আনন্দমঠ কোনমতেই হিন্দু ধৰ্ম প্রাধান্যের উপন্যাস নয়
নীলাঞ্জন কুমার
‘বঙ্গদর্শন ‘পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে চৈত্র ১২৮৭থেকে জৈষ্ঠ ১২৮৯ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত ও ওই ১২৮৯ অর্থাৎ ১৮৮২ সালে পুস্তকাকারে প্রকাশ পাওয়া ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসটি নিয়ে অনেকেই বিশেষ করে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির কারণে ‘সাম্প্রদায়িক ‘লেবেল মেরে দিয়েছেন ও দিচ্ছেন। এই উপন্যাসটি যেহেতু ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের পটভূমিকায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র লিখেছিলেন সেহেতু তার মধ্যে সাম্প্রদায়িক ফোড়ন ছড়িয়ে দিয়ে নানাবিধ চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দেওয়া খুবই সহজ ও এসব চিন্তা পাবলিক ভালই খেতে পারে সে কারণে বাজারমাত করার জন্য আনন্দমঠের বিষোদগার করে নিজেকে সেকুলার হিসেবে জাহির করার প্রবণতা অনেকাংশে লক্ষ্য করেছি ও করছি। অথচ যদি বঙ্কিমচন্দ্রের ধর্মচেতনার দিকে লক্ষ্য করি তবে দেখতে পাবো তিনি দ্বর্থহীন ভাষায় বলেছেন: ‘যাঁহারা ধর্ম- ব্যাখ্যায় প্রবৃত্ত, তাঁহাদিগকে দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যাইতে পারে। এক শ্রেণীর ব্যাখ্যাকারেরা বলেন, যাহাকে ধর্ম বলিতেছি, তাহা ঈশ্বরোক্ত বা ঈশ্বর প্রেরিত উপদেশ। তাঁহাদের কাজ বড় সোজা। অমুক গ্রন্থে ঈশ্বরদত্ত উপদেশগুলি পাওয়া যায়, আর তাহার তাৎপর্য এই, এই কথা বলিলেই তাহাদের কাজ ফুরাইল। খ্রিস্টিয়ান, ব্রাহ্মণ, মুসলমান, য়ীহুদী, সচরাচর এই প্রথাই অবলম্বন করিয়াছেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর ব্যাখ্যাকারেরা বলেন যে, কোন ধর্ম বা ধর্মপুস্তক যে ঈশ্বরোক্ত, ইহা বিশ্বাস করিবার উপযুক্ত কারণ নাই। ‘তিনি আরো বলেন: ‘যাঁহারা বলেন যে, খ্রীষ্ট, বুদ্ধ, মুসা বা মহম্মদ ধর্ম সৃষ্টি করিয়াছেন তাঁহাদের কথায় একটা ভুল আছে। ইঁহারা কেহই ধর্ম সৃষ্টি করেন নাই, প্রচলিত ধর্মের উন্নতি করিয়াছেন মাত্র। ‘ফলে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি যদি এই হয় তবে হিন্দুত্ব নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়ি কিংবা ইতিহাস বিকৃত করে হিন্দুত্বের প্রচার করার প্রয়োজন বোধ তাঁর যে ছিল না তা বেশ বুঝতে পারি।
