সোমরস

Travel
somras
সোমরস নিয়ে অনেক গপ্পকথা প্রচলিত। আজ কেউ কেউ মনে করেন সোমরস, Absynthe অর্থাৎ ফরাসি অ্যাঁঁবাস্যৎ এর মতো চরম কিছু। চোঁ করে পিয়ে নিলে ভাই বোন গুলিয়ে যায়। আজ সেই বিতর্কিত সোমরস, যা যজ্ঞকালীন পেয় হিসেবে স্বীকৃত ছিল বৈদিক যুগে, সেটি নিয়ে সত্যি গল্প বলব।
অশ্বিনীকুমার দুজন ছিলেন শূদ্র দেবতা। পাঠক ভাবছেন শূদ্র আবার দেবতা কি প্রকারে? এটাই তো মজা ! যদিও অশ্বিনী কুমারদের বাবা ছিলেন ব্রাহ্মণ। স্বয়ং শ্রীমান সূর্য্যদেব, তা সত্ত্বেও ওরা যেহেতু চিকিৎসক, মানে সার্ভিস বা সেবা দেন তাই কর্মভাগে শূদ্র। সেই হেতু ওঁদের যজ্ঞের সোমরসে ও যজ্ঞভাগে অধিকার ছিল না। কি ভাবে পেলেন? সে ও এক মজার গল্প !
মহারাজ শর্য্যাতি একবার মেয়েকে নিয়ে বনের মধ্যে বনভোজনে এসেছিলেন। রাজকন্যা সুকন্যা ছেলেমানুষ। ঘুরতে ঘুরতে এসেছিলেন এক উইঢিবির পশে। উনি কি করে জানবেন উই ঢিবি আসলে বহু বছর ধরে তপস্যামগ্ন ভৃগুপুত্র চ্যবন? মহর্ষি সবে ধ্যান ভেঙে উঠেছেন, উইঢিবির মধ্যে চকচকে কিছু দেখে রাজকন্যা হস্তধৃত কাঠি দিয়ে দিলেন এক খোঁচা। ঋষির তো টালমাটাল অবস্থা। ব্যপার দেখতে পারিষদ সহ রাজা এলেন দৌড়ে। এত সম্মানজনক মহর্ষির সাথে এই আচরণের প্রায়শ্চিত্ত করতে প্রজ্ঞাবান পারিষদরা রাজাকে পরমর্শ দেন রাজকন্যার সাথে মহর্ষির বিয়ে দেওয়া হোক। রাজার আদরের দুলালী ! রাজা পড়েন দো টানায়। কিন্তু আট রকম বিবাহের মধ্যে ব্রহ্ম বিবাহ সবচেয়ে ভালো। ব্রহ্ম বিবাহ মানে যে পুরুষ ব্রহ্মচর্য পালনের পরে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করার পর বিয়ে করেন ও নারীরা সেই সূত্রে প্রাজ্ঞ পতি ও তারফলে বুদ্ধিমান সন্তান লাভ করার সুযোগ পান। Pure Genetics আর কি ! তো রাজা রাজি হন। সুকন্যা কিছু বোকা মেয়ে ছিলেন না, তার পরিচয় আমরা পরে আরো পাব। উনি বাবাকে সান্ত্বনা দিয়ে চ্যবনের হাত ধরে রাজমহলের সুখ ছেড়ে তপোবনে চলে আসেন। সব ঠিক ছিল শুধু চ্যবনের বয়স তপস্যা করতে করতে বেড়ে গেছিল প্রচুর। তাই উনি বিয়ের সব শর্ত পালনে অক্ষম ছিলেন। সুকন্যা এসব না ভেবে সংসারের বাকি কাজে ব্যস্ত রাখতেন নিজেকে। একদা সুপ্রভাতে নদী থেকে জল নিয়ে যখন রাস্তা আলো করে রূপসী ফিরছেন, অশ্বিনীকুমার দুজন মুগ্ধ হয়ে ওঁকে অনুসরণ করে বাড়ি অবধি চলে আসেন ও সঙ্গপ্রার্থনা করেন। সুকন্যা তো রেগে আগুন তেলে বেগুন। অশ্বিনীকুমার দের যুক্তি জলের মত সোজা। বৃদ্ধ পতি যখন বিয়ের সব শর্ত পালনে সক্ষম নন, তখন ওঁদের চাহিদা ধর্মত অন্যায় নয়। বুদ্ধিমতি সুকন্যা ব্রহ্মজ্ঞানী পতি ও তপোবনের শান্তি ছাড়তে নারাজ। উদার চ্যবনও তখন