মূষিকও কি পর্বত প্রসব করবে

Editorial
mushik o ki parbat prasab karbe
খুব হতাশ লাগছে বুঝি? বাজারি স্যাটালাইট চ্যানেলে আপনার চোখে বীর হয়ে ওঠা ডাক্তাররা হালুম হালুম-এর পরিবর্তে যেভাবে মিউ মিউ দিয়ে কাজ এবং মাননীয়া তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় gate নির্মাণের আশ্বাস প্রদান করে যেভাবে এই “দুঃসাহসিক” আন্দোলনের fate নির্ধারণ করে দিলেন, তাতে যে অনেকে ব্যাপক ক্ষুব্ধ, আশাহত হয়েছেন সন্দেহ নেই। কেবল তাই নয়, আন্দোলন চলাকালীনও অনেকে অভিযোগ করেছিলেন চিকিৎসকরা কেন সেই বিশেষ শ্রেণিটিকে [পড়ুন জিহাদি] বাঁচানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন এবং বিক্ষোভটিকে একটি সেকুলার মোড়কে ঢেকে ফেলেছেন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং জুড়ে ভেসে ওঠা এইসব স্টেটাসে তো কেউ কেউ এই মর্মেও হতাশা প্রকাশ করেছিলেন আন্দোলনের রাশ “মাকুদের” [পড়ুন মার্ক্সবাদী, এখানে অবশ্যই সি পি এম] হাতে চলে গেছে। হাততালিরও কমতি ছিলনা। মাননীয়ার এন আর এস-এ পদার্পন না করা, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা পরিবহকে দেখতে না যাওয়া, একটি পর একটি অমানবিক এবং বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য যেমন— ইন্টার্নশিপ কমপ্লিশন করতে দেবনা, এটা বহিরাগতদের আন্দোলন, আপনারা পদবী দেখে চিকিৎসা করেন ইত্যাদি বিক্ষোভের পারদকে চড়িয়ে দিতে থাকে। একের পর এক সরকারি হাসপাতাল থেকে শয়ে শয়ে ডাক্তার ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে আসেন। প্রশংসা, শ্রদ্ধা প্রকাশের উচ্ছ্বাস বাঁধ ভেঙে ফেলে। এন আর এস দিয়ে শুরু হওয়া এই গণ ইস্তফার ঢেউ রাজ্য থেকে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তথাপি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তারটিকে দেখতে যাওয়া তো দূরের কথা, এন আর এস-এর চৌহদ্দিও মাড়াননি। এমনকি রাজ্যপাল মহোদয়ও জানিয়েছেন অনেক প্রয়াস সত্ত্বেও মাননীয়ার সঙ্গে যোগযোগ করা সম্ভব হচ্ছেনা। রোগীদের এত হয়রানি, ভোগান্তি, বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পরে যে একটি সমাধান সূত্র পাওয়া গেছে, সেটি কী যথেষ্ট নয়? এখনও যারা অসন্তোষে মুখ বাঁকাচ্ছেন তাঁরা ঠিক কি আশা করেছিলেন বলুন তো? “বলো বীর চির উন্নত মম শির” কবিতাটি আউড়াতে আউড়াতে আন্দোলনকারী ডাক্তারেরা মাননীয়ার দপ্তরে প্রবেশ করিবে? নাকি জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলিয়া আকাশ পাতাল মথিত করিয়া, শ্লোগানে শ্লোগানে প্লাবন তুলিয়া মাননীয়াকে বলিবে— হে মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়া আপনি জিহাদিদের প্রশ্রয় এবং আশ্রয়দাত্রী ! আপনার লাই পাইয়াই উহাদের এত বাড় বাড়িয়াছে ! ডাক্তার পিটাইবার পরেও উহারা যে কেবল বুক ফুলাইয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে এমন নহে, টিভি, সংবাদপত্রে ইন্টারভিউ প্রদান করিতেছে ! কী দুঃসাহস ! প্রকৃত অপরাধীদের না ধরিয়া আপনি লোক দেখানো গ্রেপ্তার করিয়া দায় সারিয়াছেন। আমরা বাচ্চা জুনিয়র ডাক্তার [যদিও আমাদের যারা মারিয়াছিল, তাহারাও বয়সের নিরিখে বাচ্চা। কেবল মৃত ইমাম, থুড়ি রোগীটির বয়সই ৮০ বছরের উর্ধ্বে ছিল] হইতে পারি কিন্তু আপনার ছেলে ভুলানো কথায় কোনো কাজ হইবেনা। ওই জিহাদিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করিয়া আমাদের সম্মুখে আনয়ন করুন, এবং উত্তম মধ্যম প্রদান করুন। তবেই আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করিবার কথা ভাবিব। কারণ আমাদের আন্দোলনটিই হইল জিহাদি বিরোধী আন্দোলন। কারণ এই জিহাদিরাই যাবতীয় ডাক্তার নিগ্রহের জন্য দায়ী। আমাদের আন্দোলন কোনো মতেই সেকুলার নয়, ইহা প্রথম হইতেই জিহাদি বিরোধী।
আহা মধু ! আমি জানি মাননীয়ার সামনে “মিউ মিউ” না করে যদি এমন কোনো বক্তব্য রাখা হত আপনি যারপরনাই আনন্দিত হতেন। আর কি ঘটলে আনন্দিত হতেন?
