মদ্যপান যুগে যুগে
বৈদিক যুগ থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত যে তরল পানীয়টিকে ঘিরে সমাজ ও পরিবারে একই সঙ্গে আনন্দ আর অশান্তি বয়ে এনেছে, তার নাম “মদ।”
বৈদিক যুগে যা ছিল “সোমরস”, তান্ত্রিকদের কাছে তা হলো “কারণ”, আবার আম-আদমির কাছে তার নাম “মদ্য”, চলতি কথায় “মদ।”
সাধক বামাক্ষ্যাপা বলতেন, মদ খেলে মানুষ সরল হয়। ঠিক কথা। মদ্যপান করার পর সেই মানুষটি গলগল করে তার ভেতরের যাবতীয় কথা উগরে দেয়। এ কারণে অনেক ক্ষেত্রে অপরাধীর নাগাল পেতে মাতালদের ব্যবহার করা হয়। আবার কেউ কাউকে জব্দ করতে চাইলে পেঁচি মাতালকে দু’ বোতল খাইয়ে তাকে দিয়ে গালাগাল দেওয়ানো হয়। আর আনন্দ উৎসবে মদ-মোচ্ছব তো জাতি-ধর্ম, মালিক-শ্রমিক, আমীর-ফকির— -সবাইকে এক সুতোয় গেঁথে দেয়। সুতরাং মদের বিকল্প হলো আরও তেজি মদ। যুগে যুগে এই মদই মানুষকে আনন্দে-অশান্তিতে ভরিয়ে রেখেছে।
তবে মদ্যপায়ীকে কেউ কোনোদিন ভালো চোখে দেখেনি। সমাজ চিরকালই তাকে ঘৃণা করে এসেছে। শাস্ত্রে মদ্যপায়ীকে “মহাপাতক” বলা হয়েছে। তবুও মদ্যপায়ীর সংখ্যা তো কমেইনি, বরং বেড়েছে। মদ্য বিষয়টিকে দেখভালের জন্য সরকারি আবগারি বিভাগ চালু রয়েছে। সুতরাং, বোতলসুন্দরী এখন বিচিত্রগামিনী।
রামায়ণের সুন্দরকাণ্ডে (৫ ম কাণ্ড ) একটি “আদর্শ” পানশালার বর্ণনা দেখতে পাচ্ছি আমরা। সেখানে সোনার কলসিতে মদ ভর্তি রয়েছে। আর বড়ো বড়ো সোনার থালায় সাজানো রয়েছে ময়ূর আর মুরগির মাংস, সরবৎ আর ফলের রসপাত্র। তবে সবকিছুই এলোমেলো। বসার চৌকিগুলো উল্টে পড়ে রয়েছে। একেবারে সদ্য মাতালের কাণ্ড!
অন্যদিকে, সীতার খোঁজে হনুমান রাবণের লংকায় গিয়ে সেখানেও পানশালা দেখেছিলেন। সেখানে “আসব”, “মাধ্বীক”, “মৈরেয়ক”, “পুষ্পাসব”, “ফলাসব” প্রভৃতি নামের রকমারি সুরা সম্ভার দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছিলেন পবনপুত্র।
আবার রামায়ণের অযোধ্যা কাণ্ডে আমরা দেখতে পাচ্ছি, সীতা বনবাসে যাবার পথে মা-গঙ্গার কাছে মানত করছেন, তিনি মাংস-ভাতের সঙ্গে হাজার কলসি মদ দিয়ে তার পুজো দেবেন।
অন্যদিকে, মহাভারতেও আমরা মদের যথেচ্ছ ব্যবহার দেখতে পাচ্ছি। অর্জুনপুত্র অভিমন্যুর বিয়েতে প্রচুর মদ্যপানের আয়োজন করা হয়েছিল। এ থেকে স্পষ্ট, মহাভারতের যুগে উৎসব অনুষ্ঠানে মদ্যপান দোষের ছিল না। মহাভারতের বিশাল যদুবংশ ধ্বংস হয়েছিল মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপানের কারণেই। মহাভারতের উদ্যোগ পর্বের একটি দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে কৃষ্ণ ও অর্জুনের বেহুঁশ অবস্থার ছবি।
ভীমসেন তো মদ্যপান করেই যুদ্ধে যেতেন। সাত্যকীও ছিলেন মদ্যপ। মহাভারতযুগে অভিজাত পরিবারের মহিলারাও মদ্যপান করতেন। তার উদাহরণ, মহিষী সুদেষ্ণা। তিনি পিপাসার সময় জলের বদলে মদ্যপান করতেন। তবে মদ্যপান যে নিন্দনীয় ছিল, তার প্রমাণ মেলে মহাভারতেই। যেমন, কর্ণ মদ্রদেশের মহিলাদের মদ্যপান করাকে তিরস্কার করছেন। মদ্যপান থেকে নানারকম সামাজিক বিশৃঙ্খলা হতো বলেই কর্ণের এই তিরস্কার। আর এজন্যই পরবর্তীকালে আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের সময়ে এবং তার আরও পরে গ্রিক ঐতিহাসিকরা ভারতবাসীর মদ্যপান বর্জনের প্রশংসা করেছেন। মদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা ও সামাজিক দুর্নীতির কারণে “মদ” ও “মদ্যপায়ী” চিরকাল নিন্দিত হয়ে এসেছে আমাদের সমাজে। গ্রিক ঐতিহাসিকদের লেখায় তারই প্রতিফলন ঘটেছে।
