লক্ষ্মণসেনের হাতে পরাজিত হয়েছিলেন বখতিয়ার
খ্রিস্টিয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর মুসলিম ঐতিহাসিক মিনহাজউদ্দিনের লেখা “তবকৎ-ই-নাসিরি” অনুসারে, ১২০২ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ১৮ জন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে নদীয়া আক্রমণ করেছিলেন তুর্কি সৈনাধ্যক্ষ বখতিয়ার খিলজি। এখানে সৈন্য সংখ্যা ছিল ১৮ এবং বখতিয়ারকে নিয়ে মোট ১৯ জন।
মিনহাজউদ্দিনের তথ্যেই প্রমাণিত, বখতিয়ার সামনা-সামনি আক্রমণ না করে চোরের মতো অতর্কিত হামলা চালিয়েছিলেন লক্ষ্মণসেনের নদীয়ায়। তাও আবার রাজমহল-দ্বারবঙ্গের সোজা পথে নয়, লুকিয়ে বীরভূম-ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল পথে। কারণ, সোজা পথে লক্ষ্মণসেনের জোরদার পাহারার ব্যবস্থা ছিল।
তাই বখতিয়ার সামনাসামনি লক্ষ্মণসেনের মুখোমুখি হতে সাহস করেন নি। ঘোড়া বেচতে আসার নাম করে ছলনার আশ্রয় নিয়ে আসলে অতর্কিত একটি হামলা চালিয়েছিলেন বখতিয়ার। সামনাসামনি যুদ্ধ হলে বখতিয়ারের শক্তি পরীক্ষা হতো, কিন্তু তা হয়নি।
আর নদীয়া সেনরাজ লক্ষ্মণসেনের রাজধানী ছিল না, এটি ছিল তাঁদের গঙ্গাবাস। বর্তমান নদীয়া জেলার নবদ্বীপ শহরের ওপারে ভাগীরথীর অপর তীরে মায়াপুরের বামনপুকুর এলাকায় রাজা বল্লালসেনের ঢিবি আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি সেনরাজাদের গঙ্গাবাসকেই মনে করিয়ে দেয়। রাজধানী হলে তার পরিকাঠামো অন্যরকম অবশ্যই হতো।
তবে বখতিয়ার দ্রুতবেগে সৈন্যবাহিনী নিয়েই এগোচ্ছিলেন। তার বাহিনী পিছিয়ে পড়েছিল। মাত্র ১৮ জন তার সঙ্গী হতে পেরেছিল। সেজন্য বখতিয়ার লক্ষ্মণসেনের মুখোমুখি হতে সাহস করেন নি।
বখতিয়ারের ইচ্ছে ছিল, কোনোরকমে লক্ষ্মণসেনকে পণবন্দি করা। সেজন্য বখতিয়ারকে ঘোড়া বিক্রেতা সাজতে হয়।
দুপুরবেলায় খেতে বসেছিলেন লক্ষ্মণসেন। গোলমাল শুনে সবকিছু বুঝতে পেরে খিড়কির দরজা দিয়ে নৌকোযোগে চলে গেলেন পূর্ববঙ্গে।
এই পরিস্থিতিতে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেব একবার পালাতে গিয়ে সারাজীবনের জন্য খোঁড়া হয়ে গিয়েছিলেন। শিবাজীকে দমন করতে আওরঙ্গজেব তখন দাক্ষিণাত্যে শিবির স্থাপন করেছেন এক নদীর ধারে। রাতে নদীতে বান এসে যায়। এর ফলে সৈন্যরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। আওরঙ্গজেব ভাবলেন, শিবাজী বুঝি আক্রমণ করেছেন! তাড়াহুড়ো করে পালাতে গিয়ে এমন হোঁচট খেলেন যে, সারা জীবনের জন্য খোঁড়া হয়ে গেলেন।
(– শর্ট হিস্ট্রি অব্ আওরঙ্গজেব, ১৯৩০, পৃষ্ঠা-৩৬৪): যদুনাথ সরকার )
এক্ষেত্রেও লক্ষ্মণসেন উপস্থিত বুদ্ধির জোরে বেঁচে যান। নদীপথে তাঁর অপরাজেয় কৈবর্ত সেনাবাহিনী তৈরিই থাকতো সবসময়। এই কৈবর্ত নৌসেনাদের সাহায্যেই লক্ষ্মণসেন একসময় বাংলা থেকে নদীপথে সুদূর প্রয়াগ পর্যন্ত নৌবাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুধু তাই নয়, যৌবনে লক্ষ্মণসেন কলিঙ্গ বিজয় করেছিলেন। বিহারের গয়া থেকে অসমের কামরূপ এবং উড়িষ্যার কলিঙ্গ থেকে পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুর পর্যন্ত প্রসারিত ছিল রাজা লক্ষ্মণসেনের সাম্রাজ্য। কাজেই এ হেন বীর যোদ্ধা প্রায় আশি বছরের প্রবীণ লক্ষ্মণসেনের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধের সাহস দেখান নি বখতিয়ার। আর রাজধানী নয়, গঙ্গাবাস নদীয়ায় একটি অতর্কিত হামলা চালিয়ে বখতিয়ার ফের ফিরে গিয়েছিলেন বিহারে। কাজেই বখতিয়ার বঙ্গবিজয় করেন নি।