ভালোবাসায় লীন। উনি নিজেও সুকন্যা কে ইচ্ছেমতো পতি নির্বাচনের অনুমতি দেন। অশ্বিনীকুমাররা কিছু কম বুদ্ধিমান ছিলেন না ! নইলে আর ডাক্তার তাও আবার দেবচিকিৎসক হবেন কিভাবে? মোক্ষম চালটি দেন এবার। বলেন, চ্যবনের যৌবন ফিরিয়ে দেবেন, তার বদলে ওঁদের যজ্ঞভাগের অধিকার আর সোমরস পানের অধিকার করে দিতে হবে। চ্যবন পাওয়ারফুল ঋষি ছিলেন, ওঁর কথা দেবতারা না শুনলে বিপদ ! ওইটা আসল কারণ ছিল তারজন্য এত্ত নাটক ! এই শর্তে সব্বাই খুশ। বিখ্যাত চ্যবনপ্রাশ খেয়ে আর কায়কল্প treament করে চ্যবন ফিরে পেলেন যৌবন। সুকন্যা পেলেন যুবক পতি আর অশ্বিনীকুমার গণ পেলেন যজ্ঞভাগ ও সোমরস পানের অধিকার !
যে সোমরসের জন্য এত্ত উর মাটি চুর হল, এবার আসি সেই প্রসঙ্গে। যারা চ্যবনপ্রাশের মত এত জবরদস্ত জিনিস বানাতে পারেন যা খেয়ে বুড়ো, যুবক হয়ে যায় তাঁরা কি আর সোমলতার ঝোল বানিয়ে নিজেরা খেতে পারতেন না? এত কান্ডের কি দরকার ছিল?
ভগবান শ্রী কৃষ্ণ বলছেন,
त्रैविद्या मां सोमपाः पूतपापा
यज्ञैरिष्ट्वा स्वर्गतिं प्रार्थयन्ते।
ते पुण्यमासाद्य सुरेन्द्रलोक-
मश्र्नन्ति दिव्यान्दिवि देवभोगान्। ।
অর্থাৎ, যারা বেদ অধ্যয়ন করতে করতে সোমরস পান করেন ও স্বর্গ প্রার্থনা করেন তাঁরা আসলে অপ্রত্যক্ষ রূপে আমারই ভজনা করে অন্তিমে সুরেন্দ্রলোক তথা স্বর্গলাভ করে দেবতাদের মতো সুখভোগ করেন।
কেউ কেউ মনে করেন সোমরস অধুনা হিন্দুকুশ পর্বতজাত ওষধি সোমলতা থেকে উৎপাদিত হত। সেজন্য ঋগ্বেদের 10.34.1 নম্বর সূক্ত উদ্ধৃত করে থাকেন “सोमस्येव मौजवतस्य भक्षः”। কিন্তু এ ব্যপারে কিছু সন্দেহ আছে। নিরুক্ত তে উল্লিখিত মুজবান পর্বত আসলে ঋগ্বেদে উল্লিখিত মোজবত নাও হতে পারে। কারণ সুশ্রুত সংহিতাতে মুজ্জবান, সোমের পর্যায় রূপে বর্ণিত আছে।
ঋগ্বেদে বলা আছে, প্রবল সোমরস পানের ইচ্ছা পোষণকারী ইন্দ্রদেব শুদ্ধ দইমিশ্রিত সোমরসের ভাগ পান। (ঋগ্বেদ -1/5/5)
আবার ঋগ্বেদের 1/23/1নম্বর সূক্ত তে বলা হয়েছে, হে বায়ুদেব এই সোমরস ঝাঁঝালো হাওয়ার কারণে এটি দুধ মিশিয়ে বানানো হয়েছে, আপনি এসে এটি পান করুন।
। । शतं वा य: शुचीनां सहस्रं वा समाशिराम्। एदुनिम्नं न रीयते। । (ঋগ্বেদ -1/30/2)
এর অর্থ, নীচের দিকে প্রবাহিত জলের মতো, শত কলসি জলে, হাজার কলস দুগ্ধ মিশ্রিত সোমরস ইন্দ্রদেবের প্রাপ্য হোক।
সোমরস তৈরির বিবরণ ও ঋগ্বেদে বর্ণিত আছে।
। । उच्छिष्टं चम्वोर्भर सोमं पवित्र आ सृज। नि धेहि गोरधि त्वचि। । (ঋগ্বেদ 28 শ্লোক 9)
অর্থাৎ পিষ্ট সোম পাত্র থেকে বের করে পবিত্র কুশ এর উপর এবং ছেঁকে নেওয়ার জন্য রাখা হোক মানে পিউরিফিকেশন এর পদ্ধতি আরকি !
