গল্পে গল্পে ইতিহাস: পাল রাজবংশ

Bangladesh
story by story history pala dynasty
ছবি: হরিতকীডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুল, নওগাঁ

ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম

আমাদের ড্রাইভার হাসান Hasan Sheikh Hasan Sheikh খুব দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে। যাকে বলা যায় ঝড়ের বেগে। মঙ্গলবাড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে পাওয়া গেল জয়পুরহাট ধামাইরহাটের মেইন রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে সবুজ খেত। আবহাওয়াটা গুমোট ধরণের। তবে বেশ ভালো লাগছে। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। আমরা দল বেঁধে গত কয়েকদিন বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁর প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। কিন্তু খারাপ লাগছে না। এই কয়দিনের জন্য আমাদের সাথে থাকা বাচ্চারাও ভুলে গেছে মোবাইল, ইন্টারনেট, গেম। এখন মনে হচ্ছে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা আর ইতিহাস জানার আগ্রহ ওদেরই বেশি। শুধু তাই নয় আমরা খেয়াল করলাম ইতিহাস জেনে ওরা খুব আনন্দ পাচ্ছে। আতাউর বলেই ফেলল ভাই দেখছেন বাচ্চারা কিন্তু ইতিহাস এনজয় করছে।

আমি বললাম আতাউর দেখো বিষয় হিসেবে ইতিহাস খুবই সহজ সরল। কিন্তু আমরা এটাকে জটিল করে ফেলেছি। সাধারণ অর্থে সবাই মনে করে ইতিহাস পড়লেই শুধু গাদা গাদা সাল তারিখ আর রাজা বাদশাহদের যুদ্ধ বিগ্রহ। কিন্তু আসলে তো তা নয়। আমি কিন্তু ছাত্রদের ইতিহাসের ক্লাসে গিয়ে বলি আগে কি করছিলাম সেটাই আজকে ইতিহাস। যাকগে সে কথা। দেখো ইতিহাস না পড়ার বা অনাগ্রহের কারণেই কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের দেশপ্রেম, নৈতিকতা এগুলো শিখাতে পারছিনা। প্রসঙ্গক্রমে ইতিহাস পাঠ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা বলা যেতে পারে। তিনি কি বলেছেন, দেখি আতাউরেরও ইতিহাস চর্চার দিকে মনোনিবেশ।

হ্যা, তিনি বলেছেন, “যে সকল দেশ ভাগ্যবান তাহারা চিরন্তন স্বদেশকে দেশের ইতিহাসের মধ্যেই খুঁজিয়া পায়, বালককালে ইতিহাসই দেশের সহিত তাহাদের পরিচয় সাধন করাইয়া দেয়। আমাদের ঠিক তাহার উল্টা। দেশের ইতিহাসই আমাদের স্বদেশকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখিয়াছে।” কথা বলতে বলতেই হঠাৎই গাড়ী সজোরে ব্রেক কষল। আমরা সামনের দিকে ঝুকে গেলাম।

