হেমলক

Magazine
sunday story hemlock

শেখর ভারতীয়

বুবু একদম দৌড়বি না, আস্তে হাঁট। এরম লাফাতে লাফাতে কেউ চলে?
এত জোরে ছুটিস না বুবু আমি পিছিয়ে পড়ছি তো।
বুবু থামে না ছুটে এগিয়ে যায় সোমলতাকে ফেলে, ভিড়ে মিশে যায়, পেছন থেকে চিৎকার করে ওঠে সোমলতা,
বুবুউউউউউ……
ঘুমটা ভেঙ্গে যায় সোমলতার।
না ঘামে ভিজে যায়নি শরীর, এঘরে এসি, ঘরের দেওয়ালও রংওঠা নয়, না স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের মেঝে। বরং লেক-ফেসিং ১২০০ স্কোয়ারফুটের এই ফ্ল্যাট, মার্বেল বসানো মেঝে, দেওয়ালে নামী শিল্পীর দামী পেন্টিং। দুধের সরের মত বিছানা, তকতকে বাথরুম, ইয়া বড় একটা এল ই ডি টিভি, জলের জন্য অ্যাকোয়াগার্ড, বরফের জন্য ফ্রিজ। কোন অ্যাঙ্গেল থেকেই বৃদ্ধাশ্রমের মত বৃদ্ধাশ্রম নয় এটি। বুবু নিজেকে ছাড়া আর কোন কিছুরই অভাব রাখেনি এঘরে। ওকেও দোষ দিতে পারে না সোমলতা। বুবুর ছোটা-দৌড়ার চাকরি, আজ আসাম তো কাল ব্যাঙ্গালোর। একটা বৌ থাকলে তাও বা হত, বিয়েও দিয়েছিল সোমলতা বেশ সাজিয়ে। সে বিয়ে টেকেনি, বছর দুয়ের মধ্যেই বিচ্ছেদ.. তারপর বুবুর কাজের মধ্যে ডুবে যাওয়া আর এই বৃদ্ধাশ্রমে…
ওহ সরি, এটা বৃদ্ধাশ্রম হতে যাবে কেন, ভারী সুন্দর সাজানো ঘরদোর, ২৪ ঘন্টা দেখাশুনার লোক, নিজের ইচ্ছেমত খাওয়া, বাগানে বেড়ানো, কখনো নিজে শপিং মলে গিয়ে টুকটাক কেনাকাটা, ইচ্ছে হলে সিনেমাও। এটা আর যাই হোক বৃদ্ধাশ্রম নয়। এখানকার মালিক এটার নাম রেখেছেন ‘হ্যাপি-হাউস’। বুবু বাড়িতে থাকে না তাই এদের দায়িত্বে মাকে রেখে যাওয়া। ঢোকার সময় নগদ ১০ লাখ টাকা নিয়েছে এরা, এখানে এই নিয়ম। এই রুমটার ডেকোরেটিংও বুবুর চুজ করা। সোমলতা অবশ্য কোন আশ্রমেই যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু ছেলের তা পছন্দ হয়নি, তাই এই ব্যবস্থা। সোমলতার বাড়িতেও এসবের কোন কিছুর অভাব ছিল না, কাজের মেয়ে শ্যামলী চলে গেলে কথা বলার আর কোন লোক থাকত না এই যা। সেই ৪০ বছর বয়সে একটা অ্যাকসিডেন্ট সোমলতার বিবাহিত প্রেমকে তার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল। তারপর মোটামুটি একাই থাকে সোমলতা, তবে বয়স বাড়লে একটা কথা বলার লোক থাকলে…
-এই যে বান্ধবী, কখন ঘুম ভেঙ্গেছে শুনি?
এই তো এই মাত্র উঠলাম..
হুম্ম মিথ্যে কথা, দুবার রুমে উঁকি মেরে দেখেছি তুমি চুপচাপ বসে আছো। কি এত ভাবো সারাদিন বসে বসে বলতো?
