শিকারসেঁদরাকথা: দ্বিতীয়পর্ব

Known Unknown
shikarsendrakatha dwitiyaparba

দুর্গেশনন্দিনী

“সার না ক তুঞ কেঃ
সার না ক তুঞ কেঃ
সার না ক টেরাঙ কেঃ
সারি সারজম দারেরে
সার দ হারাড় এন। …”
অর্থাৎ –
“তীর লো ছুড়েছে
তীর লো ছুড়েছে
তীর লো ছুড়েছে
সারি সারজম (শাল )গাছে
তীর বিদ্ধ হলো যে। -”
শিকারের প্রথম ভাগ হল প্রস্তুতি পর্ব বা গিরী ভেজা ( চাল)। শিকার পর্বের মূল কন্ডারীকে বলা হয় #দিহরি বা #দিহিরি। যে কেউ আবার এই দিহিরি হতে পারেন না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দিহিরি নির্বাচন হয়। অরণ্যের পথঘাট, বন্যপশুদের অবস্থান আচরণ এবং প্রকৃতি সম্পর্কে যাঁর গভীর ধারণা তিনিই দিহিরি বা দিহরি পদের অধিকারী হন।
কেবলমাত্র শিকারের অভিজ্ঞতা নয় …তারসাথে আধ্যাত্মিক ক্রিয়া কর্মে দক্ষ হতে হবে। দিহরি প্রথমে শিকারের স্থান এবং দিনক্ষণ সব ঠিক করে। তারপর #শালাগিরা পাঠিয়ে সেই সংবাদ আশেপাশের গ্রাম গুলিকে জানিয়ে দেয়। শালগিরার সম্মান ও মর্যাদা সাঁওতাল সমাজে অনেক উচ্চস্তরে। শালগিরার আমন্ত্রণ অগ্রাহ্য করার সাহস কারো নেই। দিহরির নিকট থেকে শিকার যাবার আমন্ত্রণ পেয়ে গাঁয়ের মোড়ল সকলকে জানিয়ে দেয় –
কোন বনে শিকারে যাবে, কোন পথ ধরে যেতে হবে, দুপু ড়ুপু টাডি – তে কবে উপস্থিত হতে হবে। পরের দিন থেকে শুরু হয়ে যায় শিকারে যাওয়ার প্রস্তুতি পর্ব। ধনুকের ছিলা পড়ানো থেকে শুরু করে তীরের ফলায় শান দেওয়া, কুঠার, ভল্লা, তরবারি, বল্লম ইত্যাদি প্রয়োজনীয় হাতিয়াড় তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখে নেয়। ধামসা, ঢাক, কাড়া-নাকাড়া ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রগুলো বাজিয়ে দেখে নেয়। যেন কোনো সুপ্রাচীন সৈন্যদের রণ সাজের প্রস্তুতি।
শিকার যাত্রায় মেয়েরা থাকেন সহযোগিনীর ন্যায়। তাঁরা প্রত্যেকে শুকনো খাবার প্রস্তুত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। চিঁড়ে, মুড়ি, চাল ভাজা, ভুট্টা ভাজা, মহুয়ার পিঠে ইত্যাদি প্রস্তুত করে পুঁটুলিতে বেঁধে শিকার যাত্রীদের হাতে তুলে দেয়।
শিকার যাত্রার দিন প্রত্যুষে গ্রাম হতে বেরবার মুখে তিন চারজন অবিবাহিত যুবক ধামসা সবাইকে বেরিয়ে আসার সংবাদ জানায়। আওয়াজ পাওয়া মাত্র শিকারীরা বেরিয়ে আসে। বেরবার সময় তাঁরা তাঁদের স্ত্রীর হাতের নোয়া খুলে দেয়। স্ত্রীরা শাল পাতায় মোড়া বা #পটম_ছাকা ভাতের পুঁটুলি হাতে দিয়ে চোখের জল মুছে বলে বন হতে মোর লাগি মাড়ার বাহ ( একপ্রকার বুনো ফুল) মনে করে এনো। স্বামী প্রতিশ্রুতি দিয়ে গৃহদেবতার উদ্দেশ্যে প্রনাম জানিয়ে পথ ধরে এগিয়ে যায়। আর একটি বারের জন্য ফিরে তাকায় না।
এই সময় শিকারে যাওয়া পুরুষদের স্ত্রীগন বৈধব্য পালন করেন। খুব কঠোর ভাবে এই নিয়ম পালন করেন তাঁরা। এই সময় কেউ কলসি নিয়ে বের হয় না। এই প্রথা এখনো পালিত হয়। এই প্রথার কথা বলতে গিয়ে আরো একটি কথা মনে পড়ল। দক্ষিণ ভারতের #দ্রৌপদী_কাল্ট সম্প্রদায় কারগা উৎসবের সময় এই একই নিয়ম পালন করে। একটু সেটা নিয়ে বলি। কারন এটা বলার দরকার আছে….