হাসানকে একটু বকলাম। বললাম কি ব্যাপার।

হাসান বলল স্যার একজন বয়স্ক লোক না বুঝে রাস্তায় ভ্যান ঘুরাচ্ছিল, ব্রেক না করলে নির্ঘাৎ দুর্ঘটনার মধ্যে পড়তে হতো। আমরা হাসানকে জোরে গাড়ী চলাতে নিষেধ করলাম। এরই মধ্যে মেরী বললো হাসানকে কিছু খাইয়ে নিয়ে আসো। বিয়ে বাড়ীতে গেলেই খাওয়া হবে এজন্য বেচারা তাড়াতাড়ি যেতে চাইছে।
মেরীর কথা শুনে হাসান গাড়ী রাস্তার পাশে স্কুল মাঠে নিয়ে দাড় করাল। আমরা গাড়ী থেকে নামলাম। প্রাইমারী স্কুল বিল্ডিংয়ের দেয়ালে নাম লেখা দেখেই বুঝলাম এলাকার নাম হরিতকীডাঙ্গা। এটা নওগাঁ জেলার মধ্যে পড়েছে। স্কুলটার নাম হরিতকীডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুল। তবে স্কুলের ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড খুব পছন্দ হলো। চমৎকার আইডিয়া। আমি দাঁড়িয়ে দেখছি। স্কুলের ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড চারটি সিড়ির উপর নির্মিত। সিড়ির প্রথম ধাপ ১৯৫২ ভাষা আন্দোলন; দ্বিতীয় ধাপ ১৯৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন; তৃতীয় ধাপ ১৯৬৯ গণ অভুত্থান; চতুর্থ ধাপ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। আতাউরকে ডেকে দেখালাম দেখছে দেশপ্রেম বা ইতিহাস চেতনা কাকে বলে। এক অখ্যাত স্কুল হলেও নিশ্চয় এই স্কুলের শিক্ষক যেটি তৈরী করেছেন তিনি অনেক দুরদর্শীজ্ঞান সম্পন্ন দেশ প্রেমিক। স্কুলের ছাত্ররা ক্লাশে ঢুকতে গিয়েই তারা দেখতে পাচ্ছে আমাদের দেশ (যেটা জাতীয় পতাকা নির্দেশ করছে) সেটা দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের চারটি স্তম্ভের উপর।
আতাউরও অবাক হয়ে দেখলো। আর বলতে লাগলো ভাই দেখেন স্কুল ছোট হলেও তাদের প্রচেষ্টা অনেক মহত। শুনতে পাই আমাদের দেশে অনেক বড় বড় নামী দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইতিহাস পড়ানো দুরে থাকুক শহীদ মিনারই নাই।
ইতিমধ্যে আমাদের দুজনকে ফেলে রেখে স্বপ্না, মেরী, রাতা, অথৈ, আনিকা, মোহাইমেন হরিতকীডাঙ্গা বাজারে ঢুকে পড়েছে। ড্রাইভার হাসান ওদেরকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে বসেছে। বুঝলাম ঘুরে ঘুরে খিদেটা সবাইকে পেয়ে বসেছে। জিলাপীর অর্ডার দিয়ে আমরাও ওদের পাশে গিয়ে বসলাম।
চা নাশতা সেরে আমরা আবারো যাত্রা শুরু করলাম ধামুরহাটের দিকে। জেনে নিলাম খুব বেশী সময় লাগবে না। রাস্তার পাশে খেত খামার শুধুই সবুজ। কিন্তু গাড়ী চলছে ধীর গতিতে। গাড়ী চালাতে গিয়ে বিরক্ত হাসান। নসিমন ভুটভুটি সাইকেল মটর সাইকেল সব রকমের যানবাহন চলছে আপন গতিতে। ছোট রাস্তায় সাইড কাটার উপায় নেই। তারপরেও রাস্তা অচেনা। শুনসান নীরবতার মাঝে রাতা প্রশ্ন করে বসলো আচ্ছা বাংলাদেশে রাজারা কোত্থেকে এলো। এখানে পাল রাজাদের শাসন কবে থেকে শুরু হলো। গতকাল বাদল প্রশ্বস্তিলিপি দেখার পর থেকেই রাতার মনে প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল।
ও তুমি সুন্দর প্রশ্ন করেছো। আমাদের দেশে রাজার শাসন বা রাজতন্ত্রের উৎপত্তি কীভাবে হল? ঠিক আছে তাহলে একটু মন দিয়ে শোনো।
প্রাচীনকালে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ছিল দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়ার ফসল। খুবই সংক্ষেপে বলতে গেলে এভাবে বলা যায় আদিম সমাজে মানুষ ছিল স্বাধীন। পরে যুক্ত হয় দাস ব্যবস্থা। এই সময় গোষ্ঠীতন্ত্রের আবির্ভাব হয়। গোষ্ঠী পতিরা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। শক্তিশালী গোষ্ঠী দুর্বল গোষ্ঠীগুলোর উপর আঘাত হানতে থাকে। তাদের সম্পদ লুট করে এবং তাদের উপর প্রভুত্ব ঘটাতে থাকে। এখানে একটু লক্ষ্য করতে হবে তাহলো রাজা শব্দের অর্থ হলো নেতা। এ কারণে ঋকবেদে রাজাদের গোষ্ঠীপতি বা বিশপতি বলা হয়েছে। কিন্তু সে সময়ও রাজারা মানুষকে শাসন করার কিংবা ভূ সম্পত্তির মালিক হতে পারেন নি। রাজা যখন মানুষকে শাসন করার অধিকার পেল তখন তিনি হলেন নৃপতি। আবার যখন জমির মালিক হলেন তখন তার পদবী হলে ভূপতি। পরবর্তী বৈদিক যুগের সময় থেকেই রাজারা নৃপতি বা ভূপতি হলেন। অর্থাৎ ক্ষমতা বাড়তে থাকলো। এই অবস্থা সামন্তযুগের। তাহলে বিষয়টা পরিস্কার হলো গোষ্ঠীতন্ত্র থেকে সামন্ততন্ত্র। এই শক্তিশালী সামন্ত প্রভুরাই ক্রমে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। এইভাবে গোষ্ঠীর নেতা হয়ে উঠলেন রাজা। জনগণ হয়ে উঠলেন তার অনুগত প্রজায়। তাদেরকে অন্য গোষ্ঠী থেকে রক্ষার দায়িত্বও রাজার উপর এসে পড়ে। ফলে রাজাকেও প্রজাদের মান্য করে চলতে হয় এবং বংশ পরম্পরায় তা চলতে থাকে। এতো গেলো রাজা আর প্রজার কথা। রাজ্য তাহলে কিভাবে হলো সেটাও একটু জানা যাক।
