আমলাতন্ত্রের বেড়াজালে বন্দি আওয়ামী লীগ সরকার -- বীর মুক্তিযোদ্ধা আবীর আহাদ

Bangladesh
freedom fighter abir ahad statement about awami league government
রাইজিং বেঙ্গল ঢাকা ব্যুরো: বাংলাদেশের একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা, খ্যাতিমান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক ও গবেষক আবীর আহাদ, বুধবার (১৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, গণবিরোধী আমলাতন্ত্র দেশের জন্য বিশাল অভিশাপ। আমলাতন্ত্র জনগণ তো বটেই, এমনকি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকারকেই সে তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। একসময় তারাই হয়ে যায় সরকারের ভেতর শক্তিশালী অদৃশ্য সরকার ( Powerful Invisible Government)। তারা যতো ছোটো ও যতো বড়ো পদধারী হোক, তারা নিজেদেরকেই শাসক ভেবে বসেন। নিয়ম-কানুন, আইন-আদালত তারা মানে না। তারা নিজেরাই বিচারক। আইন হাতে তুলে নিতেও দ্বিধা করে না। সম্প্রতি প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির তথা সংগ্রহ করতে গেলে তাকে কতিপয় পুচকে কর্মকর্তাসহ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুননেসা মারধর করে দীর্ঘ ৫/৬ ঘণ্টা একটা কক্ষে বসিয়ে রেখে অত: পর পুলিশের হাতে ন্যস্ত করেন। সেই সাংবাদিক এখন কারাগারে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এসব কর্মকর্তা আইন হাতে নিয়ে সাংবাদিককে হেনস্থা করার পাশাপাশি বেআইনিভাবে আটক রাখার যে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছেন এর মধ্যে দিয়ে তারা তাদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন।

তেমনিভাবে আমলারা যিনি যেখানে আছেন, তিনি মনে করেন তিনি সেখানকার গভর্নর। তারা নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থের অন্ধমোহে ধরাকে সরা জ্ঞান করে থাকেন। তারা কারো কাছে জবাবদিহি বা দায়বদ্ধ বলে স্বীকার করেন না। এহেন সর্বগ্রাসী আমলাতন্ত্রকে কোনো রাজনৈতিক সরকার প্রশ্রয় দিলে সরকার ও আমলাতন্ত্রের তাৎক্ষণিক স্বার্থোদ্ধার হয় বটে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে দেশ ও জনগণের সর্বনাশ ঘটে। বলতে দ্বিধা নেই, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তার নানাবিধ দুর্বলতার কারণে সব সভ্যতা ভব্যতা ও নৈতিকতা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে আমলাতন্ত্রের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তুলে দিয়ে নিজেদের সর্বনাশ ঘটানোর পাশাপাশি দেশের সর্বনাশ ডেকে আনছে যা তারা ক্ষমতার রঙিন চশমা পরে থাকায় আঁচ করতে পারছেন না।

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল। জনগণের দল। তারই হাতে এদেশের স্বাধীনতা এসেছে। অথচ এ স্বাধীনতা অর্জনের পশ্চাতে যে মুক্তিযুদ্ধটি সংঘটিত হয়েছিল, আমলাতন্ত্রের ৯৫% সদস্য ছিল সেই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে। আর দু: খজনক সত্য এই যে, সেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আমলাতন্ত্রকেই স্বাধীন দেশের প্রশাসনে রেখে দেয়া হয়েছিলো ! এখানে অবশ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল মনের উদারতা কাজ করেছিল। তিনি ভেবেছিলেন, অনেক রক্তপাত ও হিংসা সংঘটিত হয়েছে, আর নয়। সবাই বাঙালি। স্বাধীন দেশটাকে সবাই মিলে এখন এগিয়ে নিয়ে যাই। এ অনুভূতি থেকেই বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আমলাতন্ত্রকে ক্ষমা করে প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনে রেখে দিয়েছিলেন। তিনি আরো ভেবেছিলেন, এ অভিজ্ঞ আমলারা তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতাকে স্বাধীনতা-উত্তর ভগ্ন দেশের উন্নয়নে কাজে লাগিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশকে একটি শক্তিশালী অবকাঠামোর ওপর দাঁড় করাতে সম্ভব হবে। তবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আমলাতন্ত্রকে বহাল রাখলেও তাদেরকে তিনি যথাযথ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। তাদের অপরাধ কর্মকে শায়েস্তা করার জন্য পিও-০৯ নামক একটি কঠোর চাকরিবিধি প্রণয়ন করেছিলেন।
