজ খান।
তিনি শাসকের মদতে "মালাধর বসু " ছদ্মনামে লেখেন "শ্রীকৃষ্ণবিজয়" কাব‍্য, যেখানে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ব‍্যাসদেবের এই মিথ্যা জন্মকাহিনী প্রচার করা হয়। হুসেন শাহ চেয়েছিলেন, হিন্দুধর্মের মধ্যে এসব কাহিনী ঢুকিয়ে দিয়ে স্বধর্মের উন্নতি। তাই সংস্কারের নামে হিন্দুধর্মের জাতপাতের ভেদাভেদকে প্রবল করে তোলেন তাঁর সভাপণ্ডিত গ্রীক বংশোদ্ভূত নাগর ব্রাহ্মণ রঘুনন্দন ভট্টাচার্য, অন‍্যদিকে ব‍্যাসদেবের মিথ্যা জন্মকাহিনী প্রচার করেন গুণরাজ খান।
আর এখনও আমরা সেসব বিশ্বাস করে নিজেদের মধ্যে হানাহানি ডেকে আনছি, আবার নিজেদের ইতিহাসকেও অস্বীকার করে চলেছি। আর শাস্ত্রের নামে এইসব মিথ্যা গ্রন্থগুলি আজও আমাদের সমাজকে শাসন করে চলেছে।

এর ফল হয়েছে ঐতিহাসিক ড: রমেশচন্দ্র মজুমদারের ভাষায়, ---

"The political condition of the last three or four centuries also helped the Brahmans a great deal."

আর তাঁর ভাষায় এর পরিণতিতে ঘটেছে, ---

"The Hindu society now resembled that unfortunate human being whose head and feet alone were active but whose inter medinte limbs were maimed or paralysed."

তিনি আরও বলছেন, ---

"The rigid system of caste, with its attendant evils such as untouchability and prohibotion of inter-dining and inter-marriage, to extent not contemplated even in the Smits, produced disastrous effects on Hindu society."
এর ফলে শিক্ষা-শিল্প-বয়ন ও ব‍্যবসা-বাণিজ্যে চরম অবনতি দেখা দিলো। নিষিদ্ধ হলো কালাপানি পাড়ি দেওয়া, যার ফলে ধ্বংস হয়ে গেল এদেশের বাণিজ্য। শুধুমাত্র সমাজের পবিত্রতা বজায় রাখতে শুরু হলো মানুষে মানুষে হানাহানি।

আর এর পরিণতি হলো ড: রমেশচন্দ্র মজুমদারের ভাষায়, ---

"This exclusiveness, again, was in a way responsible for the political downfall of India."
তৈরি করা মিথ্যা শাস্ত্রের প্রভাবে ভারতের জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলো। এর ফলে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিদেশি শক্তি ভারতের মাটিতে আক্রমণ শানাতে লাগলো। আর এদেশের মানুষ বিধর্মী শাসকের তৈরি করা সমাজের কঠোর বিধান মেনে নিজেদের মধ্যেই লড়াই করতে লাগলো। সমাজে আজও আমরা বিধর্মী শাসকের তৈরি করা সেইসব বিধি-বিধান মেনে চলছি। রামমোহন-বিদ‍্যাসাগরের দেখানো সমাজ সংস্কারের পথ ছেড়ে মিথ্যা শাস্ত্রের শাসনেই আটকে রয়েছি আমরা আজও।

তথ্যসূত্র:

Ancient India: Dr. R. C. Majumder.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.