মাননীয়ার সকল প্রস্তাব, হুংকার, আস্ফালন অগ্রাহ্য করিয়া সরকারি চাকরি, ইন্টার্ণশিপের মায়া চিরতরে বিসর্জনে পাঠাইয়া হাসপাতাল ছাড়িয়া উহারা যদি বিকল্প জীবিকা বাছিয়া লইত ! সিনিয়র ডাক্তাররা সরকারের দাক্ষিণ্য বর্জন করিয়া প্রাইভেট চেম্বারকেই জীবিকা অর্জনের স্থান হিসাবে নির্বাচন করিতেন। আপনিই চিৎকার করে বলতেন— আহা, এই না হলে বাঘের বাচ্চা !
আর কী ঘটলে তৃপ্তি পেতেন? বেশ এটাও বলে দিই ! মাননীয়া তথা প্রশাসনকে সুতীব্র ভাষায় আক্রমণ, আন্দোলনকে জঙ্গী আন্দোলনে পরিণত করা। এমন অবস্থার সৃষ্টি করা যাতে এসমার মত ভয়ংকর আইন জারি হয় এবং ডাক্তারদের কারাগারের অন্ধকারে নিক্ষেপ করার মত আবহ সৃষ্টি হয়। তাই না? আপনারা মনের মত বীর পেয়ে যেতেন ! তবে সবচেয়ে ভাল কী হত? মানে আপনার মনের মত ! তুমুল জঙ্গি হয়ে উঠে ওরা যদি নিজের হাতে জিহাদি দমন করতে বেরিয়ে পড়ত ! ইয়ে মানে আপনাদের প্রিয় গোপাল পাঁঠার মত! আপনি যে কী হারে হাততালি দিতেন ! ইয়ে মানে সাইডলাইনে বসে !