যাজ্ঞসেনী, পাঞ্চাল কন্যা, দ্রৌপদী ভারতের দক্ষিণ অংশে দেবী কালীকা, #কুলদেবী হিসাবে পূজিতা হন। তিনি #ভারনাকুল ক্ষত্রিয় সম্প্রদায় ও #টিগালা সম্প্রদায়ের মধ্যে কুল দেবী, রক্ষাকত্রী রূপে অবস্থান করেন। সেই দেবীকেই কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দ্রৌপদী বা দ্রৌপদ সম্প্রদায় দেবীর বাৎসরিক পূজার সময় বিভিন্ন নিয়ম বা সংস্কার পালন করে থাকেন। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল #কারাগা উৎসব বা কারগা প্রথা বলা হয়।
কারগা আসলে কর্ণাটকরর লৌকিক নৃত্য যা টিগালা ও ভারণাকুলার ক্ষত্রিয় সম্প্রদায় তাদের কুলদেবী দ্রৌপদীকে উদ্দেশ্য করে উৎসর্গ করে থাকেন। এই উৎসর্গ অংশকে #Droupthamma বলাা হয়।
রীতি অনুযায়ী একটি বৃহৎ আকার পাত্র জল ও অন্য কিছু গুপ্ত বস্তু দিয়ে ভরে, তাকে ফুলের মালা দিয়ে সুসজ্জিত করে কারগা নিয়ম পালন কারী তথা পুরোহিতরা মস্তকে ধারণ করে থাকেন। এর পর ‘থাভি’, ‘নাদশ্বরম’, ‘মুন্নি’, ‘উডুক্কা’, ‘পান্বা’ প্রভৃতি সংগীত যন্ত্রের শব্দের সাথে নিয়ম পালনকারীগন মাথায় কারগা নিয়ে বিভিন্ন কঠিন পদক্ষেপ ও মুদ্রা করে বা অস্ত্র ধারণ করে তান্ডব নৃত্য করতে থাকেন। নিচে বিস্তারিত ব্যাখ্যায় আসছি….
