রাইজিং বেঙ্গল নিউজ ব্যুরো: মুসলমান হয়ে বিজেপিকে সমর্থন! ফল প্রকাশের পর এই অভিযোগেই জলপাইগুড়ির ১৩ জন মুসলিম পদ্মকর্মীর উপর নেমে এসেছে অত্যাচারের খাঁড়া। শেষমেশ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। আশ্রয় নিয়েছেন রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের চাতালে। আপাতত সেখানেই দিন কাটছে মুসলিম বিজেপি নেতাদের। হিংসা আর আতঙ্কের মধ্যে এমন অসহায় সম্প্রীতির ছবি দেখল রাজগঞ্জবাসী।

ঘর ছেড়ে মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া এই মুসলিম বিজেপি নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে দেখা করতে রাজগঞ্জের মন্দিরে যান রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। তাঁদের ঘরে ফেরাবার আশ্বাস দেন তাঁরা। পরে সায়ন্তন বলেন, ‘মুসলময়ান হয়ে বিজেপি করার অপরাধে এই ১৩ জনকে মন্দিরের চাতালে আশ্রয় নিতে হয়েছে। তাঁরা নমাজ পড়তে পারছেন না। পুলিশ প্রশাসন এঁদের ঘরে ফেরাবার কোনও ব্যবস্থা করা তো দূরের কথা ফোনটুকুও ধরছে না’।

শুধু এই ১৩ মুসলিম নেতা নয়, জলপাইগুড়ির কয়েকশো বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া বলে অভিযোগ করেন সায়ন্তন। বলেন, ‘ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূলের অত্যাচারে শত শত বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া। কয়েকজন ফিরলেও অধিকাংশই এখনও বাড়ির বাইরে’। রাজ্যে গণতন্ত্র নেই অভিযোগে মমতাকে আক্রমণ করে সায়ন্তন বলেন, ‘শাড়ি পড়া মুসোলিনির জমানায় আইনের শাসন থাকবে, তা হতে পারে না’। অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পাল্টা এসব বিজেপির সাজানো ঘটনা বলে তোপ দাগেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী। বলেন, ‘বিজেপি যেখানে জিতেছে সেখানে তৃণমূল কর্মীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। এসব ওদের সাজানো ঘটনা’।

প্রসঙ্গত, বাম জমানার অবসান ঘটে মমতা সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু বাংলায় বাংলায় রাজনৈতিক হিংসা থামেনি। একুশের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই জেলায় জেলায় আক্রান্ত বিরোধীরা। অভিযোগ, বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণের ঝাঁঝ সবচেয়ে বেশি। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রদপ্তরের পাঠানো বিষেষ প্রতিনিধি দল রাজ্যে ঘুরে গিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর হিংসা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন। মহিলা ও শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরাও আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করে রিপোর্ট দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও হিংসা থামেনি বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে ঘরছাড়াদের ফেরাতে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।