আনন্দমঠের প্রধান উপজীব্য দিক হল অত্যাচার অনাচারের থেকে মানুষের সামনে বেরিয়ে আসার পথ দেখান। যদি ইতিহাস দেখি তবে দেখতে পাবো সেসময় ইংরেজদের ক্রীড়নক বাংলার মুসলিম নবাবের ঔদাসীন্যে মানুষকে যেভাবে পীড়ন ভোগ করতে হয়েছে ও মন্বন্তরে লক্ষ লক্ষ নর নারী ও শিশুদের অনাহারে মরতে হয়েছে তা কহতব্য নয়। সেখানে মুসলিম শাসন ও তাদের তাঁবেদার মুসলিমদের প্রতি হিন্দুদের বিদ্বেষ হতেই পারে ও কিছু ঘটনা ঘটতেই পারে কিন্তু সাধারণভাবে মানুষের ভেতর এ দুই সম্প্রদায়ের সঙ্গে সে সময় সম্প্রীতি অটুট ছিল তা সামাজিক রীতিপ্রকরণ ও উৎসবে যোগদান দিকনির্দেশ করে। ব্রিটিশ যে আস্তে আস্তে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধর্মের বিষ ছড়িয়ে দিয়েছিল তার থেকে আজও গরিষ্ঠাংশ হিন্দু ইসলামকেন্দ্রিক সাহিত্য পড়তে নাক সিঁটকান উল্টোদিকে মুসলিমরা তাই করেন। এভাবে বিদেশী শক্তি দেশীয় শক্তিকে দুর্বল করার বিষয়ে সফলকাম হয়েছিল। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আজকের ভারতীয় রাজনৈতিক দলেরা ধমীর্য় রাজনীতির সঙ্গে নিজেদের ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষের কাঁধে বন্দুক রেখে।
মন্বন্তরের সময়ের ইতিহাস যদি একটু দেখি দেখব দুর্ভিক্ষ, সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা, জোর করে রাজস্ব আদায়। রাজস্বর সিংহভাগ যেত ইংল্যান্ডে প্রাশ্চাত্যে শিল্প বিপ্লবের কারণে। এ সব করতে গিয়ে তাদের কিছু বিদ্রোহ পার হতে হয় যার মধ্যে সন্ন্যাসী বিদ্রোহ অন্যতম। বঙ্কিমচন্দ্র চাকুরিরত থাকাকালীন প্রায় পনের ষোলটি জেলা ও মহকুমায় ডেপুটি মাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর সহ অন্যান্য পদে তেত্রিশ বছর থাকাকালীন তিনি সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন ও তাদের জীবনযাত্রা প্রনালী বঙ্কিমচন্দ্রকে এত প্রভাবিত করেছিল যে সন্ন্যাস ধর্মের অলৌকিকত্বে তাঁর গভীর প্রত্যয় জন্মায়। তাঁর উপন্যাসগুলোতে এর প্রভাব স্পষ্ট। আনন্দমঠে আমরা বঙ্কিমচন্দ্রের এই অবস্থান বিশেষভাবে অনুভব করার সুযোগ পাই যার ভেতর দিয়ে আমরা বুঝতে পারি সমাজে জনসাধারণের মধ্যে তাঁর এই উপন্যাস – এর বিষয়ে সমাজে তথাকথিত, অতি প্রচারিত ও প্রচলিত অবাস্তব হিন্দু ধর্মের চিন্তাধারার বিপরীত ও বিরোধী। ‘ভারতকলঙ্ক ‘প্রবন্ধে তিনি জাতি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে হিন্দু জাতি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে হিন্দু জাতি চিন্তার বিতর্কে পূর্বপক্ষের অবস্থানের বিরূদ্ধে তিনি জোরালো সওয়ালও করেছেন। আনন্দমঠ যেহেতু একটি উপন্যাস সেখানে বঙ্কিমচন্দ্র ইতিহাসের কচকচানির থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন সামাজিক ঘটনাবলির ভেতর থেকে বিভিন্ন স্তরের মাধ্যমে মানুষের কাছে বিষয়টি উদ্ভাসিত করতে। যিনি তারজন্য এখানে প্রেমের স্বাদ, স্নেহ, বর্বরতা, প্রতিশোধের আগ্রহ ইত্যাদি ইত্যাদি, মিশিয়ে দিয়েছেন যথার্থভাবে।