। । स्वादुष्किलायं मधुमां उतायम्, तीव्र: किलायं रसवां उतायम। उतोन्वस्य पपिवांसमिन्द्रम, न कश्चन सहत आहवेषु। । - ঋগ্বেদ (6-47-2)
অর্থাৎ সোমরস তীব্র স্বাদবিশিষ্ট মধুর মত স্বাদু পানীয়, যিনি এটি পান করেন তিনি বলশালী হন।
এই অবধি বোঝা গেল নিশ্চয় সোমরস কিছু মাদক নয় ! আরেকটি প্রমাণ দিই।
। । हृत्सु पीतासो युध्यन्ते दुर्मदासो न सुरायाम्। ।
ঋগ্বেদে সুরার নিন্দা করে বলা হয়েছে সুরাপানকারী ব্যক্তি মারপিট যুদ্ধ ইত্যাদি মন্দ কর্মে লিপ্ত থাকেন। সুতরাং কোনো বস্তুর একইজায়গাতে প্রশংসা এবং নিন্দা হতে পারে না, তাই না?
এবার ফিরে যাই গল্প যেখানে শেষ হয়েছিল। যারা চ্যবনপ্রাশ এর মতো একটা জিনিস বানাতে পারে যা বিজ্ঞানের এত উন্নতি সত্ত্বেও আধুনিক যুগে বানানো সম্ভব হয় নি, তাঁরা সোমরস বানিয়ে পান করতে পারল না? মহর্ষি চ্যবনকে কেন প্রয়োজন হল তাদের? এর সাথে ব্রহ্মজ্ঞান এর কি কিছু সম্পর্ক ছিল?
দেখে নিই ঋগ্বেদ এ ব্যাপারে কি বলছেন …
सोमं मन्यते पपिवान् यत् संविषन्त्योषधिम्। सोमं यं ब्रह्माणो विदुर्न तस्याश्नाति कश्चन। । ঋগ্বেদ (10 -85 -3)
অর্থাৎ বহু লোক এটা মনে করেন, সোম খাওয়া বা পান করা যায়, কিন্তু সোম আসলে আধ্যাত্ম জ্ঞান লাভ হলে শরীরের ভিতর উৎপন্ন হয়, এই অমৃতস্বরূপ পরম তত্ত্ব কেবল প্রাজ্ঞজন উপলব্ধি করতে পারেন। বিষয় টি খাদ্য পানীয় ইত্যাদির মতো ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয় নয়।
মহর্ষি চ্যবন যেহেতু এই বিশেষ জ্ঞানে জ্ঞানী ছিলেন তাই ওঁর সুনজরে আসা দরকার ছিল। অশ্বিনীকুমারগণ শেষে সোমরস পান করেন নি লাভ করেছিলেন।
বহু রূপক গল্প দিয়ে জীবনযাপনের সারমর্ম বেদে ব্যখ্যা করা হয়েছে। চর্যাপদে যেরকম সান্ধ্যভাষা, সেরকমই বেদে রয়েছে বিবিধ রূপকল্প দিয়ে জীবনের পরম সত্যের উদঘাটন।
শেষে একটি মিষ্টি গল্প বলি। যৌবন লাভের পর চ্যবন যখন ফেরেন, দুষ্টুমি করে অশ্বিনীকুমার দুজনে চ্যবনের মতোই রূপ ধারণ করেন। সুকন্যা কে পরীক্ষা করাই উদ্দেশ্য। সুকন্যা নিজের স্বামী কে চিনে নেন ! কিভাবে? খুব সোজা … চ্যবনের চোখে রোজকার মতোই ভালোবাসা ছিল, আর অশ্বিনীকুমারদের চোখে অপরিচিতের কামনা !
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.