কিন্তু বঙ্গবন্ধুর উদারতা ও চিন্তাকে তাঁর সরকারের দুর্বলতা ভেবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আমলাতন্ত্র খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংগঠিত হয়ে পড়ে। তারা স্বাধীন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নীতিমালায় পরিচালিত বঙ্গবন্ধু সরকারের কর্মযজ্ঞকে মানতে পারছিলো না। তারা ছিলো পাকি-মনা। চরম দুর্নীতিগ্রস্ত। ফলে ছলেকলেকৌশলে তারা নিজেদের অবস্থান সংহত করে বঙ্গবন্ধু সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে পরাজিত দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে দেশের মধ্যে নানান অরাজকতা সৃষ্টিতে ইন্ধন জোগায়। দেশের খাদ্য সংকটকে পুঁজি করে দেশের মধ্যে একটি কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে। ৭৪ সালের সেই দুর্ভিক্ষের ধারাবাহিকতায় ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু এবং ৩রা নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী চার জাতীয় নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুতি ও বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চারনেতা হত্যার পশ্চাতে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আমলাতন্ত্র অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল সে-বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
শেখ হাসিনার সামনে এমন জ্বলজ্বলে ইতিহাস থাকলেও তিনি সেটাকে পাত্তা না দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও ইতোমধ্যে আওয়ামীবিরোধী মনোভাবে গড়েওঠা চরম দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্রকেই পরম বিশ্বাসে কাছে টেনে নিয়েছেন। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রশাসনকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাসহ দুর্নীতিমুক্ত করার তাঁর শত আহ্বান ও নির্দেশের প্রতি আমলাদের কোনোই ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা তাঁর সরকারের একশ্রেণীর দুর্বৃত্তপরায়ণ রাজনৈতিক শক্তির যোগসাজশে সরকারের নানান উন্নয়ন প্রকল্প ও কেনাকাটার মধ্যে সাগরচুরির মহোৎসব ঘটিয়ে চলেছে। চলমান করোনাকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে আমলাতন্ত্রের দুর্নীতি, অনৈতিকতা, অব্যবস্থা ও লুটপাটের যে হোলিখেলা চলছে, কী এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনোই ব্যবস্থা নিতে পারছে না। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নয়, বলা চলে গোটা রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক পদগুলোতে অর্থের বিনিময়ে দুর্নীতিবাজ আমলাদের বসিয়ে দেয়া হয়েছে। আর পদে বসেই তারা ফ্রিস্টাইল দুর্নীতি ও লুটপাট করে যাচ্ছে। তাদের কোনো জবাবদিহিতার বালাই নেই। তারা যেনো ধরাছোঁয়ার উর্দ্ধে। দুর্নীতিবাজ নেতা এমপি ও মন্ত্রীসহ আমলাতন্ত্রকে প্রশ্রয় দিলে অবস্থাটা এমন হওয়াই স্বাভাবিক।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী আমলাতন্ত্রের সাথে আপোস করে এ সরকার সবচাইতে বড়ো ভুলটি করেছেন বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে। মূলত: ঐ আমলাতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজাকার সন্তানদের তথাকথিত আন্দোলনের অজুহাতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে বঙ্গবন্ধু ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চরমভাবে অপমান করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে খোলামেলাভাবে রাজাকারি প্রশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করা হয়েছে। এখন বলা চলে বাংলাদেশের প্রশাসন চলছে রাজনৈতিক সরকারের নেতৃত্বে নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী আমলাতন্ত্রের নেতৃত্বে। মূলত: দুর্নীতি লুটপাট এবং অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারণেই রাজনৈতিক সরকার ধুরন্ধর আমলাতন্ত্রের কাছে আত্মসমর্পণ করে থাকে। তখন রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজনৈতিক সরকারের দর্শন নয়, আমলাতন্ত্রের দর্শনই মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এখানেই আওয়ামী লীগ সরকারের চরমতম পরাজয়।