আর পরে পূর্ববঙ্গ থেকে রণসাজে বখতিয়ারের মুখোমুখি হয়েছিলেন লক্ষ্মণসেন। এ বিষয়ে আমরা ড: নীহাররঞ্জন রায়ের সাক্ষ্য গ্রহণ করবো।
সে সময় চারপাশেই ছিল হিন্দু রাজত্ব। উত্তর-বিহারে মিথিলাকে কেন্দ্র করে হিন্দু কর্ণাটক রাজবংশের আধিপত্য, কনৌজের সিংহাসনে আসীন রয়েছেন জয়চন্দ্রপুত্র হরিশ্চন্দ্র, রোহতাস অঞ্চলের হিন্দু মহানায়কেরা তখনও নিজেরা স্বাধীনভাবে রাজত্ব করছেন, ওদিকে বিহারের শোন নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে নবনেরাপত্তনের সামন্তরা রয়েছেন স্বমহিমায়। এই অবস্থায় কোনো হিন্দু রাজশক্তিকে উৎখাত করতে সাহস করেননি বখতিয়ার। রাজশক্তি যেখানে শিথিল, সেসব জায়গায় সুযোগ বুঝে হামলা চালিয়ে লুঠপাট করাটাই ছিল বখতিয়ারের উদ্দেশ্য।
মিনহাজের “তবকৎ-ই-নাসিরি” লেখার বছর দশেক পর আরেকজন ঐতিহাসিকের লেখা পাওয়া যায় এ বিষয়ে। এই ঐতিহাসিকের নাম— ইসমী এবং তাঁর লেখা গ্রন্থের নাম— “ফুতুহ্-উস্-সালাতিন।” ইসমী বলছেন, বখতিয়ার ঘোড়া বিক্রেতার ছদ্মবেশে নদীয়ায় ঢুকে প্রাসাদের বাইরে দাঁড়িয়ে তাদের আনা তাতার ঘোড়া, চিনা পোষাক ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র দেখার জন্য লক্ষ্মণসেনের কাছে খবর পাঠালেন। লক্ষ্মণসেন ঘোড়াদের বিশ্রামের জায়গায় এসে দাঁড়ালেন। বখতিয়ার তাঁকে বহু মূল্য এক উপহার দিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে অনুচরদের ইশারা করলেন লক্ষ্মণসেনের রক্ষীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে। বখতিয়ার বাহিনী তাই করলো। একদল হিন্দু রক্ষীর দল লক্ষ্মণসেনকে ঘিরে রেখে এমনভাবে আক্রমণ চালাতে লাগলো, যা দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে গেল বখতিয়ার বাহিনী।
ইতিমধ্যে বখতিয়ারের দলছুট অশ্বারোহী বাহিনী এসে পড়লো।
এবার লক্ষ্মণসেন আর কালবিলম্ব না করে খালি পায়েই খিড়কির দরজা দিয়ে ভাগীরথী দিয়ে নৌকোপথে চলে গেলেন সোজা পূর্ববঙ্গে।
তবে পূর্ববঙ্গ থেকে ফিরে “ম্লেচ্ছ” বখতিয়ারের মুখোমুখি হয়েছিলেন লক্ষ্মণসেন। এ তথ্য আমরা পাচ্ছি লক্ষ্মণসেনের দুই সভাকবি শরণ ও উমাপতি ধরের লেখায়। শরণ লিখছেন,
“ভ্রূক্ষেপাদ্ গৌড়লক্ষ্মীং জয়তি বিজয়তে কেলিমাত্রাৎ কলিঙ্গান্
চেতশ্চেদিক্ষীতীন্দোস্তপতি বিতপতে সূর্যবদ্ দুর্জনেষু।
স্বেচ্ছাম্লেচ্ছান্ বিনাশং নয়তি বিনয়তে কামরূপাভিমানং
কাশীভর্তু: প্রকাশং হরতি বিহরতে মুর্ধ্নি যো মাগধস্য। ।”
অন্যদিকে, উমাপতি ধর লিখছেন,
“সাধু ম্লেচ্ছ নরেন্দ্র সাধু ভবতো মাতৈব বীরপ্রসূর্
নীচেনাপি ভবদ্বিধেন বসুধা সূক্ষত্রিয়া বর্ততে।
দেবে কুট্যতি যস্য বৈরিপরিষন্মারাঙ্কমল্লে পুর:
শস্ত্রং শস্ত্রমিতি স্ফুরন্তি রসনাপত্রান্তরালে গির: । ।”
কবি শরণ লক্ষ্মণসেনের ম্লেচ্ছরাজকে পরাজিত করার কথা বলছেন, আবার উমাপতি ধর একইভাবে বলছেন মারাঙ্কমল্লদেবের হাতে ম্লেচ্ছ অর্থাৎ তুর্কিদের পরাজয়ের কথা। উমাপতি ধরের এই “মারাঙ্কমল্লদেব” হলেন লক্ষ্মণসেন। আর যেহেতু নদীয়ায় হামলার আগে বাংলায় লক্ষ্মণসেনের সঙ্গে বখতিয়ারের কোনো যুদ্ধের রেকর্ড শরণ ও উমাপতি ধরের লেখায় নেই, সেহেতু বলাই যায়, নদীয়ায় হামলার পরের ঘটনা এটি। ঐতিহাসিক ড: নীহাররঞ্জন রায়ও সেটাই মনে করেন। সোজা কথায়, নদীয়ায় হামলাবাজির পর লক্ষ্মণসেন পূর্ববঙ্গ থেকে সসৈন্যে ফিরে এসে একবার বখতিয়ারের মুখোমুখি হয়েছিলেন। আর সেই সম্মুখ যুদ্ধে বখতিয়ারকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছিলেন লক্ষ্মণসেন। শরণ ও উমাপতি ধরের লেখা সেকথাই প্রমাণ করছে।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.