জেরা শুনে হাসতে থাকে সোমলতা, পাগলি মেয়ে একটা, এই
হ্যাপি-হাউস এর মালিকের ভাইঝি, ঝিনুক, এখানে থাকা সবকটা বুড়ো-বুড়ির সাথে ওর দারুন সম্পর্ক, কারও বান্ধবী তো কারও মেয়ে তো কারও গার্লফ্রেন্ড.. কত যে নাম ওর। সারাদিন একটাই কাজ কি ভাবে খুশি রাখবে সোমলতাদের। সকাল থেকেই গঙ্গাফড়িংয়ের মত এঘর ওঘর করে বেড়ায়।
আবার ভাবতে বসলে? কি এত ভাবছো বলতো?
তোর কথা,
আমার কথা? কি আমার কথা?
থাক আমার কথা ভাবতে হবে না, বরং রেডি হয়ে নাও, আজ সবাই মিলে ভিক্টোরিয়া ঘুরতে যাবো দুপুরে।
তুই যা, আমার কি আর সে বয়স আছে?
আমার কি আর সে বয়স আছে (মুখ ভেংচিয়ে), অত কথায় কাজ নেই চুপুচাপ রেডি হও, ৪০ মিনিটের মধ্যে আসছি, যেমন অবস্থায় থাকবে তুলে নিয়ে যাবো।
মাথায় পটি দেওয়া, বিছানায় শুয়ে আছে সোমলতা, একটু বেশি রাত করে ঘুম ভাঙ্গে তার। চোখ খুলে দেখে তার হাঁটুর উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে পাগলি মেয়েটা। সোমলতার অনেকদিনের একটা মেয়ের শখ ছিল। কিন্তু বুবুর পর সেটা আর হয়নি, তারপর ভেবেছিল বুবুর বিয়ে দিয়ে, সেটাও আর হল কই। কিন্তু এই মেয়েটি, সত্যি এত মমতা, এত ভালোবাসা এই আট-ন মাসেই কিরকম যেন ওকে নিজের মেয়ে ভাবতে ভালো লাগে সোমলতার। আদর করে ঘুমন্ত পাগলিটার মাথায় হাত বোলায় সোমলতা।
ওহ তুমি জেগে গেছ বান্ধবী, দাঁড়াও লাইটটা জ্বালি, জল দি তোমাকে। হড়হবড়িয়ে উঠতে যায় ঝিনুক।
হাত ধরে টেনে ওকে নিজের পাশে বসায় সোমলতা।
তুই ঘুমোসনি ঝিনুক?
আর ঘুম! তুমি ঘুমোতে দিলে কোথায়! কতবার বলি সাবধানে বাথরুম যাবে, আমাকে ডাকবে, নয়ত পার্থদাকে, শুনলে তো, দেখলে তো পড়ে গিয়ে কি কান্ড বাঁধালে..
-লাইট জ্বালতে হবে না তুই আমার পাশে বোস একটু, হ্যাঁ রে মেয়ে, তুই কি আগের জন্মে আমার মেয়ে ছিলি? বুকে জড়িয়ে ধরে সোমলতা ঝিনুককে, সোমলতার চোখের জল কাঁধ গড়িয়ে পিঠে নেমে আসে ঝিনুকের। ঝিনুকের চোখের কোণাটাও কিরকম ভেজা ভেজা লাগে, নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় ঝিনুক। রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
হ্যাপি-হাউসের বাগানে সব গাছ, ফুল মোটামুটি চেনা সোমলতার, খালি বাগান জুড়ে থাকা এই লম্বা লম্বা চেরা চেরা পাতার এই গাছগুলিকে চিনতে পারে না সোমলতা। বাগানের একধারটা জুড়ে ভরে আছে ওই গাছ, দেখতেও কি মিস্টি। ঝিনুক মাঝে মাঝে এর পাতা তুলে নিয়ে যায়। সোমলতা জিজ্ঞেস করায় ও বলেছিল কি একটা বিদেশি গাছ, ও ঠিক জানে না, এর পাতা রুমে রাখলে নাকি রান্নাঘরে পোকামাকড় আসে না। আজ বুবুর জন্মদিন, তাই বিকেলেই বুবুর আসার কথা এখানে, সোমলতার ইচ্ছে করছে প্রতিবারের মত ও বুবুর জন্য পায়েস বানাবে, আর তাছাড়াও আরোও একটা ব্যাপার আছে, আজ ঝিনুক আর বুবুকে দেখা করাতে চায় সোমলতা, যদি ঝিনুককে পছন্দ হয় বুবুর তাহলে….
