"বালিয়া বাসন্তী" নামটি কি অপরিচিত মনে হচ্ছে? তবে নিশ্চয়ই "ফুরফুরা শরীফ" নামটা বড্ড চেনা চেনা ঠেকছে?
কিন্তু যদি বলা হয়, বালিয়া বাসন্তী ছিল ফুরফুরা শরীফের আগের নাম? আশ্চর্য লাগছে? তবে পড়া চালিয়ে যান। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমার জাঙিপাড়া কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ব্লকের একটি গ্রাম এই ফুরফুরা দরবার শরীফ। কেউ বলেন, ফুরফুরা কাদিমি খানকাহ শরীফ। এই ফুরফুরা শরীফের ইতিহাস জানতে আমাদের আরও পিছিয়ে যেতে হবে বাংলার সুলতানি আমলে।
সময়কাল ১২৯৮ খ্রিস্টাব্দ। বাংলার সুলতান তখন শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহ। আর তাঁর সেনাপতি জাফর খাঁ। পাণ্ডুয়া ও সপ্তগ্রাম দখল করে পরবর্তীকালে পাশের হিন্দু রাজার হাতে নিহত হয়ে পরিচিত হোন "জাফর খাঁ গাজী" নামে। সে সময় সুলতানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকতেন মাওলানা, সুফি প্রভৃতি ইসলাম প্রচারকের দল। তাঁরা বিধর্মীদের ইসলাম কবুল করতে বলতেন, অন্যথায় তাঁরা ওই কাফের রাজ্যটি আক্রমণের জন্য সুলতানকে উৎসাহিত করতেন। বালিয়া বাসন্তীর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। সে সময় বালিয়া বাসন্তী ছিল একটি ছোট্ট হিন্দু রাজ্য। এখানেই ছিল ওই রাজ্যের রাজধানী এবং পাশাপাশি ছিল একটি গড় অর্থাৎ সেনানিবাস। এখনো সাধারণ মানুষের কাছে এলাকাটি "বাগ্দী রাজার গড়" নামে পরিচিত। এছাড়া এখানে রয়েছে রাজার নামেই একটি পুকুর, নাম---"চন্দ্রপুকুর।"
কাছেই ছিল রাজার ইষ্টদেবী মা কালীর মন্দির। মন্দির এখন নেই, তবে রয়েছে সেই বাগ্দী রাজার কালীপুজো। বাগ্দী রাজার প্রজার বংশধররা এখনো সেই কালীপুজো করেন এবং স্থানীয় মানুষের কাছে এটি "ধাড়া মায়ের পুজো" নামে পরিচিত। চন্দ্রপুকুর ও ধাড়া মায়ের পুজোর সঙ্গে জড়িত "ধাড়া" নামটি দেখে স্থানীয় মানুষজন বলেন, বালিয়া বাসন্তীর ওই বাগ্দী রাজার নাম ছিল "চন্দ্রনাথ ধাড়া।" তবে অনেকে রাজার নাম চন্দ্রমোহনও নাম বলে থাকেন। রাজা ছিলেন মাতৃভক্ত, দেব-দ্বিজে ভক্তিপরায়ণ ও অতিথি বৎসল। প্রতিদিন চন্দ্রপুকুরে স্নান সেরে মন্দিরে ইষ্ট দেবী মা কালীর পুজো দিতেন।
সুলতান শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহ একজন সুফীর ভক্ত ছিলেন, যার নাম---হজরত শফিউদ্দিন শহীদ ওরফে শাহ সুফী সুলতান। এছাড়াও সুলতান আরেকজন সুফী সাধকের কথা মেনে চলতেন, যাঁর নাম---সৈয়দ হুসেন বুখারী। এই দু'জন ব্যক্তি কিছুতেই বালিয়া বাসন্তীর হিন্দু রাজাকে ইসলাম কবুল করাতে পারেন নি। আর তাই সুলতানকে ওই রাজ্য আক্রমণে ইন্ধন দেন। সেইমতো ১২৯৮ খ্রিস্টাব্দে জাফর খাঁ ও সৈয়দ হুসেন বুখারীর নেতৃত্বে সুলতানি হানা হলো বালিয়া বাসন্তীর বাগ্দী রাজার গড়ে।
প্রথমে তাঁরা রাজার গড়ের কাছেই শিবির স্থাপন করলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, ভয় পেয়ে বুঝি রাজা ইসলাম কবুল করবেন। কিন্তু তা হলো না। উল্টে সকালেই জাফর বাহিনীকে পাল্টা আক্রমণ করলেন রাজা চন্দ্র। বাগ্দী রাজার সৈন্যদের দাপটে পিছু হটলো সুলতান বাহিনী। পরের দিন ফের যুদ্ধ হলো। এদিন রাজা চন্দ্র আরও বেশি সৈন্যকে যুদ্ধে নামালেন। দ্বিতীয় দিনের এই যুদ্ধে বহু সুলতানি সৈন্যর সঙ্গে মৃত্যু হলো শাহ সুফী সুলতানের অত্যন্ত প্রিয় যোদ্ধা---শাহ সুলেমানের।