না, তেমন কিছু ঘটেনি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ওদের বারো দফা দাবি মেনে নিয়েছেন। সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আগামী কাল থেকেই হাসপাতালগুলি দুর্গ হয়ে উঠবে এমন ভাবা ভুল হবে। তেমন প্রতিশ্রুতিও ওরা আদায় করতে পারেনি। তাতে কি ! অচলাবস্থা তো কাটল ! দরিদ্র, অসহায়, অসুস্থ মানুষ যাদের সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু মিছিল আমাদের আত্মা এবং মনকে পীড়ন করলনা। সাধারণ মানুষ আবার ডাক্তারদের মানবিক মুখ দেখল। মাননীয়ার ঔদ্ধত্য এবং জেদ নিশ্চয় জিতে গেল। কারণ উনি এই বৈঠকের আগে একবারও এন আর এস-এ যাননি। আক্রান্তের সঙ্গে দেখাও করেননি। কিন্তু মানুষ তো জিতল। সাধারণ মানুষ। এ কি কম প্রাপ্তি ! শুধু তাই নয়। এতগুলো কমবয়সী ছেলেমেয়ে প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল, ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ল, রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশাটিকে আমাদের সামনে তুলে ধরল সে কী কম কৃতিত্বের? আর যাঁকে আপনারা দিবারাত্র নেতিবাচক বিশেষণে ভূষিত করেন, কী অপরূপ কুশলতায় একা হাতে সব সামলে দিলেন। শুধু কি তাই? যে চ্যানেলটিকে আপনারা অহর্নিশ কাঁচা খিস্তি করে থাকেন, কী অবলীলায় টি আর পি-র ক্ষীর পেট পুরে খেল! মাঝখান থেকে সন্দেশখালির জিহাদি লীলা খেলা এক চালেই ধামাচাপা! মাননীয়াকে এখনও অপরিণত ভাবছেন? নিশ্চয় নয়। এখনও বলছি উনি যা করেন, যা বলেন তার সিংহভাগই সুচিন্তিত এবং সুপরিকল্পিত। এবার আসি আন্দোলনের কথায়। স্পন্সর ছাড়া কোনকালেই কোনো বড় কাজ হয়না। আন্দোলন তো দূরের কথা। রাশিয়ার নভেম্বর বিপ্লবে সবচেয়ে বড় স্পনসর কারা ছিল বলুন তো? জার্মান বুর্জোয়ারা। তাঁরা লেনিন, স্তালিন, ট্রটস্কিকে উজাড় করে দিয়েছিলেন। জিহাদিদের বিরুদ্ধে জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলনের স্পনসর তো দূরের কথা, সে অর্থে পাশেও কেউ ছিলনা। কতিপয় কাগুজে, ফেবু হিন্দুত্ববাদী যারা এটির মধ্যে বীর প্রসবের সম্ভাবনা দেখেছিলেন, মাননীয়ার উৎখাতের সম্ভাবনা দেখেছিলেন, এমনকি রাষ্ট্রপতি শাসনের prelude হিসেবে কেউ কেউ চিত্রিত করে ফেলেছিলেন। কিন্তু বাস্তব অন্য কথা বলছে৷ সাধারণ মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন না। এমনকি বিরোধী রাজনৈতিক দলটিও তাঁদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ পরিষেবা চালু রেখে আন্দোলনের পক্ষপাতী মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছিল। অসুস্থ, অসহায় সাধারণ মানুষ এবং রোগীদের ক্ষোভ বাড়ছিল এবং এই ক্ষোভের টার্গেট প্রশাসন নয়, ডাক্তাররাই হচ্ছিলেন। মিডিয়াও তাঁদের পাশে ছিলনা। হাসপাতালে চিকিৎসা করতে এসে রোগীরা প্রশাসন বা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেন না, ডাক্তার এবং চিকিৎসা কর্মীদের দেখেন। পাশে না পেলে তাঁরাই ক্ষোভের শিকার হন। বাড়তে থাকা এই জন বিক্ষোভে ডাক্তারদেরও একটি face saver অর্থাৎ মুখরক্ষার সমাধান সূত্র জরুরি হয়ে পড়েছিল। মাননীয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তিনি চাইলে অবশ্য প্রথম দিনেই সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসত। একটিবার এন আর এস পরিদর্শন এবং আক্রান্তের সঙ্গে কথা বলাই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু তিনি তার ধার পাশ দিয়েও যাননি। বরং সমস্যাটিকে আরও জটিল এবং দীর্ঘায়িত করেছেন। কেন করেছেন? সন্দেশখালিই এর উত্তর জানে।
