রাইজ়িং বেঙ্গল ঢাকা ব্যুরো: বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউট এর ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা চলতি বছর ৩২ বছরে পা দিলো। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখের খুব সকাল থেকে বাদ্যযন্ত্রের তালে নানা ধরণের বাঁশ-কাগজের তৈরি ভাস্কর্য, মুখোশ হাতে বের হয় বর্ণাঢ্য এই মিছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে এই শোভাযাত্রার শুরুটা হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। যদিও সেটা তখন এতটা বর্ণাঢ্য ছিল না। তখনকার সেই শোভাযাত্রার একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও ছিল। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিজ-নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছিলেন অনেক শিল্পী-সাহিত্যিক। খানিকটা সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, বিশেষত চিত্রশিল্পীরা এই মঙ্গল শোভাযাত্রার পরিকল্পনা করেন। যদিও ঢাকার চারুকলার এই উৎসবটি বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। তবে এটিই যে এ ধরণের শোভাযাত্রার একদম শুরু তা নয়।

শুরুতে অবশ্য আয়োজনের নামটা মঙ্গল শোভাযাত্রা ছিল না। প্রথমবার সেটির নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। কিন্তু তখনকার পরিস্থিতিতে এর ভুল ব্যখ্যা দেয়া হতে পারে এই আশঙ্কায় নামটি দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে ইহা মঙ্গল শোভাযাত্রা নামেই সর্বাধিক পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়।

প্রতিবছর শোভাযাত্রার অন্যতম অনুষঙ্গ থাকে এসব বাঁশ এবং কাগজের তৈরি নানা ভাস্কর্য। যা তৈরি হয় কোন একটি প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে। এসব মুখোশ বা অন্যান্য মোটিফের যে কোন একটা বৈশিষ্ট্য আছে, সেটা শোভাযাত্রা দেখলে হয়তবা অনেকের চোখে পড়বে।

মঙ্গল শোভাযাত্রার এই অনুষঙ্গগুলো আমাদের সোনারগাঁয়ের লোকজ খেলনা পুতুল, ময়মনসিংহের ট্যাপা পুতুল, নকশি পাখা, যাত্রার ঘোড়া এসব থেকে নেয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালে পহেলা বৈশাখ বরণ করে নেয়ার অপেক্ষাকৃত নতুন এই উৎসবটি ইউনেস্কোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।