দেশ দু'টি ভাগে বিভক্ত। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি বিপক্ষ শক্তির প্রতি বিশাল মনের উদারতার কারণে নমনীয় হলেও বিপক্ষ শক্তি মনের দিক থেকে বংশপরম্পরায় এখনো প্রতিহিংসা পরায়ণ। তারা বংশানুক্রমিক বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এখনো মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি। এটা বিজ্ঞজনেরা সবাই বুঝলেও আমাদের উদারমনের প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারেননি বলে মনে হয়। দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সৎ মেধাবী ও ত্যাগী মানুষ থাকতে কেনো যে তিনি সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিশেবে বেছে নিলেন একজন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ-করা প্রয়াত কর্নেল আবদুল মালেকের পুত্রকে তা আমাদের বুঝে আসে না ! অপরদিকে জনগুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিশেবে বেছে নিয়েছিলেন পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর একজন দালালের পুত্রকে ! চলমান করোনা সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে এই মন্ত্রী ও মহাপরিচালকের অদক্ষতা অযোগ্যতা ও দুর্নীতির কারণে সরকারকে দেশ-বিদেশের কাছে কতো যে নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে এবং হচ্ছে, তারপরও সরকারের হুঁশ হচ্ছে না ! এই মন্ত্রী ও মহাপরিচালকসহ প্রশাসন ও বিভিন্ন অঙ্গনে অবস্থানরত দুর্নীতিবাজ লুটেরা ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। শাহেদ আরিফ সাবরিনার মতো ছিঁচকে অপরাধী ও বিচ্ছিন্নভাবে বলির পাঁঠায় গেলেও নেপথ্যের গডফাদার ও পৃষ্ঠপোষক তথা আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতারা যে বহাল তবিয়তে থাকবে তা সবাই জানে।
যেকোনো দেশের দুর্নীতিবাজ-লুটেরা রাজনৈতিক দল ও শাসকদের জন্য আমলাতন্ত্র কিছুকালের জন্য আশীর্বাদ হলেও দিনের শেষে আমলাতন্ত্রই সেই রাজনৈতিক দল ও শাসকদের পতনের মূল কারণ হিশেবে আত্মপ্রকাশ করে। এজন্য দেশপ্রেমিক শাসকরা দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্রকে কোনোভাবেই আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। কিন্তু দু: খজনক সত্য এই যে, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বর্তমান অদূরদর্শী সরকার আজ বহুদিন যাবত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাতন্ত্রের হাতে বন্দী হয়ে দিশাহীন অবস্থার মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে ! অবস্থা মনে হয় এমন জায়গায় চলে গেছে, যার ফলে আমলাতন্ত্রের ভয়ে আওয়ামী লীগ সরকার আজ স্বাধীনতার সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদায় মূল্যায়ন করতে পারছে না। অপরদিকে আমলাতন্ত্রের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা সময় মতো তাদের সম্মানী ভাতা ও শিষ্টাচার পাচ্ছেন না। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক ব্যবস্থা হবে যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনানির্ভর ও গণবান্ধব সেখানে আমলাতন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জনগণকে পদদলিত করে চলেছে। অথচ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন আওয়ামী লীগ। দেশের মধ্যে যে সাগরসম লুটপাট দুর্নীতি ও অব্যবস্থা বিরাজ করছে, তার সিংহভাগ সংঘটিত হচ্ছে এ আমলাতন্ত্রের দেখিয়ে দেয়া কলাকৌশলের মাধ্যমে। বিশেষ করে সরকারি ছোট-বড়ো-মেগা প্রকল্প ও কেনাকাটার মাধ্যম যে লুটপাট সংঘটিত হয়ে আসছে তা অতি বিস্ময়কর হলেও সরকার হিশেবে আওয়ামী লীগ তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মনে হয় আওয়ামী লীগ সরকার আমলাতন্ত্রের স্টিলফ্রেমের মধ্যে বন্দি হয়ে হিতাহিতবোধশূন্য হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের এ দুর্বলতা ও রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব মেনে নেয়া যায় না। এটা দেশ ও জাতির জন্য ভয়াবহ অশনি সংকেত।
জননির্ভর রাজনৈতিক দল হিশেবে আওয়ামী লীগকে তাঁর দল ও দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এখনি আমলাতন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আসতে হবে। অন্যথায় তাকে করুণ পরিণতি বরণের জন্যে অপেক্ষা করতে হবে !
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.