তৃতীয় দিন সুলতান বাহিনী নতুন কৌশল নেয়। তারা দু'দলে ভাগ হয়ে একদল বালিয়া বাসন্তীর আশেপাশের হিন্দু গ্রামগুলিতে আক্রমণ চালিয়ে ধ্বংস করে। আর দ্বিতীয় দলটি আক্রমণ করে চন্দ্র রাজার গড়। তৃতীয় দিনেও ব্যর্থ হলো সুলতান বাহিনী। চতুর্থ দিনে শুরু হলো নতুন কৌশল। এদিন হজরত শাহ সুফী সুলতানের পরামর্শে হিন্দু সন্ন্যাসী সেজে ঢুকলেন চন্দ্র রাজার গড়ে। হিন্দু সন্ন্যাসী দেখে কেউ তাঁর পথ আটকালো না। ছদ্মবেশী সৈয়দ হুসেন বুখারী গড়ের ভেতরে ঢুকে লক্ষ্য করলেন, গড় পুকুরটির অদ্ভুত ক্ষমতা আছে। এই পুকুরের জলে স্নান করলে সৈন্যদের ক্লান্তি দূর হয়, শরীরের ক্ষত সারে এবং সৈন্যরা শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
চন্দ্র রাজার এই পুকুরটিকে নষ্ট করার চেষ্টা করতে লাগলেন সৈয়দ হুসেন বুখারী। এই উদ্দেশ্যে পরের দিন ফের হিন্দু সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশে হাজির হলেন তিনি, সঙ্গে নিলেন এক টুকরো নিষিদ্ধ গোমাংস। এবার তিনি পুকুর পাড়ে একটি গাছতলায় বসে মালা জপার অভিনয় করতে লাগলেন। এ খবর পেয়ে রাজা চন্দ্র তাঁর সৈন্যদের নির্দেশ দিলেন, ওই সন্ন্যাসীর সেবাযত্ন করার। ফলমূল এলো, কিন্তু "সন্ন্যাসী" সেসব গ্রহণ করলেন না। ছুটে এলেন রাজা চন্দ্র। জানতে চাইলেন, এর কারণ।
"সন্ন্যাসী" জানালেন, পথশ্রমে ক্লান্ত তিনি। স্নান হয়নি বহুদিন। ওই পুকুরে স্নান করতে চান। চন্দ্র রাজার নির্দেশে তাঁর সেনারা "সন্ন্যাসী"-কে সসম্মানে নিয়ে গেল পুকুরে স্নান করাতে। আর পুকুরের জলে নেমেই সেখানে সঙ্গের নিষিদ্ধ গোমাংসের টুকরোটি ফেলে দিলেন ছদ্মবেশী সন্ন্যাসী। তারপর রাজার দেওয়া খাবার খেয়ে প্রস্থান করলেন। পঞ্চম দিন ফের শুরু হলো যুদ্ধ। দু'পক্ষের বহু সৈন্য আহত হলো। যুদ্ধ শেষে চন্দ্র রাজার সৈন্যরা গেল গড়-পুকুরে স্নান করতে।
কিন্তু এ কি? সৈন্যরা দেখলো, নিষিদ্ধ গোমাংস ভাসছে পুকুরের জলে। এ দৃশ্য দেখে, সৈন্যরা সেখানে স্নান না করেই ফিরে গেল। আর দ্রুত এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই সৈন্যরা নিরাশ হয়ে পড়লো। ষষ্ঠ দিনের সকালে ফের শুরু হলো যুদ্ধ। এ অবস্থায় বিপর্যয় ঘটলো চন্দ্র রাজার। বাঁকুড়া বিষ্ণুপুরের রাজা ছিলেন চন্দ্র রাজার বন্ধু। সঙ্গে বিশ্বস্ত কিছু সৈন্য নিয়ে বন্ধুর রাজ্যের দিকে পাড়ি দিলেন রাজা চন্দ্র। কিন্তু তাঁর পিছু নিলো সুলতান বাহিনীর চার অশ্বারোহী যোদ্ধা ভাই---হজরত শাহ সৈয়দ খায়রুর রহমান, হজরত শাহ সৈয়দ তরিবর রহমান, হজরত শাহ সৈয়দ আব্দুর রহমান ও হজরত শাহ সৈয়দ ফয়জুর রহমান।