ঋকবেদের যুগে একপ্রকার বনজ লতাপাতা থেকে তৈরি হতো উত্তেজক পানীয় “সোমরস।” পরবর্তীকালে যখন সেইসব লতাপাতা দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠলো, তখন তার জায়গায় এলো “ইক্ষু” অর্থাৎ আখ। বাংলার বহু দুর্গামন্দিরে মা দুর্গার পুজোয় চাল-কুমড়ো বলি দেওয়ার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। কালিকা পুরাণে দেবীর সামনে “বলি” দেবার কথা আছে। এই কুমড়ো আসলে নরমুণ্ডের প্রতীক আর পুজোয় ব্যবহৃত আখ, গুড় বা আজকের দিনের চিনি কিংবা বাতাসা হলো মদের প্রতীক। আখ থেকেই তৈরি হয় মদ বা সুরা অর্থাৎ অ্যালকোহল।
বাংলার ধর্মরাজ পুজোয় কলসি কলসি মদের “ভাঁড়াল” ( ভাণ্ডার ) নিয়ে দেয়াশিরা আজও নাচেন। বর্তমান ঝাড়খণ্ডের দুমকার কাছে “চোটুনাথ” -এর পুজো দিতে আবশ্যিকভাবেই মদ লাগে।
ভারতে, বিশেষ করে বাংলায় চর্যাপদের যুগে মদের যে যথেচ্ছ ব্যবহার ছিল, তার প্রমাণ রয়েছে বিভিন্ন চর্যাগানে। যেমন,—
“এক সে শুণ্ডিনি দুই ঘরে সান্ধ্যঅ।
চীঅণ বাকলঅ বারুণী বান্ধঅ। ।
সহজে থির করী বারুণী সান্ধ।
জেঁ অজরামের হোই দিঢ় কান্ধ। ।
দশমি দুআরত চিহ্ণ দেখাইআ।
আইল গরাহক অপনে বহিয়া। ।
চউশঠী ঘড়িয়ে দেল পসরা।
পাইঠেল গরাহক নাহি নিসারা। ।
এক ঘুড়লী সরুই নাল।
ভনন্তি বিরুআ থির করি চাল। ।”
অর্থাৎ এক শুঁড়ি নারী দুজনকে নিয়ে ঘরে ঢোকে, মদ ফেনায় এবং দরজায় চিহ্ণ দেখে গ্রাহকরা এসে হাজির হয়। চৌষট্টি কলসি মদের পসরা সাজানো। গ্রাহক ঢুকলো, কিন্তু বেরোল না। একটি ছোট্ট কলসি, সরু তার নল। বিরুআ বলেন, স্থির করে চালাও।
এখানে বলা দরকার, আমাদের দেশের বাঙালি জাতির ইতিহাসে “শুঁড়ি” নামে একটি জাতির উল্লেখ রয়েছে, যাদের পেশা হলো মদ তৈরি এবং বিক্রি করা। গোপ পিতা এবং শূদ্র মাতার গর্ভজাত সংকরবর্ণ এই শুঁড়ি জাতি। চর্যাপদের যুগে শুঁড়ি বাড়ির দরজায় একটি সাদা কলসি বা সাদা পতাকা বসানো থাকতো এবং এটিই ছিল “মদের দোকান” -এর সাইনবোর্ড।
ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর প্রথম জীবনে মদ স্পর্শ করেননি। মাত্র ১১ বছর বয়সে পিতৃহারা বাবর সমরকন্দ-কাবুলের মতো নিত্যব্যবহার্য মদ্যপানের জায়গায় থেকেও আশ্চর্যজনকভাবে মদ্যপান থেকে বিরত রেখেছিলেন নিজেকে। পরবর্তীকালে অবশ্য ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ভারত আক্রমণের সময়ে কাবুলের কাজাকাস্থানে এক অতিথির ঘরে বাবর জীবনে প্রথম মদ্যপান করেন। এরপর চলেছিল তার নিয়মিত মদ্যপান। কিন্তু পাণিপথের প্রান্তরে ইব্রাহিম লোদীকে পরাজিত করে “বাদশাহ” হবার পর ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দের ৫ ই ফেব্রুয়ারির পর বাবর জীবনের মতো মদ্যপান করা ছেড়ে দিলেন। একজন সম্রাটের পক্ষে এরকম কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ বাবরের মতো পুরুষের পক্ষেই সেকালে সম্ভব হয়েছিল। তাঁর পছন্দের সোনা-রূপোর সমস্ত পেয়ালাগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিলেন বাবর এবং সেগুলিকে দেশের গরিব ও দরবেশদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর যেখানে পানশালার সমস্ত মদ ঢেলে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে তৈরি করলেন একটি দাতব্যশালা। এছাড়া বাবর তাঁর রাজদরবারের সমস্ত পাত্র-মিত্র-সৈন্য-সামন্তদের ডেকে সুরা বর্জনের কঠিন প্রতিজ্ঞা করালেন। বাদশাহ বাবরের এই দাতব্যশালা ক্রমেই হয়ে উঠেছিল দেশের মধ্যে মদ্যপান বিরোধী একটি প্রতীক !
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.