জুনিয়র ডাক্তারদের যারা ভীরু, আত্মসমর্পনকারী, পলাতক ইত্যাদি বলে অভিহিত করছেন, বারবার বলছেন মাননীয়ার সামনে ওরা ভেজা বেড়াল হয়ে গেল, তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু প্রশ্ন রাখতে চাই। ফেসবুকে দুঃসাহসী স্টেটাস দেওয়ার আগে নিজেকে কখনও প্রশ্ন করেছেন জিহাদি দমনই বলুন আর অন্যায়ের প্রতিবাদ বলুন আপনার ভূমিকাটি কি? ফেসবুকে আগুন ছড়ানো হিন্দুত্ববাদী বাঘ সিংহ তো কম দেখিনি। [ এদের মধ্যে অনেকেই আবার প্রকৃত নাম পরিচয় ব্যবহার না করে ফেইক আইডি ব্যবহার করেন। যদি জিহাদি বলে যারা পরিচিত তারা স্বনামে বুক ফুলিয়েই হুংকার দিয়ে থাকে। ] এঁদের অনেকেই পোস্ট করার পরে রিপোর্ট হওয়ার ভয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন ! এদিক ওদিক পোক করতে থাকেন। এই সব কাগুজে বাঘ [অবশ্যই যারা মাটি কামড়ে লড়াই করছেন তাঁদের কথা বলছিনা) একবার ভেবে দেখুন, জিহাদের বিরুদ্ধে, হিন্দুত্ববাদের পক্ষে স্টেটাস লিখতে গিয়েও কত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কখনও কেউ রিপোর্ট মারে, কখনও প্রেমিকা চটে যায়, বউ ধমক দেয়— দিনরাত এসব কি ছাতার স্টেটাস দিচ্ছ ! সেধে কেউ বিপদ ডাকে। এসব বাদ দাও, নইলে আমার কথা ভুলে যাও ! বন্ধু বিয়োগ তো আছেই। এবার এই ডাক্তারদের কথা ভাবুন। এরা সরকারি চাকুরে। সার্ভিস রুল মেনে কাজ করতে হয়। একবার দাগ পড়ে গেলে, কারাবাস ঘটলে যে কী ভোগান্তি হতে পারে সহজেই অনুমেয়। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলে আপনি দায়িত্ব নেবেন? বীর দেখার খুব সাধ না? নিজে কবার বীর হয়েছেন? জিহাদি আক্রান্ত হিন্দুকে উদ্ধারের জন্য কতবার ছুটে গেছেন? ডায়মণ্ড হারবার, সন্দেশখালী, দেগঙ্গা? কী বললেন? কেন্দ্রীয় বাহিনী? রাষ্ট্রপতি শাসন? অত সোজা? আপনার হিসেব আছে, ছক আছে, কতটা বলবেন, কতটা এগোবেন, কতটা দূর থেকে জল মাপবেন ! আর রাজনৈতিক দলের হিসেব থাকবেনা? আপনি চাইলেই জরুরি অবস্থা জারি হয়ে যাবে? লপিপপ নাকি? ডাক্তারদের যদি একের পর এক জেলে পোরা হত, আপনি ছাড়িয়ে আনতে যেতেন? ইয়ে মানে কালিয়াচকের মত থানা জ্বালিয়ে ! ওরা পারে। আমরা পারিনা। কেন বলুন তো? ওদের মত একতা আমাদের নেই, সাপোর্ট সিসটেমও নেই। তাই সন্দেশখালি থেকে চোখ ঘোরাতে ওরা অনায়াসে ডাক্তারের উপর হামলা করতে পারে। মেট্রোপলিটান লীলা খেলায় গ্রাম গঞ্জের চাইতে অনেক বেশি গিগাবাইট মেলে। অতএব শুরু করে দাও। এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা। এখানেও একটা ভয়াবহ অশনি সংকেত আছে। যতই আইডেন্টিটির লড়াইয়ের কথা বলুন, উত্তেজক স্টেটাস দিন, জিহাদিদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই থেকে আমরা এখনও আলোকবর্ষ দূরে। যাদের হাতে কুড়ুল কোদাল লাঠিই বেশি কার্যকরী, তাঁরাও যদি কলম নিয়ে বসে থাকেন, মাঠে ঘাটে দেখা মেলেনা, তবে অবস্থা এমনই হবে। জিহাদিরা এক্ষেত্রে খুব ভাল ভাবেই শ্রম বিভাজন সেরে ফেলেছে। কারা কলমে লড়বে, কারা শস্ত্রে।
আপনি কি ভেবেছিলেন? সমগ্র রাজ্য, দেশ পৃথিবী জুড়ে যে জিহাদি আধিপত্য তার বিরুদ্ধে জুনিয়র ডাক্তাররা রুখে দাঁড়াবে এবং জয়লাভ করবে? পর্বত মাঝেমধ্যে মূষিক প্রসব করে বটে কিন্তু কখনও শুনেছেন মূষিক পর্বত প্রসব করছে? জিহাদিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে দেশ বিদেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা পাতলুন ভিজিয়ে ফেলছে, মহাপরাক্রমশালী আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির দেওয়া তথ্যপ্রমাণ ( সৌদি যুবরাজই ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন) হাতে আসা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নিতে সাহস পাননা, সিয়ার তদন্তকেই ভুল প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগেন, আর আপনি ভাবছেন জুনিয়র ডাক্তাররা দুনিয়া উলটে দেবে!