কারগা হল একধরনের মৃৎ পাত্র। অনেকটা বড় জালার মত দেখতে। এই কারগা যেহেতু দেবীর পূজায় উৎসর্গ করা হয় তাই এতে কিন্তু মৃত্তিকা ছাড়াও আরো বিভিন্ন রকম বস্তু ব্যবহার করা হয়। এই পাত্রের বিষয় বস্তু বা content একেবারেই গোপনীয় এবং যুগ যুগ ধরে সেই গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। পাত্র টি ফুলের মালা দ্বারা সুসজ্জিত হলে তা অনেকটা ছোট একটা পিরামিডের মত দেখতে লাগে। নিয়মপালনকারী ও পাত্র মস্তকে বহন কারীদের #ভিড়াকুমার বলা হয়। শত শত নিয়ম পালনকারী বা ভিড়াকুমারগন এই প্রথা পালন করতে আসেন। তারা খালি গায়, ধুতি পরে, মাথায় পাগড়ি পড়ে, হাতে খোলা তরবারী নিয়ে, মাথায় কারগা ধারণ করেন। ঐতিহ্যগত ভাবে বা নিয়ম অনুসারে এই নিয়ম পালনের সময় ভিড়াকুমারদের দেবীর ভর হয়। এই সময় তারা দেবীর উদ্দেশ্যে তান্ডব নৃত্য করতে থাকেন। ঐতিহ্যগতভাবে কারগা-বাহকদের সঙ্গে মানসিকভাবে উত্তেজিত বীরকুমারদের শোভাযাত্রা। তাঁরা অস্ত্র নৃত্য করতে করতে পড়ে যান…..তবে তা মৃত্যুরও কারন হতে পারে।
বেঙ্গালোর শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত ধর্মস্বামী মন্দিরে এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়। একে বেঙ্গালুর কারগা বলা হয়। ধর্মস্বামী মন্দিরটি সম্পূর্ণ ভাবে পান্ডব ও দ্রৌপদীর জন্য নিবেদিত এবং সম্পূর্ণ ভারতীয় উপমহাদেশে এমন মন্দির আর একটিও দেখা যায় না। দ্রৌপদী আম্মানের জন্য এইটি একটি বড় মন্দির। বাকি মন্দির গুলো এতই ছোট হয় যে পর্যটকদের নিকট অজ্ঞাত থেকে যায়।
আসলে কারগা একটি নারী শক্তিকে সম্মান যাপনের উৎসব। পতাকা বা ধ্বজা উত্তলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। প্রথম দিন ভিড়াকুমারগন ও দেবী পূজার পুরহিতগন বাম স্কন্ধে নতুন পৈতে ও হস্তে কংকন ধারণ করেন। এরপর পুরোহিত, ভিড়াকুমার ও চাকরিধারীগন একত্রে দেবীর বন্দনা করেন।
দ্বিতীয় দিন থেকে ষষ্ঠ দিন সন্ধ্যায় দেবীর আরতি করা হয়। এই আরতি ও পূজার সময় অষ্ট প্রকৃতির জলের উৎসকে ব্যবহার করা হয়। ষষ্ঠ দিন স্ত্রী লোকদের দ্বারা দেবী পূজিতা হন। যদিও এরমধ্যে ভিড়াকুমার ও পুরোহিতদের স্ত্রী গন থাকেন না। । এই দিন দীর্ঘ সময় ধরে দেবী পূজিতা হন। এই দিনকে আলোকের উৎসব বলেও অভিহিত করা হয়।
কারগা দুই ধরনের হয়, ১. হাসি কারগা ২. হুভিনা কারগা।
কারগা উৎসবের সপ্তম দিনকে #হাসি কারগা বলা হয়। এই দিন দেবীর বিবাহ হয়েছিল। তাই বিবাহের সমস্ত শুভ প্রতিকীর প্রতি সশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। নিয়মপালন কারী ভক্তদের বিশ্বাস এই দিন দেবী হ্রদ থেকে নব বধূর সাজে মাথায় কলস ধারণ করে উঠে আসেন। দেবী ঘটকে সেই অনুযায়ী হ্রদে অভিষেক করে ভিড়াকুমারগন দেবীকে মন্দির অবধি নিয়ে যান ও দেবী র পূজা সম্পন্ন করেন। অষ্টম দিনই পোঙ্গল নামক খাদ্য প্রস্তুত করে ভিড়াকুমারগনের স্ত্রী রা দেবীকে উৎস্বর্গ করেন। কিন্তু স্বামীর মুখ দেখেন না, এমনকি কারগাও দেখেন না। কেন সে ব্যাখ্যায় পড়ে আসছি….যা হোক, এই দিনটি পোঙ্গল উৎসব নামে পরিচিত। এই দিন বহু স্থানে উর্বরতার প্রতীক স্বরূপ জাল্লিকাট্টু অনুষ্ঠিত হয়।
