রাখিগড়ি সভ্যতা, প্রতিষ্ঠিত বৈদিক ভারতীয় সংস্কৃতি ও বহিরাগত আর্য আগমন তত্ত্ব খারিজ
এতদিন ধরে যাঁরা বলে এসেছেন, আর্যরা বাইরে থেকে এসে এদেশের অনার্যদের আক্রমণ করে তাদের এলাকা দখল করে তাদের দক্ষিণ ভারতে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের এবার নতুন করে লিখতে হবে ভারতের ইতিহাস। কারণ, রাখিগড়ি সভ্যতা প্রমাণ করে দিচ্ছে, আর্যরা ভারতের মানুষ এবং বৈদিক সংস্কৃতি হলো খাঁটি ভারতীয় সংস্কৃতি।
তাহলে আর দেরি কেন, চলুন যাই রাখিগড়ি। ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসার জেলার একটি গ্রাম এই রাখিগড়ি। দিল্লি থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই প্রত্নক্ষেত্র থেকে প্রাক্-হরপ্পীয় যুগের সভ্যতার যে নিদর্শণ আবিষ্কৃত হয়েছে, তা বহিরাগত আর্য আগমন তত্ত্ব খারিজ করে বৈদিক সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি নির্ণায়ক স্থান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। রাখিগড়ি শিবালিক পাহাড়ে উদ্ভূত প্রাগৈতিহাসিক দৃষদ্বতি নদীর উপত্যকায় অবস্থিত। ঋগ্বেদে উল্লিখিত এই দৃষদ্বতি নদীর বর্তমান নাম ঘঘ্ঘর নদী। সরস্বতী নদীর একটি উপনদী হলো চৈতঙ্গ, আবার সরস্বতী হলো এই ঘঘ্ঘর নদীর একটি উপনদী।
এই ঘঘ্ঘর নদীর পূর্বে পুরোনো নদী উপত্যকায় এই এলাকার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আরও কয়েকটি প্রত্নক্ষেত্র রয়েছে, যেমন— কালিবঙ্গান, কুণাল, বালু, ভীর্রাণা ও বানাওয়ালি। এই রাখিগড়ি হচ্ছে সিন্ধু-পূর্ব সভ্যতার নিষ্পত্তিস্থান, যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল খ্রিস্ট পূর্ব ৬, ৫০০ অব্দে। পরবর্তীকালে ২, ৬০০-১, ৯০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ নাগাদ এটি সিন্ধু সভ্যতার অংশ হয়ে যায়। দেশভাগের পর হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো বর্তমানে পাকিস্তানে পড়ে গেছে বলে সেখানে সব সময় সবার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়, তাদের দু: খের কোনো কারণ নেই। কারণ, সিন্ধু সভ্যতার জন্মের বহু আগের বৈদিক সভ্যতা ছিল এই রাখিগড়ি। আয়তনের দিক দিয়েও রাখিগড়ি বেশি বড়ো।
মহেঞ্জোদারো যেখানে ৩০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে, সেখানে রাখিগড়ি রয়েছে ৩৫০ হেক্টর এলাকা জুড়ে। আর ঘঘ্ঘর ও হাকরা নদীর সমভূমিতে রাখিগড়ির ঢিবি এলাকার আকার প্রায় ৮০ থেকে ৫৫০ হেক্টর। নদী বর্তমানে এখান থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে সরে গেছে। রাখিগড়িতে ৯ টি ঢিবি রয়েছে, যা আর.জি.আর.-১ থেকে আর.জি.আর.-৯ হিসেবে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের দ্বারা চিহ্নিত। এর মধ্যে খনন কাজ হয়েছে আর.জি.আর.-১ থেকে আর.জি.আর.-৩ এবং আর.জি.আর.-৬ থেকে আর.জি.আর.-৯ ও আর.জি.আর.-৪-এর কিছু অংশে। আর.জি.আর-৫ ঢিবিটি জনবহুল রাখিশহপুর গ্রামের মধ্যে অবস্থিত বলে খনন কাজ করা যায়নি।
ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে ১৯৯৭ থেকে ৩ টি শীতকালে এখানে খননকাজ চালানো হয়। তারপর অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগে সি.বি.আই তদন্তের পর বছরের পর বছর ধরে বন্ধ থাকে খননকাজ। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ এখানে জরিপ করে খননকাজ শুরু করে এবং এই খননকাজ সম্পর্কে সামান্য তথ্য প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৯৯৭ ও ২০০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের প্রত্নতত্ত্ববিদ্ অমরেন্দ্র নাথ দত্তের নেতৃত্বে এখানে খননকাজ পরিচালিত হয়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের পরিচালিত এই প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজে রাখিগড়ি সভ্যতার পুরো শহরটির আকার প্রকাশ পায় এবং প্রমাণিত হয়, এটি প্রাক্-হরপ্পীয় যুগের সভ্যতা। এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে পাকা রাস্তা, পয়: প্রণালী, বৃষ্টির জল সংগ্রহ ও সঞ্চয় ব্যবস্থা, টেরাকোটা ইঁট, মূর্তি, ব্রোঞ্জসহ বহুমূল্য ধাতু ব্যবহারের দক্ষতার প্রমাণ। পাওয়া গেছে সোণা ও আধা-মূল্যবান পাথর থেকে তৈরি চুড়ি।