নতুন করে নিজের বাড়ি, নিজের সংসারের গল্প দেখতে শুরু করে সোমলতা।
আসার থেকে মা তো আপনার কথাই বলে গেলেন, আপনি মায়ের জন্য যা করছেন..
কে বান্ধবী? সব সময় বাড়িয়ে বলা, একদম বিশ্বাস করবেন না!
না না, আমি নিজেও তো দেখলাম
আজ সারাদিন যেভাবে আপনি..
ছাড়ুন ওসব, বলছি চা খাবেন? না হলে কফি? চলুন একটু কফি খেতে খেতে গল্প করা যাক।
একটি ২২ বছরের মেয়ে, আর একটি ৩০ পেরোনো ছেলের বন্ধুত্বের কিংবা একটি ৬০ পেরোনো মায়ের নতুন করে আশার শুরু হয়।
এখানে আসা অবধি রোজ বিকেলে চা খাওয়ার অভ্যেস করিয়েছে ঝিনুক, প্রথম প্রথম ভালো লাগত না। কিন্তু এখন বিকেলের ওই চা খেতে খেতে ঝিনুকের সাথে আড্ডাটার জন্য অপেক্ষা করে থাকে সোমলতা। বিকেল হয়েছে অনেকক্ষন আগেই কিন্তু আজ ঝিনুক আসছে না কেন? এখন তো ওর রান্না ঘরেই থাকার কথা, সোমলতার অস্থিরতা ওকে রান্নাঘরের দিকে টেনে নিয়ে যায়।
একটা ট্রেতে কাপে কাপে চা রাখা, পাশেই একটা কৌটোয় কিসের যেন একটা গুঁড়ো, সেখান থেকে এক চামচ করে সবুজ গুঁড়োটা বের করে প্রতিটা কাপে মেশায় ঝিনুক।
পাশে দাঁড়িয়ে তদারকি করে ঝিনুকের কাকু, হ্যাপি-হাউসের মালিক।
ঝিনুক তুই গুঁড়োটা ঠিকঠাক মেশাচ্ছিস তো? ভারী গলায় বলেন হ্যাপি-হাউসের মালিক।
হ্যাঁ কাকু।
কি হ্যাঁ কাকু, তাহলে কাজ হতে এত দেরি কেন হচ্ছে? এমাসে একটাও খুশির খবর আসল না কেন? একটাও বুড়ো বুড়ি মরল না?
দেখিস এ সপ্তাহের শেষে হলেও যেন একটা…
হ্যাপি-হাউসের রেপুটেশনের প্রশ্ন, তাছাড়া নতুন পার্টি চাপ দিচ্ছে ১৫ লাখ পর্যন্ত দিতে রাজী।
৩৪ নম্বর বেডটা খালি হল বলে, মনে হয়না বুড়িটা এ মাস পেরোবে, তুমি ১৫ লাখের অর্ডারটা নিয়ে নাও কাকু।
দুজনের মুখেই হাসির রেখা ফুটে ওঠে।
হ্যাপি-হাউসের সবই ভালো, তবে একটা জিনিস খুবই কাকতালীয়, এখানে থাকতে আসা কোন
বুড়ো-বুড়িই বছর তিনেকের বেশি বাঁচে না, যদিও সব কটা মৃত্যুই ভীষন স্বাভাবিক।
ঝিনুক, গুঁড়োটাতো শেষ মনে হচ্ছে রে, আজই বাগান থেকে হেমলকের কয়েকটা ডাল ভেঙ্গে আনিস, গুঁড়োটা করে রাখতে হবে। বাগানের সেই নাম না জানা গাছটা থেকে ডাল ভেঙ্গে আনতে যায় ঝিনুকের কাকু। আর চায়ের ট্রে হাতে বুড়ো-বুড়িদের রুমের দিকে এগিয়ে যায় তাদের প্রিয় ঝিনুক।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.