পৌর্ণমাসি তে দেবীর বিবাহের অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি বিশাল নগর পরিক্রমার আয়োজন করা হয়। সারারাত ধরেই পরিক্রমা, অনুষ্ঠান ও নিয়ম নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় পৃথিবী র কোনো শক্তি এই পরিক্রমাকে থামাতে পারে না। এই সময় কারগা বাহকগন দেবীর প্রসাদ হিসাবে লেবু দান করেন ও বলেন” তোমার জীবনের সমস্ত অশুভ ও অমঙ্গল ও দুর্ভাগ্য দূরীভূত হোক” …
দশম দিনটি পান্ডবদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। একাদশ তম দিনে হয় বসন্ত উৎসব। এই দিন পতাকা নিম্ন মুখী করে কারগা উৎসব উদযাপন ও সম্পূর্ণ করা হয়।
ধর্মস্বামী মন্দির থেকে যেসব পরিবারের পুরুষদের কারগা উৎসবের জন্য মনোনীত করা হয় তারাই ভিড়াকুমার হন। করগা উৎসবে অংশগ্রহন কারী ভিড়াকুমারগন ও পুরহিতগন প্রায় উৎসবের ছয় মাস পূর্ব থেকে সন্নাস নিয়ম পালন করতে থাকেন। এই সময় তাঁরা তাদের স্ত্রী দের মঙ্গলসূত্র নিজেদের গলায় ধারণ করেন। এসময় নিয়মপালন কারীদের মধ্যে ভাব সমাধি হয়। এই সময় থেকে উৎসবের দশম দিন অবধি ভিড়াকুমারদের স্ত্রী তাদের স্বামীদের মুখ দর্শন করেন না, কারগা দেখেন না ও সম্পূর্ণ বিধবার জীবন যাপন করেন।
টিগালা সম্প্রদায়ের লোকেরা মনে করেন যে এই সময় নিয়ম পালনকারীদের মধ্যে দেবী দ্রৌপদী আম্মানের শক্তি ও ক্ষমতা পুঞ্জীভূত হয়। তাদের মধ্যে নারীস্বত্তা জাগরিত হয় এবং তারা নারীর মতই পোশাক পরে নগর পরিক্রমায় অংশ নেন। এই সময় ভিড়াকুমারগনের কারগা মাথায় নিয়ে তরবারী নৃত্য এক স্মরণীয় দৃশ্য হয়ে থাকে।
প্রায় বিজয়া দশমী থেকে ভিড়াকুমারগন ও পুরোহিতগন সন্ন্যাস পালন করেন। তাই কারগা উৎসব শেষে দশম দিন তাদের মুখ তাদের স্ত্রী রা দেখতে পান। এই দশম দিন পুনরায় তাদের মঙ্গলসূত্র পড়িয়ে দেবীকে সাক্ষী রেখে তাদের স্বামীরা পুনঃবিবাহ করেন।
কারগা যেমন নারী শক্তি উৎযাপনের উৎসব তেমনি সংযম পরীক্ষার উৎসবও বটে। তাই উৎসবের নগর পরিক্রমার সময় যখন পরিক্রমণকারী র দল ভিড়াকুমারাদের গৃহের সামনে এসে দাঁড়ায় তখন কেউ বাইরে আসে না। পাছে নিয়মকারী গৃহের পুরুষটি র মুখ দর্শন হয়ে যায়….
তো কারগা র সঙ্গে কি অদ্ভুত ভাবে শিকার উৎসবের মিল তাই না? যেহেতু স্বামী ফিরবেন কিনা কোনো ঠিক থাকে না তাই স্ত্রী রা নিজেদেরকে মানসিক প্রস্তুত করেন আগাম বৈধব্য গ্রহণ করে……
তো, শিকার উৎসবের সময় সকল নিয়ম পালন করে শিকারীগন গ্রামের জাহের থানে এসে প্রনাম করেন। জাহের এরা হলেন আদি মাতা …তিনি স্বয়ং দুর্গা…মারাং বুরু হলে আদি পিতা…পর্বত দেবতা..স্বয়ং মহাকাল মহাদেব…

ক্রমশ

Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.