আনন্দমঠের সম্পূর্ণ আবহসংগীত ‘বন্দেমাতরম ‘গানটি। গানটি গোটা উপন্যাসটিকে টেনে রেখেছে ও পাঠককে ধীরে ধীরে জাতিয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করার দিকে নিয়ে গিয়েছে। এ উপন্যাসে যে চমক পাই তা উদ্বুদ্ধ করার জন্যসফল প্রক্রিয়ার পরিবেশন। ‘বন্দেমাতরম ‘যেহেতু মাতাকে বন্দনা করা মন্ত্র হিসেবে এখানে লেখা হয়েছে। যেখানে মাতা রূপী ভারত মাতার বর্ণনাও আছে যা পরবর্তীকালে স্বাধীনতা আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে। কিন্তু এর ভেতর যখন হিন্দু মুসলিম বিষয়টি নিয়ে আসা হয় সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে তখন অবাক হতে হয়। এ আর রহমান যখন গেয়ে ওঠেন বন্দেমাতরম এর সফল অনুবাদে ‘আম্মা তুঝে সালাম ‘, সে কি কখনও কলুষকর হতে পারে? রাজনীতির মাধ্যমে লোক খেপানো ও ক্ষমতা অধিকারের জন্য বিষোদগার করা যায় ও সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো যায়। কিন্তু কতদিন? এই বিশ্বাস নিয়ে বাঁচা যে সেইসব মানুষদের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের বোধে ধাক্কা আসবে দেরীতে হলেও। মা, আম্মা, মাম্মি যার একমাত্র অর্থ জননী, তা কোন ভাষায় বলছি তার ওপর বিচার হবে কি হবে না তা নিয়ে যদি প্রশ্ন করা যায় তবে এসব সামান্য বিষয় নিয়ে যারা কাজিয়া করে তারা উত্তর দিতে পারবেন তো? আমরা দেখি মধ্যযুগে ভারতবর্ষে যুদ্ধবিগ্রহের কারণে কিছু ধর্মস্থান ধ্বংস কিংবা দখল হলেও তাতে সংগ্রামরত দুই পক্ষের অবস্থান ছিল, সেখানে ধর্মবোধ গৌণ। শাহজাহানের শাসনকালে ৫০০০ আন্ত ধর্মীয়, মিশ্র বিবাহের সংবাদ পাওয়া যায় যেখানে বিবাহিত দম্পতি ধর্মান্তরিত হয়নি। এ সত্যের সামনে দাঁড়িয়ে বোঝা যায় সাম্প্রদায়িক বিচ্ছেদ কেবলমাত্র ধর্মকেন্দ্রিক হওয়া সম্ভব নয়। তার সঙ্গে থাকে অশুভ রাজনীতি, ধনী দরিদ্র ভাবনা, অত্যাচার অনাচার ইত্যাদি ইত্যাদি।
বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ ‘যে কারণে হিন্দুধর্ম প্রাধান্যের উপন্যাস বলা যাবে না, তার মোক্ষম দিক হলো আনন্দমঠের শেষপাদে এসে দেখি সত্যানন্দ চিকিৎসককে বলছেন, মুসলমানরাজ ধ্বংস হয়েছে কিন্তু হিন্দু রাজ্য স্থাপন হয়নি – এখনো কলকাতায় ইংরেজ প্রবল। চিকিৎসক তার উত্তরে বলছেন, হিন্দুরাজ্য এখন স্থাপন হবেনা – তুমি থাকলে এখন অনর্থক নরহত্যা হবে। অতএব চল। সত্যানন্দ তখন দুঃখিত হয়ে তাকে বলছেন, হে প্রভু ! যদি হিন্দু রাজ্য স্থাপন হবে না, তবে কে রাজা হবে? আবার কি মুসলমান রাজা হবে?
তিনি বললেন – না, এখন ইংরেজ রাজা হবে।
এ সত্য পছন্দ না হলেও সত্য। তিনি যদি সাম্প্রদায়িক হতেন তাহলে হিন্দুরাজ্য যাতে আসে তার জন্য উদ্বুদ্ধ করার পথ নিতেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সামাজিক অবস্থান ও তার গতিপ্রকৃতি জানিয়ে দিচ্ছে এ সব মহৎ রচনার গূঢ় উপলব্ধি। আমরা ভ্রষ্ট রাজনীতি র প্রাবল্যে ভীত হয়ে পড়ছি। এর শুদ্ধি কবে হবে বলা দুষ্কর। তবু চালিয়ে যেতে হবে।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.