ভোর রাতে সুলতান বাহিনীর ওই চার অশ্বারোহীর সঙ্গে চন্দ্র রাজার দেখা হলো পথে কাগমারী গ্রামে। সেখানেই শুরু হলো প্রবল লড়াই। আর তাতে ওই চার সুলতানি যোদ্ধার মৃত্যু হলো ঘটনাস্থলেই। পরে ওই চার জনের মৃতদেহ বালিয়া বাসন্তীতে এনে কবর দেওয়া হয়। তাঁদের কবরস্থানটি পরিচিত হয় "গঞ্জে শুহাদা" নামে।"গঞ্জে শুহাদা"-র অপর নাম---"পুরফরাহ।" "পুর" মানে "পূর্ণ", আর "ফরাহ" মানে "আনন্দ।" এই "পুরফরাহ" থেকে "ফুরফুরা" কথাটি এসেছে বলে অনেকের অভিমত। আবার কেউ বলেন, "ফারে ফারাহ" থেকে "ফুরফুরা", যার মানে---জাঁকজমকপূর্ণ আনন্দ। আবার কেউ বলেন, "ফরফরা" থেকে "ফুরফুরা", যার মানে "দ্রুত।" এখানে দ্রুত মুসলমান শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় বলে এই নাম।
যাই হোক্, তখন থেকেই বালিয়া বাসন্তীর হিন্দু বাগ্দী বংশোদ্ভূত চন্দ্র রাজার জায়গায় কায়েম হলো ইসলামী শাসন। পরবর্তী সময়ে এখানে গড়ে উঠলো, ফুরফুরা শরীফ। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের ২১, ২২ ও ২৩ তারিখে ফুরফুরা শরীফে অনুষ্ঠিত হয় দাদাপীরের ঊরুস মেলা। এই "দাদা পীর" বা "দাদা হুজুর" নামে পরিচিত ব্যক্তি ছিলেন মহম্মদ আবু বকর সিদ্দিকী, যিনি ছিলেন নবী হজরত মহম্মদের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিকীর বংশধর। বালিয়া বাসন্তীর বাগ্দী রাজাকে উচ্ছেদ করতে হজরত শাহ হুসেন বুখারীর নেতৃত্বে যে সুলতানি সেনা অভিযান হয়, তার অন্যতম ব্যক্তি ছিলেন হজরত মাওলানা মনসুর বাগদাদী, যিনি ছিলেন " "দাদা হুজুর" নামে পরিচিত মহম্মদ আবু বকর সিদ্দিকীর পূর্বপুরুষ।
১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে ফুরফুরা শরীফে জন্ম হয় দাদা হুজুরের। মাত্র ৯ বছর বয়সেই পিতৃহারা হোন তিনি। ভর্তি হোন ইংরেজি স্কুলে। পরে শেখেন আরবি, ফার্সি। তাঁর জনপ্রিয়তায় আকৃষ্ট হয়ে ফজলুল হক, মৌলানা আবুল কালাম আজাদের মতো রাজনৈতিক নেতারা এসেছেন ফুরফুরা শরীফে। একবার গান্ধীজীও এসেছিলেন। মুসলমান সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কারগুলি দূর করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন তিনি এবং এজন্য বিভিন্ন মাওলানা-মৌলবীদের সঙ্গে তাঁর তর্কযুদ্ধ হয়েছে।
১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ই মার্চ দাদা হুজুরের জীবনাবসান হয়। তিনি "জমিয়তে উলামায়ে" নামে একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। এছাড়াও "দাদা হুজুর" চেয়েছিলেন অখণ্ড ভারত হোক্। তিনি বলতেন, ইংরেজ রাজত্ব একটি বৃক্ষ, যার তিনটি শিকড়---হিন্দু, মুসলমান ও খ্রিস্টান। তাই এই তিনটি শিকড়কেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। এই প্রস্তাব নিয়ে তিনি লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন বলে জানা যায়। কিন্তু তবুও সাতচল্লিশে দেশভাগ হয়। মুসলিম লীগের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেও শেষদিকে জিন্নাহকে পছন্দ করতেন না তিনি।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
I am a history aficionado, wandering along the path in search of history, archaeology and folk culture. This journey is aimed at constructing an undiscussed chapter of the forgotten Bangla with the information obtained from field survey.