আসুন, বাস্তবটা বুঝে নিই। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনই বলুন আর আজ সূত্রপাত হওয়া শিক্ষকদের আন্দোলন বলুন, এসবের কোনোটিই জিহাদি বিরোধী বিক্ষোভ, আন্দোলন নয়। এসবই আসলে জীবিকা গোষ্ঠীর আন্দোলন। অর্থাৎ বিশেষ পেশায় নিযুক্ত মানুষ আক্রান্ত হলে অথবা অন্য ধরনের অবিচার, অত্যাচার নেমে এলে সেই পেশার লোকজন প্রতিবাদে ফেটে পড়বেন। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে যত আঘাত, আক্রমণ নেমে আসুক, এঁরা মুখে কুলুপ এঁটে দিনগত পাপক্ষয় করে যাবেন। এই যেমন ধরুন, ডায়মণ্ড হারবার বা সন্দেশখালিতে ঘটে যাওয়া জিহাদি আক্রমণ। বেশ কয়েকজন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রমণকারী জিহাদিদের পরিচয়ও গোপন নেই। কিন্তু এক্ষেত্রে কি ডাক্তার বা শিক্ষক কোনো গোষ্ঠী সরব হয়েছেন? পথে নেমেছেন? পঞ্চায়েতের প্রাণহানির কথা তো ছেড়েই দিলাম। না, কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করার কথা বলিনি। নিদেন পক্ষে একটি মৌন মিছিল ! না এমন নমুনা একটিও পাবেননা। কারণ জিহাদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সেই মানের সচেতনতাই তৈরি হয়নি। যৎকিঞ্চিত হলেও “কী দরকার বাবা ঝামেলায় জড়িয়ে” এই মানসিকতা নিয়েই সবাই দিবানিদ্রা দিয়ে চলেছেন। ডাক্তারের উপর হামলা না হলে ডাক্তারের কিছু যায় আসেনা। শিক্ষকদের উপর অন্যায় অবিচার না হলে তাঁদেরও কিছু যায় আসেনা। আজ তাঁরা কেন পথে নামলেন? কেন, মাইনে বাড়ানোর দাবিতে ! স্কেল পাচ্ছেন না যে। কবে থেকে পে কমিশনের মুলো ঝুলছে ! তবে কী দাঁড়াল? সেই পেশাদারী স্বার্থ ! অর্থাৎ মাইনে কড়ি সব ঠিক ঠাক দিলে সবাই আবার লক্ষ্মী ছেলে হয়ে দিদি বন্দনায় মেতে উঠবেন। ডায়মন্ড হারবার, সন্দেশখালি চুলোয় যাক। জিহাদি আক্রমণ? সেটা আবার কি ! এবার আপনিই বলুন সন্দেশখালির অত্যাচারিত মানুষটি, ডায়মন্ড হারবারের ঘর ছাড়া পরিবারটি এই ডাক্তার, শিক্ষকের আন্দোলনে থাকবে? সমর্থন করবে? প্রশ্নই ওঠেনা। স্পষ্ট জানিয়ে দেবে— শহুরে বলে তোমাগো রক্তের দাম বেশি নাকি? গেঁয়ো মনিষ্যির জীবনের দাম নাই? শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। জিহাদি শক্তির চাপে একের পর এক বিদ্যালয়ে যখন সরস্বতী পূজা বন্ধ হয়ে যায়, প্রতিবাদ তো দূরের কথা, একদিন বাড়তি ছুটি পাওয়া গেল [যেহেতু স্কুলে আসতে হবেনা] এই আনন্দে বিভোর হয়ে ঘরে ফেরেন। কিন্তু ডিএ, মাইনের উপর আঘাত নেমে এলে এঁরা সুতীব্র প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন।
হ্যাঁ এভাবেই বিচ্ছিন্নতার অন্ধকার গাঢ় থেকে গাঢ়তর হচ্ছে। এ নিছক গ্রাম শহরের বিভাজন নয়, স্বার্থের বিভাজন, স্টেটাসের বিভাজন যা দিয়ে কখনও আইডেন্টিটির লড়াই চলেনা। প্রতিপক্ষ কত শক্তিশালী, কত শত দেশ জুড়ে জিহাদিদের জাল, কত সহস্র বিলিয়ন ডলার খরচ করে জিহাদ প্রোমোট করা হয়, আপনাদের ধারণা আছে? কয়েকশ জুনিয়র ডাক্তারের কাছে কী আশা করেন? পোপ আরবান দ্বিতীয়-র ভঙ্গিমায় ওরা কি ক্রুসেইডের ডাক দেবে?