রাজ্যকে বলা হতো জনপদ। জনগণ যেখানে বাস করত সেটাই জনপদ। এগুলোর আয়তন গ্রামের থেকে একটু বড় ছিল। এই জনপদগুলো যে গোষ্ঠীর জনগণ বসবাস করতো তাদের নামেই পরিচিত হতো। যেমন ধরো এই এলাকায় এক সময় পুন্ডু জাতির লোক বাস করতো এই কারণে এটাকে বলা হতো পুন্ড্রু দেশ বা পুন্ড্রুবর্ধন। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের গোড়ার দিকে ভারতে এই রকম অনেক জনপদের নাম জানা যায়। আমাদের দেশে জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল গৌড়, পুন্ড্রবর্ধন, বঙ্গ এই রকম আরো বেশ কয়েকটি। ধীরে ধীরে জনপদগুলোর ক্ষমতাও ক্রমে বাড়তে থাকে। ছোট ছোট জনপদ একের সঙ্গে অন্যের মধ্যে বিলীন হয়ে যায় যুদ্ধ বিগ্রহের কারণে। তখন এগুলো মহাজনপদ বা বড় রাজ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। যেমন কোশল, অবন্তী, বৎস এবং মগধের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত অন্য জনপদকে হটিয়ে দিয়ে মহাজনপদ বা বড় রাজ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে মগধ।
দিনে দিনে এভাবে রাজা, প্রজা, রাজ্য ইত্যাদি ধারণাগুলো যুক্ত হতে থাকে। রাজা যখন নিজের শক্তিবলে রাজ্যসীমা বাড়াতে থাকেন তখন সেটা সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। পদবীরও পরিবর্তন ঘটে তখন তিনি হন সম্রাট। মানে মহারাজা। এর সঙ্গে আরো উপাধি যুক্ত করে বলতে থাকে মহারাজাধিরাজ। অর্থ্যাৎ মহান রাজার অধীনে আরো রাজা আছে। যাঁরা তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে এবং কর দিয়ে চলে। মগধের অবস্থা গিয়ে দাড়ালো সেই অবস্থানে। বড় বড় শাসকেরা মগধের সঙ্গে বাংলাকেও শাসন করতে লাগলেন। কিন্তু বাংলার একচ্ছত্র শাসন তখনো গড়ে উঠেনি। জনপদগুলোও ছিল বিচ্ছিন্ন। এমন সময়ে বাংলায় বা গৌড়ে সামন্ততন্ত্রের অবস্থার উত্তরণ ঘটিয়ে শাসক বা সম্রাট হিসেবে যাঁর নাম প্রথম পাওয়া যায় তিনি হলেন শশাংক। তিনি যে সামন্ত বা মহাসামন্ত ছিলেন তার একাধিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এটা খুব বেশী দিন আগের কথা নয়। সপ্তম শতকের দিকের ঘটনা। এই সময় ভারতের বহুস্থানে সামন্ত রাজাদের ক্ষমতা দখল করতে দেখা যায়। মহাসামন্তরা রাজার দুর্বলতার সুযোগে স্বাধীন বলে নিজেদের ঘোষণা করতেন। একথা শশাংকের বেলায় যেমন প্রযোজ্য ঠিক একইভাবে দাক্ষিণাত্যে দন্তিদুর্গ নামেও একজন সিংহাসন অধিকার করেছিলেন।
শশাংকও সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি বাড়াতে থাকেন। বাংলার বা গৌড়ের প্রতিবেশী রাজ্য যেমন উৎকল, মগধ, কামরূপ জয় করেন। উত্তর ভারতের সম্রাট হর্ষবর্ধন তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল। তিনি হর্ষবর্ধনের ভাই রাজ্যবর্ধনকে হত্যা করেছিলেন। ফলে হর্ষবর্ধনের সঙ্গে শশাংকের বিরোধ লেগেই থাকতো। আমরা চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙের কথা জানি। তিনি শশাংক এবং হর্ষবর্ধনের সংঘর্ষের বিবরণ দিয়েছেন। কিন্তু শশাংকের বড় ব্যর্থতা তিনি কোন স্থায়ী রাজবংশ তৈরী করে যেতে পারেন নি। ফলে শশাঙ্কের মৃত্যুর পর একশ বছর ধরে বাংলায় অরাজকতা চলতে থাকে। এই অরাজকতাপূর্ণ সময়কে সংস্কৃত ভাষায় মাৎস্যন্যায় বলা হয়। মাৎস্যন্যায় আমাদের বইয়ে আছে রাতা বলতে থাকে।
হ্যা গোপাল এই মাৎস্যন্যায় অবস্থার অবসান ঘটিয়ে পাল শাসন প্রতিষ্ঠিত করেন। পাল রাজারা বাংলাদেশের এই উত্তরাঞ্চলেই বসবাস করতেন। এখান থেকেই ধীরে ধীরে তাঁরা তাঁদের রাজত্ব সম্প্রসারিত করতে থাকেন। এক সময় তাঁরা ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হন। বিশেষ করে সম্রাট ধর্মপাল এবং দেবপালের রাজত্বকালে। কিন্তু গল্প আর বেশীদুর এগোলো না। ড্রাইভার হাসান গাড়ী থামিয়ে দিল। বললো স্যার আপনারা সবাই নামেন।
আমরা তাকিয়ে দেখি ধামুরহাট চলে এসেছি। রাতাকে বললাম চলো বিয়ে বাড়ীতে যাই তারপরে আরো গল্প বাঁকী থাকলো।

লেখক: বাংলাদেশের পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপ-উপাচার্য

Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.