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শণগুলির ৬ টি রেডিও-কার্বন ডেটিং পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে রাখিগড়ি সভ্যতার প্রাক্-গঠনমূলক, প্রারম্ভিক হরপ্পা ও পূর্ণ হরপ্পা স্তরের বিষয়টি। এখানে সাম্প্রতিক সময়ে ডেকান কলেজের (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) উপাচার্য, বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ্ বসন্ত শিণ্ডে এবং লক্ষ্ণৌ বীরবল সাহানী ইনস্টিটিউট অব্ প্যালিওসায়েন্সস্-এর ডি.এন.এ গবেষণাগারের প্রধান নীরজ রাই এখানে পাওয়া নরকংকাল নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। তাঁরা ১৪৮ টি নরকংকাল নিয়ে প্রাণীদেহের কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় (mitocondrial) ডি.এন.এ পরীক্ষা চালান। পরীক্ষা চালানো হয় হায়দরাবাদের সেন্টার ফর্ সেলুলার অ্যাণ্ড মলিকুলার বায়োলজি’ তে। নমুনা পাঠানো হয় আমেরিকার হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলে। সব জায়গা থেকে এক-ই রিপোর্ট আসে, রাখিগড়ির নরকংকালের মধ্যে মধ্য এশিয়া, এমনকি, ইরাণেরও কোনো সম্পর্ক নেই। নরকংকালগুলির দাঁত, করোটিসহ শরীরের অন্যান্য অংশের হাড়গোড় সবকিছুই ছিল অক্ষত, কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এদের কেউ খুন করে নি।
সুতরাং, আর্যরা ছিলেন এই ভারতের মানুষ এবং তাঁরা এখানকার অনার্যদের মেরে খুন করে তাদের দক্ষিণ ভারতে তাড়িয়ে দেন নি। সব মিলিয়ে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসার জেলার এই রাখিগড়ি সভ্যতা প্রমাণ করে দিচ্ছে, হরপ্পীয় সভ্যতার মানুষেরা ছিলেন স্থানীয় ভারতীয়। প্রাচীন ভারতে বৈদিক সভ্যতার যে জন্ম, বিকাশ ও ক্রম বিবর্তন হয়, তা ছিল সম্পূর্ণভাবেই খাঁটি ভারতীয়। তাই আর্যরা বাইরে থেকে আসেন নি, তাঁরা ছিলেন ভারতেরই মানুষ।
প্রত্নতত্ত্ববিদ্ বসন্ত শিণ্ডে জানাচ্ছেন, রাখিগড়ি সভ্যতার মানুষদের মৃতদেহ সমাধি দেওয়ার সঙ্গে ঋগ্বেদের যুগের হুবহু মিল আছে। মৃতদেহ সৎকারের আগে তাঁরা যে মন্ত্র বা প্রার্থনা জানাতেন, বিগত প্রায় ৬ হাজার বছর পরেও এখনো সেই ধারা প্রচলিত রয়েছে।
তাই সব শেষে আবার বলা যায়, আর্যরা বহিরাগত নন, তাঁরা ভারতীয় এবং তাঁদের তৈরি বৈদিক সংস্কৃতিও খাঁটি ভারতীয়। আর তার প্রমাণ দিচ্ছে রাখিগড়ি। ২০১২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে গ্লোবাল হেরিটেজ ফাণ্ড ঘোষিত এশিয়ার ১০ টি বিপন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থানের মধ্যে রাখিগড়ি রয়েছে। তবে রাখিগড়ি এখনো ব্যাপক প্রচারের আলোয় আসে নি। যেদিন আসবে, সেদিন থেকেই ভারতীয়দের মন থেকে খারিজ হতে থাকবে বহিরাগত আর্য আগমন তত্ত্ব। ভারতের ইতিহাসের পাতায় নতুন করে লেখা হবে, বৈদিক আর্যরা ছিলেন ভারতেরই লোক।
তথ্যসূত্র:
1) Harrapan interments at Rakhigarhi( Man and Environment, XL(2)11: Amarendra Nath (2015).
2) Excavations at Rakhigarhi (1997-2000), ASI Report: Amarendra Nath.
3) Sinde, Vasant; Green Adam; Parmer, Narendra; Sable, Pp. 2012-2013: Bulletin of the Deccan College Research Institute, 72/73: 48.
4) Harrapan interments at Rakhigarhi .( International Journal of Informative and Futuristic Research): Rakesh K. Sharma, Sukhvir Singh( May, 2015).
5) Wright Rita P.: The Ancient Indus: Urbanism, Economy and Society, Cambridge University Press, 2009, p-133.
6) Possehl, Gregory L: The Indus Civilization: A Contemporary Perspective, 2nd Print, 2002, Walnut Creek, C.A., AltaMira Press,
7) Tejas Garge (2010): Sothi-Siswal Ceramic Assemblage: A Reappraisal Ancient Asia, 2nd, pp-15-40.
8) Rakhigarhi, The Biggest Harappan Site, The Hindu, 27/03/2014.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.