যারা বিপদটি বুঝেছেন, তাঁরাও কি ঐক্যবদ্ধ হতে পারছেন? না, পারছেননা। সে প্রচেষ্টাও নেই। সোফা, বিছানার নিরাপদ ঘেরাটোপ থেকে [যদিও এখন কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়। মনের ছলনা মাত্র] জ্বালাময়ী স্টেটাস দিচ্ছেন আর অপেক্ষা করছেন কে কখন বীর হয়ে ওঠে। হ্যাঁ, অন্যের বীর হয়ে ওঠার অপেক্ষা। নিজের নয়। কারণ বীর হওয়া ব্যাপক ঝামেলার কাজ। জীবনের ঝুঁকিও আছে। তবে অন্য কেউ হলে প্রাণ খুলে হাততালি দেওয়া যায়। এই যেমন কেউ কেউ ভেবেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা এমন সব বীর হয়ে উঠবেন !
গ্যালিলিওর কথা মনে পড়ছে। অশীতিপর বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলাই, চূড়ান্ত অত্যাচার ও নিগ্রহের কাছে নতি স্বীকার করে জনসমক্ষে ঘোষণা করেছিলেন তাঁর আবিষ্কার বা তথ্য কোনোটিই ঠিক নয়— –আসলে সূর্যই পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তন করছে। এ ক্ষেত্রে টলেমী কথিত এবং রোমান ক্যাথোলিক চার্চের অনুসৃত ভূকেন্দ্রিক ব্রহ্মাণ্ডের ধারণা-ই যথাযথ। কারণ এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের পুত্র জেসাস ক্রাইস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পৃথিবীর একটা প্রেস্টিজ আছে ! সে কেন ঘুরতে যাবে? দরকার হলে ব্রহ্মাণ্ডের যাবতীয় গ্রহ, নক্ষত্র তার পাশে ঘুর ঘুর করবে !
গ্যালিলিও যখন হার স্বীকার করে ফিরে আসছেন, তখন সমবেত জনতা থেকে একটি কণ্ঠস্বর ভেসে আসে – “হায় আমার দুর্ভাগা দেশ, তুমি কোনো বীরের জন্ম দিতে পার না ! ওই যে পরাজয় স্বীকার করে ফিরে যাচ্ছে একজন কাপুরুষ !”
গ্যালিলিও দাঁড়িয়ে পড়েন। স্মিত হেসে বলেন – “দুর্ভাগা সেই দেশ যে দেশে এখনও বীরের প্রয়োজন হয় !”
সত্যিই বড় দুর্ভাগা আমাদের দেশ। তাই এত বীরের প্রয়োজন। আমরাও অপেক্ষা করে চলেছি। কিন্তু কোথায় সেই বীর? কখনও সেনা বাহিনী, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান, কখনও জুনিয়র ডাক্তারের আন্দোলন, অথবা জিহাদিদের বিরুদ্ধে একাকী লড়াই করে মৃত্যুর দেশে চলে যাওয়া কোনো এক যুবকের মধ্যে আমরা বীর খুঁজে চলেছি। তবে আমরা নিজেও কি একবারও বীর হয়ে উঠিনা? আলবাত উঠি। কখন? কেন, ভারত পাকিস্তান যখন ক্রিকেট খেলে।

Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.